মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাঁচশত কর্মকর্তার বিদেশ সফর বাতিল

খিচুরি রান্না দেখার প্রস্তাব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:১৭ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ব্যাপক সমালোচনার মুখে অবশেষে খিচুরি রান্না শিখতে ৫শ’ কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের বিষয়টি বাতিল করেছে পরিকল্পনা কমিশন। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মাথায় রেখে কোনো প্রকল্পেই বিদেশ ভ্রমণ খাত রাখা হচ্ছে না।

জানা যায়, প্রাইমারি স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় একটি প্রকল্পে বিদেশে গিয়ে ডিম-খিচুরি, সবজিসহ অন্যান্য খাবার রান্না ও প্রসেসিং শিখতে পাঁচ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। এছাড়া দেশে একই বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আরও চাওয়া হয়েছিল ১০ কোটি টাকা। এই বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর দেশজুড়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, খিচুরি রান্না নয়, শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিল কিভাবে দেয়া হয় সেই ব্যবস্থাপনা শিখতেই কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রত্যেকেরই সিনিয়রদের কাছে শিখবার প্রয়োজন আছে। যে কারণে এ বিষয়ে কিছু টাকা ধরা আছে। এটি বিশাল কোনো ক্ষতিকর ব্যবস্থা না, এটা প্রস্তাব। পরিকল্পনা কমিশন ও একনেক দেখবে, সংস্কার করবে। এটা নিয়ে হৈ চৈ করার মত কোনো অবস্থা নেই। গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খিচুরি প্রকল্প নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকতায় আসা বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের কোনো জ্ঞান নেই বলে তারা হুট করে লিখে দিচ্ছে; সরকারের ভাবমর্যাদা নিয়ে তারা চিন্তা করে না। তাদের কোনো জ্ঞান-গরিমা নেই, একটা হুট করে লিখে দিয়েই বোধহয় হয়ে গেল। সরকারের ভাবমর্যাদা কোথায় গেল না গেল এরা তা দেখে না। খিচুড়ি রান্না শিখতে কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানো হবে শিরোনামে খবর প্রকাশ করায় মন্ত্রণালয় ও সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
বিএনপি মানুষকে উস্কে দিচ্ছে দাবি করে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, এদের থেকে মুক্তি পেতে হবে এবং মানুষকে জানাতে হবে শেখ হাসিনার সরকার কখনো জনকল্যাণ ব্যতীত কোনো কাজ করে না। এখানেও মিড-ডে মিলের ভালো দিকের জন্য এটা করেছি। বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার দরকার আছে কি নেই? প্রাইমারী স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী গ্রামে বসবাস করে। খেটে খাওয়া মানুষের বাচ্চারাই বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। অনেক বাচ্চা পুষ্টিহীনতায় ভোগে, নানা অসুখ-বিসুখে ভোগে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নানাভাবে সহযোগিতা করছেন।
জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিস্কুট দেয়া হয়। তাদের দুপুরে খাবার দেয়ার চিন্তাভাবনা করেছি। ১৯ হাজার ২৮২ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে, ১৬ উপজেলায় এই কর্মসূচি পাইলটিং করা হয়। ডবিøউএফপি আমাকে ভারত নিয়ে যায়। আমরা যখন পাইলটিং করতে চাই তখন চিন্তা করছিলাম সিস্টেমটা কী? দুই কোটি বাচ্চাকে জিনিসটি দিতে গেলে সিস্টেম কী? এই ধারণা নিতে আমি নিজে কেরালায় যাই। আপনারা এখানে যারা সাংবাদিক আছেন, প্রথম যখন সাংবাদিকতায় এসেছেন তখন কি সিনিয়র সাংবাদিকের কাছে বুদ্ধি-পরামর্শ নেননি? তারা কীভাবে সংবাদ সংগ্রহ করে, সেই অভিজ্ঞতা কি নেননি?
১৯৪১ সাল থেকে কেরালায় স্কুল মিল চালু আছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেই অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য আমি সেখানে যাই, তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রাম দেখেছি। কীভাবে পরিচালনা করে তা দেখেছি। সেটা দেখে আমি এখানে পাইলটিং করেছি। তিনি বলেন, বিএনপির রিজভী আহমেদ নানা ধরনের কথা বলছেন। তারা দেখেইনি, পড়েনি কিছু। ২০০৫ সাল থেকে শুরু করে কোনো সরকারের ইতিহাস নেই, জিয়াউর রহমানের নেই, খালেদা জিয়ার নেই, কেউ শিক্ষা নিয়ে কথা বলেনি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন জানান, ৫০৯টি উপজেলার প্রত্যেক উপজেলা থেকে একজন করে কর্তকর্তাকে দেশের বাইরে পাঠানোর বিষয়ে প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশন দুটি টিম করে কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছে। এই দুই টিমে ২০ বা ৩০ জন যেতে পারেন। একনেক-এ যখন অনুমোদন হবে তখন প্রতিটি বিষয় বিশ্লেষণ করে ব্যাখ্যা দিতে হবে। এটার এখনও দুটি ধাপ বাকি আছে। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বিস্কুট দেয়ার অভিজ্ঞতা থাকলেও ৬৫ হাজার ৬২০টি স্কুলে গরম খাবার দেয়ার অভিজ্ঞতা না থাকায় সেই ব্যবস্থাপনা দেখতে কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানোর প্রস্তাব করা হয় বলে জানান গণশিক্ষা সচিব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন