বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নাজুক

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় কাঙ্খিত উন্নতি ঘটেনি। যার ফলে প্রায় পৌঁনে ৩ লাখ গ্রাহকের দুর্ভোগের সীমা নেই। শিল্প, বাণিজ্যসহ আবাসিক গ্রাহকদের উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে পারেনি পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ওজোপাডিকো।
অথচ উন্নত সেবা নিশ্চিত করা, চুরি ও দুর্নীতি বন্ধের অঙ্গীকার নিয়েই ২০০৫ সালে পিডিবির অধিভুক্ত কোম্পানি হিসেবে ‘ওজোপাডিকো’ যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু সিস্টেম লসের নামে বিদ্যুৎ চুরি বাহুলাংশে কমিয়ে আনা গেলেও মাঠ পর্যায়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে আন্তরিক ও মনযোগী করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। শীর্ষস্থানীয় কোন কোন কর্মকর্তা নানা অজুহাতে দিনের পর দিন ঢাকায় অবস্থান করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব কর্মকর্তা কখনোই গ্রাহকদের অভিযোগ তো দূরের কথা, তাদের কাছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছার বিষয়েও কোন খোঁজ খবর রাখার সময় পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।
অথচ গত এক দশকে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও ওজোপাডিকোর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু সেবার মান সেই তলানিতেই। বরিশাল মহানগরীতে ১৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক দশক আগে যেমন আকাশে মেঘ জমলে গ্রামের পাঠশালাগুলো ছুটি দিত, তেমনি এখন মেঘের গর্জন শুরু হলে দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় ।
নগরীর রূপাতলী ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড সাব-স্টেশন থেকে ৪টি ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনের মাধ্যমে বরিশাল মহানগরীর প্রায় ২৫টি ১১/.০৪ ফিডারের লক্ষাধিক গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছে দুটি বিতরণ বিভাগ। কিন্তু ৩০ বছরের পুরানো ১১ কেভি ও .০৪ কেভি সরবরাহ ও বিতরণ লাইনের আনুসঙ্গিক বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ ৩৩ কেভি লাইনগুলো এখন যথেষ্ট নাজুক। উপরন্তু অনেক গ্রাহকই অনুমোদিত লোড অপেক্ষা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় ট্রান্সফর্মার ও লাইনের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে। ফলে ঘন ঘন ট্রান্সফর্মার বিকল হচ্ছে। বেশিরভাগ ফিডারের এইচটি ও এলটি লাইনসহ ট্রান্সফর্মারগুলো নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেও সরবরাহ ও বিতরণ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। নগরীর মেডিকেল ফিডারসহ একাধিক ফিডার ওভার লোডেড হয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একই অবস্থা পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠি সদরেও। সর্বত্রই নাজুক বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা ওজোপাডিকোর গ্রাহকদের দুর্ভোগের মাত্রা বৃদ্ধি করে চলেছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিল্প উৎপাদনও।
পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারি অর্থায়নে পশ্চিমজোনের ২১টি জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ওজোপাডিকো। তবে কোন প্রকল্পের কাজই সময়মত শেষ হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ অবশ্য দ্রুততম সময়ে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।
এসব বিষয়ে ওজোপাডিকোর বরিশাল সার্কেলের ডিজিএমের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার ব্যাপারে কোম্পানি সবসময়ই সজাগ রয়েছে। আগামী শীতে সব ফিডারগুলো পরিপূর্ণভাবে রক্ষণাবেক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বরিশাল, খুলনা ও গোপালগঞ্জ সদরের সব ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি লাইন ভ‚গর্ভস্থ ক্যাবলে স্থানান্তরের প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামী বছরের শেষ নাগাদ এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন