শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক থাকলে সীমান্তে মানুষ মারা যায় কিনা প্রশ্ন রিজভীর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:০৮ পিএম | আপডেট : ৮:০৬ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সীমান্তে মানুষ হত্যার ব্যাপারে সরকার কেন নিশ্চুপ সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি এতো করুন অবস্থা, দেশের সার্বভৌমত্ব এতো দূর্বল যে আপনার প্রায় দুইদিন-তিন দিন পর বর্ডারে আপনার মানুষকে মারছে। মানুষ হত্যা করছে, দেশের মানুষ রক্তাক্ত হচ্ছে। পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে ভয়ংকর সীমান্ত হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের এই সীমান্ত। আপনি এতো নতজানু সরকার যে একটা প্রতিবাদও করতে পারছেন না এটার জন্য। আপনার পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক থাকলে সীমান্তে মানুষ মারা যায় কিনা? অর্থাৎ এই কথাটার মধ্যে আপনাদের যে আনুগত্য কত হেয় টাইপের এটা অত্যন্ত সুস্পষ্ট।

রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত মরহুম শফিউল বারী বাবুর স্মরণে এতিম শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রদান এই অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, কয়েকদিন আগে চাপাইনবাবগঞ্জের বর্ডারে একজন গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, সুনামগঞ্জের বর্ডারে একজন গু্লিিবদ্ধ হচ্ছে, না হলে লারমনিরহাটের বর্ডারে একজন গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, না হলে মেরে ফেলা হচ্ছে। সরকার একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারছে না।

বিএনপি সব দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির নীতি হচ্ছে, পার্শ্ববর্তী দেশ, দূরবর্তী দেশ সবার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাথতে চায়। কিন্তু নিজের স্বার্থকে ক্ষুন্ন করে নয়। কিন্তু শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য নিজের দেশের স্বার্থকেও তিনি বিসর্জন দিচ্ছেন। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক।

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এই ক্যাসিনো কা-, যারা লুটপাট করেছে সরকারি টাকা, সেই সরকারি টাকা লুটপাটকারীদের আমরা দেখেছি। কিন্তু এদের কাছ থেকে যারা বখরা পেয়েছে সেই সমস্ত নেতারা, সেই সমস্ত গডফাদারদেরকে তো স্পর্শও করতে পারেনি দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তিনি বলেন, জিকে শামীমের কথা বলা হয়- ৬ হাজার কোটি টাকার সে কাজ নিয়েছে। পিডাব্লিউডির ঠিকাদারিতে সে কাউকে কাজ নিতে দিতো না। সেই জিকে শামীমের জামিন হয়ে যায় গোপনে। কি ভয়ংকর অবস্থা চিন্তা করে দেখুন। যে ব্যক্তিটি রুপপুর প্রকল্পে ৭ হাজার টাকা দিয়ে বালিস কিনেছে এবং সাড়ে ৩৭ আখ টাকা দিয়ে পর্দা কিনেছে। সেই প্রকল্পের আবাসিক ভবনগুলো অভ্যন্তরীণ সাজ-সজ্জার জন্য ১৬৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তার যে ঠিকাদার শাহাদাত সে কিন্তু জামিন পেয়ে গেছে। তাহলে বলুন আমরা কোন শাসনের অধীনে আছি।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের একদিকে জামিন বাতিল করে কারাগারে নিচ্ছে। অন্যদিকে দুর্নীতিবাজ ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জামিন পাচ্ছে। এক দেশে আইনের দুইরকম প্রয়োগ হচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে যখন এক মামলায় জজ সাহেব খালাস করে দিলেন নেই বিচারককে পালিয়ে যেতে হয়ছে।

রিজভী বলেন, আইন, বিচার, প্রশাসন, আইনি প্রক্রিয়া- সব কিছু সরকার প্রধানের নির্দেশে হয়। সব কিছু তার কথায় হয়। অর্থাৎ সে যাকে পছন্দ করে না তাকে জেলে যেতে হবে, তাকে মামলায় পড়তে হবে, সে নিরুদ্দেশ হবে, সে গুম হবে। আর যে তার প্রিয় লোকজন তা শত শত কোটি টাকা দুর্নীতি হোক, পর্দাকা-, বালিশকা- হোক-তাদের সাত খুন মাফ, সব কিছু মাফ। আজকে লুটেরা লীগে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ। এটা আজকে বাস্তবতা। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললে তার প্রমাণ দেখবেন।

সেচ্ছাসেবক দল মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ানুল হোসেন রিয়াজের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল ও যুগ্ম সম্পাদক সাদরেজ জামান বক্তব্য রাখেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ডা. জাহিদুল কবির, সাবেক ছাত্রনেতা কাজী ইফতেখায়রুজ্জামান শিমুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোরশেদ আলম। পরে মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন জামা-কাপড় বিতরণ করা হয়। 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন