মহাগ্রন্থ আল কোরআন আল্লাহর কালাম। আল্লাহর যেমন তুলনা নেই। শরীক নেই। সমকক্ষ নেই। আল্লাহর কালামেরও তেমনই কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীতে মানবরচিত কোনো গ্রন্থ নিয়ে কোনো লেখক বা ভাষ্যকার চিরদিনের জন্য এমন কোনো চ্যালেঞ্জ দিতে পারে না যে, কেউ যদি পারও তাহলে আমার কথার মতো আরেকটি কথা বলো। আমার লেখার মতো আরেকটি লেখা লিখ। আমার আয়াত বা সূরার মতো আরেকটি এনে দেখাও।
আল কোরআনের বিষয়ে আল্লাহ এ চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন। বলেছেন, আমি আমার বান্দার (মোহাম্মাদ সা.) ওপর যা নাজিল করেছি, এ নিয়ে যদি তোমাদের মনে কোনো সন্দেহ থাকে, তাহলে তোমরা এর মতো মাত্র একটি সূরা এনে দেখাও। আল্লাহ ছাড়া এ বিষয়ে তোমাদের যতো দক্ষ সাহায্যকারী আছে সবাইকে ডেনে এক জায়গায় জমা কর। যদি তোমাদের দাবিতে তোমরা সত্য হয়ে থাকে। আর যদি এমন করতে না পার, আর কোনোদিন এমন করতে পারবেও না। তাহলে (যুক্তি তর্ক ও অবিশ্বাস ছেড়ে দিয়ে) সেই আগুনকে ভয় করো যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পূজনীয় পাথর, যা অবিশ্বাসী কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ২৩-২৪)।
১৫০০ বছরেও কেউ আল কোরআনের মতো একটি সূরা তৈরি করতে পারেনি। বিজ্ঞানীরা সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করে আল কোরআনের বিন্যসের ওপর নিরীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, অক্ষর ও শব্দের যে জটিল অংক আল কোরআনের পরতে পরতে রয়েছে, এর কোনো তুলনা সৃষ্টিজগতে নেই। বিশ্বের সব মানুষ যদি বিজ্ঞান ও সাহিত্যের মহাজ্ঞানী হয়, আর সবাই যদি শতকোটি বৎসর চেষ্টা করে তবুও তারা আল কোরআনের একটি সূরার মতো সূরা রচনা করতে পারবে না। কারণ এতে এতো জটিল অঙ্কের কারুকাজ রয়েছে, অক্ষর অর্থ ও শব্দের এমন গ্রন্থনা রয়েছে, যা দেখে বিষ্মিত হওয়া যায়, কিন্তু বিকল্প তৈরীর চিন্তাও করা যায় না। এই কালাম নিয়ে গবেষণা করে আল্লাহর সামনে মাথা নত করে দেয়া যায়, নিজে এমন কিছু তৈরি বা রচনার কল্পনাও করা যায় না।
আল কোরআন প্রকৃতির মতোই অতুলনীয়। মানুষ যেমন ইচ্ছা করলেও একটি সূর্য, চন্দ্র বা গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করতে পারবে না, আল কোরআনের বিকল্পও তাদের পক্ষে কোনোদিনই চিন্তা করা সম্ভব নয়। সৃষ্টি নিয়ে মানুষ বিকল্প ভাবতেও পারে, তবে আল কোরআন এক্ষেত্রে আরও স্বতন্ত্র। কেননা, এটি আল্লাহর সৃষ্টিও নয়। এটি তার অস্তিত্বের স্ফুরন কালাম।
আল্লাহ যেমন অনাদী অনন্ত, তার কালামও তাই। এটি তিনি নাজিল করেছেন, তিনিই এর হেফাজত করবেন বলে অঙ্গীকারও করেছেন। বলেছেন, আল কোরআন আমি নাজিল করেছি আর এর হেফাজতকারীও আমিই। কোরআন শরীফ তিনি সব মাধ্যমেই হেফাজত করছেন। দেড় হাজার বছরে এর একটি বিন্দু বিসর্গ বা যের যবরেও পরিবর্তন সাধিত হয়নি। কোনোদিন হবেও না।
মুদ্রণ, অডিও, ভিডিওসহ প্রাচীণ ও আধুনিক সব মাধ্যম যদি ধ্বংস করে দেয়া হয়, পৃথিবীতে কোরআনের কোনো কপি যদি পরিকল্পিতভাবে দুষমন নিশ্চিহ্নও করে দেয়, তথাপি আল কোরআন তারা শেষ করতে পারবে না। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এর লাখ লাখ কপি আবার তৈরি হয়ে যাবে। কারণ, পৃথিবীতে একটিমাত্র গ্রন্থই এমন, যা লক্ষ কোটি মানুষের অন্তর ও মস্তিস্কে রেকর্ডকৃত আছে। হাফেজে কোরআনদের বুকে সুরক্ষিত আছে। আর তাই যেসব অসভ্য বর্বর মানুষ আল কোরআন পুুড়িয়ে দেয়ার নাটক মঞ্চস্থ করে, তারা নিঃসন্দেহে বোকার স্বর্গে বাস করছে। আল কোরআন আগুনে পোড়ানো শয়তানের কাজ। এতে করে বিদ্বেষীরা সফলকাম হতে পারবে না। আল কোরআনের আলো বিশ্বের ঘরে ঘরে ইনশাআল্লাহ পৌঁছুবেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন