শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ওসি প্রদীপসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আরো ২ হত্যা মামলা

এসপি মাসুদকে আসামি করার আবেদন খারিজ

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৬ এএম

চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে আসামি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আদালতে করা আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পর্যক্ষণ করে চাইলে তাকে (পুলিশ সুপার) আসামী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে পারবেন। কক্সবাজার জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটির পিপি আদালতের উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন করেছেন।

এর আগে গতকাল দুপুরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুদ হোসেনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে আদালতে আবেদন করেছেন নিহত মেজর সিনহার বোন মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে তিনি এ আবেদন করেন তিনি।
আবেদনটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আদেশের অপেক্ষায় রেখেছিলেন বিচারক। বিরতির পর আদালত বিকাল ৫টার দিকে আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। আদালতের উদ্ধৃতি দিয়ে তর পাবলিক প্রসিকিউটির পিপি ফরিদুল আলম জানান, নতুন করে আসামি করার জন্য বাদির এখতিয়ারে নেই। যদি দরকার হয় তবে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা বাদির অভিযোগ পর্যবেক্ষণ করে দাবি যথাপযুক্ত হলে নতুনভাবে অন্য কাউকে আসামি করতে পারে।

এদিকে বাদীপক্ষের আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে জানান, ‹কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন মেজর সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেই চলেছেন। তিনি সিনহা হত্যা মামলার আসামি বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকতকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছেন। আসামিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। অর্থাৎ এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন তার দাপ্তরিক কার্যক্ষমতা আসামিদের পক্ষে কাজে লাগাচ্ছেন। তাই তাকে মেজর সিংহ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলাম।

মামলার বাদী ও মেজর সিনহার বড় বোন শারমীন শাহরিয়া ফেরদৌস জানান, এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন ঘটনার শুরু থেকেই আসামিদের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ওনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। মেজর সিনহার মানহানি করেছেন। ওই সময় তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন মেজর সিনহার গাড়িতে তিনি ইয়াবা ও মাদকদ্রব্য পেয়েছিলেন। একজন পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি এটি বলতে পারেন না। তিনি তদন্তকাজে প্রতিনিয়ত বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন।

ওসি প্রদীপসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আরো দুই মামলার আবেদন
কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে টেকনাফের বাহারছড়ার আবদুল আমিন ও হোয়াইক্যংয়ের মুফিজ আলম নামের দুইজনকে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে হত্যার ওসি প্রদীপসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলার আবেদন করা হয়েছে কক্সবাজার আদালতে। গতকাল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ( টেকনাফ - ৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এই দুই মামলার আবেদন করা হয়েছে। নিহত বাহারছড়ার আবদুল আমিনের ভাই নুরুল আমিন ও মুফিজ আলমের ভাই মো. সেলি বাদি হয়ে এই দুই মামলার আবেদন করেন। বাদি পক্ষের আইনজীবী আবু মুছা সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। দুটি মামলার একটি ৩৮ জন ও অন্যটিতে ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নুরুল আমিন জানায়, বাহারছড়ার গত বছর সুপারি ব্যবসায়ী আবদুল আমিন থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে টেকনাফ থানা পুলিশ। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সকালে বাড়ি থেকে তাক ধরে নিয়ে যায় একদল পুলিশ। থানায় নিয়ে গিয়েও ৫ লাখ টাকা চাঁদা করে ওসিসহ পুলিশ দল। শেষে বাধ্য হয়ে ৫০ হাজার টাকা দেয় পরিবার। বাকি টাকার জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ । সেখানে তার কাছ থেকে বাকি টাকা দাবি করে পুলিশ। এতে অস্বীকৃতি জানানো হলেই একদল পুলিশ আবদুল আমিনকে গুলি করে হত্যা করে।

মুফিজ আলমের মামলার বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন, টেকনাফ থানা পুলিশ মুফিজ আলম থেকে ১৫ লাখ চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এক পর্যায়ে টাকা না দিলে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেয়। তাই বাধ্য ২০১৯ সালের ১২ জুলাই পুলিশকে ৬ লাখ টাকা দেন মফিজের পরিবার। টাকা নেয়ার পরদিনই মুফিজ আলমকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়। আইনজীবি আবু মুছা মোহাম্মদ বলেন, ফৌজদারি মামলার এজাহার দুটি আমলে নিয়েছেন আদালত এবং ওই ঘটনা সংক্রান্ত অন্য মামলা আছে কিনা তা আগামী ধার্য্য দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এনিয়ে সাবেক ওসি প্রদীপকে ১০ হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন