রোহিঙ্গাদের ওপর কীভাবে বর্বর নির্যাতন করা হয়েছে, এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তার স্বীকারোক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের দুই সেনা সদস্য। তারা জানিয়েছে, ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সৈনিকদের ওপর নির্দেশ ছিল ‘কোন রোহিঙ্গাকে দেখা মাত্র তাকে গুলি করতে হবে’। এ সময় তারা কীভাবে একের পর এক গ্রাম উৎখাত, গণকবর, হত্যা ও ধর্ষণ করেছে তার বর্ণনা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস জানিয়েছে, স্বীকারোক্তি দেয়া দুই সৈনিকের একজন হলেন মিও উইন তুন (৩৩) ও জ নায়েং তুন (৩০)। তারা যথাক্রমে ৫৬৫ ও ৩৫৩তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের ‘প্রাইভেট’ পদবীর সৈন্য। তারা হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে রোহিঙ্গাদেরকে নির্যাতন ও হত্যার বর্ণনা করেছেন। মিও উইন তুন বলেন, তিনি কর্মকর্তাদের আনুগত্য করেছেন। ৩০ জন রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যায় অংশ নিয়েছিলেন। সে সময় সেল টাওয়ার ও সামরিক ঘাঁটির কাছে একটি গণকবর দিয়েছেন। জ নায়েং তুন বলেন, আমরা প্রায় ২০ টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি। পরে শিশু ও বয়স্কদের মৃতদেহ একটি গণকবরে ফেলেছি। সৈনিক দুইজন ১৯ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে যারা সরাসরি এ ধরনের নৃশংসতায় অংশগ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ছয় জন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা এ সবের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুধুমাত্র এই দুজন কমপক্ষে ১৫০ জন রোহিঙ্গা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া কয়েক ডজন গ্রাম ধ্বংসের সঙ্গেও তারা জড়িত। এ বিষয়ে ফরটিফাই রাইটসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই স্বীকারোক্তির ফলে ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুই সৈনিক কোর্টের কাছে নিজেদের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ভবিষ্যতে মামলায় কাজ করবে। আইসিসির বিভিন্ন ধরনের সাক্ষী সুরক্ষার (উইটনেস প্রটেকশন) নিয়ম আছে এবং তার অধীনে এ ধরনের সাক্ষীদের সব ধরনের সুরক্ষা দেয়া হয়। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন