ওজন কমে যাওয়া আসলে কোন রোগ নয়। রোগের উপসর্গ। তবে সবসময় জটিল রোগে যে ওজন কমে যায় তা নয়। খাদ্যাভ্যাসের ত্রুটির কারণেও ওজন কমতে পারে। আবার ১ বছরে যদি ১ কেজি ওজন কমে তাহলে তাকে বড় সমস্যা ভাবার কারণ নেই। ৬ মাসে ৩ কেজির বেশি যদি ওজন কমে যায় সেটিকে অবশ্যই গুরুত্বের সাথে নিতে হবে।
বিভিন্ন কারণে ওজন কমতে পারে। সচরাচর যেসব কারণে ওজন কমে তার মধ্যে আছে-
১। ক্যান্সার। শরীরে কোথাও ক্যান্সার হলে ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকে।
২। ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিসের ফলে ওজন কমতে থাকে। এটিই সবচেয়ে পরিচিত কারণ ওজন কমার।
৩। এলকোহল গ্রহণ। যারা নিয়মিত এলকোহল গ্রহণ করেন তাদের ওজন কমতে থাকে।
৪। হাইপার থাইরয়ডিজম। ‘থাইরয়েড গ্রন্থি’ থেকে বেশি হরমোন বের হয়। এই হরমোন বিপাক বাড়িয়ে দেয়। ফলে ওজন কমে যায়।
৫। যদি দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ বা প্রদাহ থাকে তাহলে ওজন আস্তে আস্তে কমতে থাকে। যেমন টিবি রোগ, হাঁপানী, ঈড়ঢ়ফ ইত্যাদি।
৬। ডিমেনশিয়া বা স্মৃতি নষ্ট হয়ে গেলে ওজন কমে যায়।
৭। ইটিং ডিজঅর্ডার। দু’রকমের আছে এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা ও বুলিমিয়া নার্ভোসা। এনোরেক্সিয়া নার্ভোসা তে ওজন কমে যায়।
৮। বিভিন্ন ওষুধ গ্রহণের ফলেও কিন্তু ওজন কমতে পারে।
৯। হরমোনের আরো বিভিন্ন সমস্যায় ওজন কমতে দেখা যায়।
১০। অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় ওজন কমে যেতে পারে।
আবার খাদ্য হজমের সমস্যা-মেল এবজর্বসন সিনড্রমেও ওজন কমে।
যে কারণেই ওজন কমুক না কেন প্রথমে কারণ বের করতে হবে। তারপর চিকিৎসার ব্যবস্থা। এজন্য চিকিৎসক ভালভাবে ইতিহাস নেবেন ও শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। তাতেই কিন্তু রোগের অনেকটাই ধরা পড়ে। সুতরাং ডায়াগনসিসের আগেই ভিটামিন ও রুচিবর্ধক ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। অনেকে আবার স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খান। এর ফলে মোটা হওয়া যায় কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় ভুগে শেষ জীবনটা খুবই কষ্টে কাটে।
৬ মাসে যদি ৩ কেজির বেশি ওজন কমে তবে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কারণ বের করে চিকিৎসা করলে অবশ্যই সমাধান সম্ভব। আমাদের দেশেই সম্ভব। আশা করি সবাই সচেতন হবে।
ষ ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
মোবাইল: ০১৭১২৮৩৬৯৮৯
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন