শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নতুন সম্পর্কের বার্তা নিয়ে রাশিয়ায় এরদোগান

প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে চাইছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান। গত মাসে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার পর এরদোগানের এটাই প্রথম বিদেশ সফর। সফরকালে সেন্ট পিটার্সবুর্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা এরদোগানের।
সোমবার রাশিয়া সফরে যাওয়ার আগ মুহূর্তে বিমানবন্দরে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ছাড়াও রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যমে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমার এই সফর মাইলস্টোন হয়ে থাকবে। আমি আমার এবং তুর্কি জনগণের পক্ষ থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে সালাম জানাই। এরদোগান বলেন, এটি হবে ঐতিহাসিক সফর এবং নতুন সূচনা। পুতিনের সঙ্গে আলোচনা রুশ-তুর্কি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের শুরু করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, দেশ দুটির একযোগে অনেক কিছু করার আছে। এসময় এরদোগান পুতিনকে নিজের বন্ধু বলেও উল্লেখ করেন। সিরিয়া সংকট সমাধানে রাশিয়ার অপরিহার্য ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন এরদোগান। তিনি বলেন, রাশিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া সিরিয়া সংকট সমাধান করা সম্ভব নয়।
গত বছর সিরিয়া সীমান্তে তুরস্ক একটি রুশ জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করলে মস্কো ও আঙ্কারার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তবে গত জুনে এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কাছে চিঠি লেখেন এরদোগান। বলা যায়, ঠিক তখন থেকেই রাশিয়ার সাথে তুরস্কের সম্পর্ক উন্নয়নের আভাস উজ্জ্বল হতে শুরু করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দ্বিতীয় কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে এবারই প্রথম মুখোমুখি বসছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। এর আগে শুক্রবার কাজাখ প্রেসিডেন্ট আঙ্কারা সফর করেন। ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর পশ্চিমা কোনো নেতা কেন সংহতি জানাতে তুরস্কে এলেন না তা নিয়েও দেশটির কর্মকর্তাদের প্রশ্ন রয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘনিষ্ঠ থিঙ্কট্যাংক রাশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিলের মহাপরিচালক আন্দ্রে কর্তুনোভ বলেন, পশ্চিমারা যতটা উদ্বিগ্ন রাশিয়া ও তুরস্ক ততটাই বন্ধুহীন। এই প্রেক্ষাপটে ব্যর্থ অভ্যুত্থান তুরস্ককে রাশিয়ার কাছে এনেছে। কিন্তু এখনো দুই দেশের মধ্যে অনেক দূরত্ব রয়ে গেছে। সিরিয়া নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে, মস্কো প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থন দিলেও তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে তুরস্ক। দক্ষিণ ককেশাসে রাশিয়ার মিত্র আর্মেনিয়ার বিপক্ষে আজারবাইজানকে সমর্থন জোগাচ্ছে তুরস্ক। পুতিন ও এরদোগানের বৈঠকে দেখা যাবে দুই পক্ষ কত দূর ছাড় দিতে ইচ্ছুক। তবে প্রশ্নটা হচ্ছে, বর্তমানের কৌশলগত নমনীয়তা গভীর কৌশলগত অংশীদারিত্বে রূপ নেয় কি না সেটা দেখা।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের এই রাশিয়া সফর পশ্চিমাদের ভাবনায় ফেলে দেবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে। সেন্ট পিটার্সবার্গে এরদোগানের এ সফর ন্যাটোর সদস্যপদ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে প্রার্থিতা থেকে তুরস্কের সরে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না বলে জোর দিয়ে বলছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এটা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের একটি পদক্ষেপ, যা ১৫ জুলাই সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার কয়েক সপ্তাহ আগেই ঠিক হয়েছিল।
তুরস্কের সাবেক কূটনীতিক এবং ইউরোপ বিশ্লেষক সিনান উলজেন বলছেন, পুতিনের সঙ্গে এই বৈঠক এরদোগানের জন্য পশ্চিমা অংশীদারদের একটি বার্তা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে। এখানে এই ভাবনার খেলা রয়েছে যে, পশ্চিমের সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে না রাখা গেলে তুরস্ক কৌশলগতভাবে রাশিয়ার দিকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ঝুঁকতে পারে। এছাড়া তুরস্ক ও পশ্চিমের মধ্যে এই সংকট ব্যবহার করে ন্যাটোর সংহতি ক্ষুণœ করার প্রশ্নে রাশিয়ার দিক থেকেও একটা ছাড় রয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। রয়টার্স, এএফপি, ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন