শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের বদলে নিজস্ব পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার করছে চীন

জ্বালানি সুরক্ষা ও ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় উদ্বেগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

জ্বালানি সুরক্ষা ও ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ার কারণে চীন আমেরিকান পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রযুক্তি থেকে নিজেদের তৈরি বিকল্পের দিকে চলে গেছে। আমেরিকার ওয়েস্টিংহাউস ইলেক্ট্রিক কোম্পানির নকশা করা এপি১০০০ প্রযুক্তিটি ছিল এক সময় চীনের তৃতীয় প্রজন্মের পারমাণবিক শক্তির ভিত্তি, কিন্তু এখন এপি১০০০ রিঅ্যাক্টরের তুলনায় দেশটির নিজস্ব হুয়ালং ওয়ান প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৃতীয় প্রজন্মের আরও বেশি চুল্লি রয়েছে।
চীনের নির্মাণাধীন বা অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন মোট ১২টি পারমাণবিক চুল্লি হুয়ালং ওয়ান প্রযুক্তি ব্যবহার করে। বিপরীতে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমেরিকার নতুন কোনও এপি১০০০ চুল্লি অনুমোদিত হয়নি। ঝেজিয়াং ও শানডং প্রদেশের সর্বশেষ মার্কিন রিঅ্যাক্টরগুলো ২০১৮ সালে বাণিজ্যিকভাবে চালু করা হয়েছিল। হুয়ালং ওয়ান চীন জাতীয় পারমাণবিক কর্পোরেশনের এসিপি১০০০ এবং চীন জেনারেল নিউক্লিয়ার পাওয়ার গ্রুপের এসিপিআর১০০০, উভয়ই ফরাসি প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি।
ফুকুশিমা পারমাণবিক বিপর্যয়ের তিন বছর পর ২০১৪ সালে প্রযুক্তিটি চীনের জাতীয় রিভিউ পাস করে এবং সিএনএনসি ঘোষণা করেছিল যে, এটির প্রথম স্থাপনাকে স্মরণ করে ফুজিয়ান প্রদেশের ফুকিংয়ের পঞ্চম এবং ষষ্ঠ ইউনিট হুয়ালং ওয়ান প্রেসারাইজড ওয়াটার রিঅ্যাক্টর ডিজাইন ব্যবহার করবে।
২০১৫ সালে নির্মাণ শুরু হয়েছিল এবং পরিবেশ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে অপারেটিং লাইসেন্স পাওয়ার পর, ফুকিংয়ের পঞ্চম ইউনিটে পারমাণবিক জ্বালানি লোডিং এ মাসের শুরুতে আরম্ভ হয়েছে। এটি বছরের শেষ নাগাদ কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সিএনএনসি জানিয়েছে, এছাড়াও এ মাসে ফুজিয়ানের ঝাংঝু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দ্বিতীয় হুয়ালং ওয়ান ইউনিটের জন্য বেস কংক্রিটের ঢালাই শুরু হয়। সিএনএনসি-গুডিয়ান ঝাংঝু এনার্জি কোম্পানির মালিকানাধীন এ প্ল্যান্টটিতে মূলত ওয়েস্টিংহাউসের এপি১০০০ চুল্লি ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তবে পরে হুয়ালং ওয়ানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে, গত বছর অনুমোদিত চারটি ইউনিট এবং ২ সেপ্টেম্বর হায়ানান ও চেজিয়াং প্রদেশে অনুমোদিত আরও চারটি পারমাণবিক চুল্লিও হুয়ালং ওয়ান প্রযুক্তি ব্যবহার করবে।
বিশ্ব নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মতে, প্যাসিভ এবং সরলীকৃত সুরক্ষা বৈশিষ্ট্য, মডুলার নির্মাণ এবং আরও বেশি সরঞ্জামের স্থানীয়করণের সুযোগে ছোট উপাদানগুলোর কারণে এপি১০০০ চীনের তৃতীয় প্রজন্মের পারমাণবিক বহরে ব্যবহারের জন্য প্রথম পছন্দ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। ২০০৭ সালে প্রকাশিত চীনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা বলেছিল যে, দেশের প্রেসারাইজড ওয়াটার রিঅ্যাক্টর প্রযুক্তিটিকে একীভূত প্রযুক্তি হিসাবে গ্রহণ করা উচিত এবং এটি জাতীয় অগ্রাধিকার হিসাবে তালিকাভুক্ত করা উচিত।
চায়না ইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রমোশন কাউন্সিলের পারমাণবিক শক্তি শাখার সেক্রেটারি জেনারেল ওয়াং ইয়িংসু বলেন, ‘বিভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে বিতর্ক হয় এবং পরিকল্পনায় স্পষ্ট করে দেয়া হয় যে, চীন প্রেসারাইজড ওয়াটার রিঅ্যাক্টর ব্যবহার করবে এবং এপি১০০০ প্রযুক্তি প্রবর্তন করবে’। তবে ওয়াং বলেন যে, প্রযুক্তির স্থানীয়করণ, দেশীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রযুক্তির বিকাশ এবং স্বতন্ত্রভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনার সক্ষমতা ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে তার পারমাণবিক বিদ্যুৎ যাত্রা শুরু করার পর থেকে চীন সবসময়ই তার লক্ষ্য ছিল।
ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরেকটি উদ্বেগ। মার্কিন-চীন প্রতিদ্ব›িদ্বতার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যে ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে, তাই বেইজিং তার পারমাণবিক কেন্দ্র এবং সামরিক গোষ্ঠীগুলোকে সরঞ্জাম স্থানীয়করণে উৎসাহিত করেছে। চীন দাবি করেছে যে, হুয়ালং ওয়ান পারমাণবিক চুল্লির প্রথম ইউনিট স্থানীয়করণের হার ৮৫ শতাংশ অর্জন করেছে। সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
জাহিদ ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:১০ এএম says : 0
আমি তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই
Total Reply(0)
তানিয়া ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:৪১ এএম says : 0
আমাদেরও উচিত সকল ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নেয়া
Total Reply(0)
নওরিন ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:৪২ এএম says : 0
ধীরে ধীরে যুক্তরাষ্ট্রের সকল বলয় থেকে সবাই বেরিয়ে আসবে
Total Reply(0)
উজ্জল ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:৪৪ এএম says : 0
চীনের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো
Total Reply(0)
টুটুল ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:৪৪ এএম says : 0
চীনের এই পদক্ষেপ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে .................
Total Reply(0)
এনায়েতুল্লাহ ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৩:৪৬ এএম says : 0
চীন এখন পুরোপুরি স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে উঠছে
Total Reply(0)
Bojlur Rahaman ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:২০ এএম says : 0
very good decision
Total Reply(0)
সৈয়দ আদনান ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:২৭ পিএম says : 0
যে কোনো স্বাবলম্বী পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন