গুণী অভিনেতা কে এস ফিরোজ আর নেই (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)। গতকাল সকাল ৬টা ২০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে নাট্যাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬। এই অভিনেতা স্ত্রী ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর খবর ফেসবুকে জানিয়েছেন, তার মেয়ে প্রীতু ফিরোজ। এছাড়া অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক ও অভিনেতা আহসান হাবীব নাসিম তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। প্রীতু ফিরোজ ফেসবুকে লেখেন, আমার সৈনিক বাবা, মেজর (অব.) খন্দকার শহীদ উদ্দিন ফিরোজ (সবার কাছে উনি কে এস ফিরোজ নামে পরিচিত) আজ (গতকাল) সকালে ৬টা ২০ মিনিটে সিমএইচ-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি এখন শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন। সশস্ত্র বাহিনীর সর্বশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আজ বাদ জোহর বাবার ইচ্ছাতে বনানী সামরিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে। তিনি আরও লেখেন, আব্বু বলেছেন, মহামারি চলাকালীন যারা মারা যান, তারা শহীদ। তিনিও শহীদ হয়ে চলে গেলেন। তার জন্য আপনাদের সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। তার যাতে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব হয়, সেজন্য সবার কাছে দোয়া চাইছি। অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক ও অভিনেতা আহসান হাবীব নাসিম বলেন, নাট্যঙ্গন একজন গুণী অভিনেতাকে হারালেন। তিনি আমাদের সংগঠনের আজীবন সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। নাসিম বলেন, ফিরোজ ভাইয়ের পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছি করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগে তিনি নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। এরপর সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। ৫ দিন আগে তার আবার নিউমোনিয়া দেখা দেয়, পরে করোনা টেস্ট করলে রেজাল্ট পজিটিভ আসে। কে এস ফিরোজের জন্ম ঢাকার লালবাগে। তবে তার পৈতৃক নিবাস বরিশালের উজিরপুরের মশাং গ্রামে। তার বাবার নাম এ জে এম সাইদুর রহমান এবং মা রাবেয়া খাতুন। কে এস ফিরোজ ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন পদে চাকরি পান। ১৯৭৭ সালে মেজর পদে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। নাট্যদল থিয়েটারর সঙ্গে যুক্ত হয়ে অভিনয়ে তার পথচলা শুরু। এই দলের হয়ে তিনি অভিনয় করেছেন সাত ঘাটের কানাকড়ি, কিংলিয়ার ও রাক্ষসী নাটকে। এছাড়া তিনি টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় মুখ। বহু একক নাটক, ধারাবাহিক ও টেলিফিল্মে তাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা লাওয়ারিস। এছাড়া অভিনয় করেছেন শঙ্খনাদ,বাঁশি,চন্দ্রগ্রহণ ও বৃহন্নলাতে। তার সর্বশেষ করা বিকাশের বিজ্ঞাপনটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।