শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট

প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:২৬ পিএম, ৯ আগস্ট, ২০১৬

শফিউল আলম : চট্টগ্রাম বন্দরে সৃষ্টি হয়েছে জাহাজের জট। গত এক মাসেরও বেশি কাল ধরে ক্রমাগতভাবে কন্টেইনারসহ কার্গোজটে ধুঁকছে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। এখন জটে আটকে পড়া কোনো কোনো জাহাজ (কন্টেইনার ফিডার) বন্দরের বহির্নোঙরে টানা ১২ দিন, ৯ দিন, ৮ দিন, ৬ দিন, ৫ দিন, ২ বা ৩ দিন পর্যন্ত অলস অপেক্ষায় সময় কাটাচ্ছে। বহির্নোঙর থেকে বন্দরের জেটি-বার্থে এসে ভেড়ার জন্য শিডিউল পাচ্ছে না; এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে প্রায় সবক’টি কন্টেইনার জাহাজের বার্থিং শিডিউল। সেইসাথে বন্দরের ইয়ার্ডসমূহে জমে গেছে কন্টেইনারের বেসামাল জট। স্বচ্ছন্দে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের জন্য আদর্শ বন্দর ব্যবস্থাপনার নিয়মে যেখানে অন্তত ৩০ শতাংশ জায়গা সব সময়ই খালি থাকার পূর্বশর্ত রয়েছে, সেখানে ছাড়িয়ে গেছে ন্যূনতম কন্টেইনার ধারণক্ষমতাও। বন্দরে জাহাজ ও পণ্য তথা কন্টেইনার জটের কারণে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে। তাছাড়া ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জামের সংকট, কন্টেইনারের স্থানাভাবসহ বিভিন্ন কারণে ব্যস্ততা বাড়লেও কমেছে বন্দরের সক্ষমতা ও গতিশীলতা।
এর পেছনে নৌ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তির যথেচ্ছ হস্তক্ষেপ, চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে সার্বিকভাবে সুদক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তার অভাব প্রকটতর হওয়া, চরম অব্যবস্থাপনা, সমস্যা-সঙ্কট নিরসনে নির্লিপ্ততা ও অবহেলা, অদূরদর্শিতা, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা পরিচালনা পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্তহীনতা ও টালবাহানা, অত্যাবশ্যকীয় ভারী যন্ত্রপাতির সঙ্কট, গিয়ারলেস জাহাজ আগমনের আধিক্য, প্রতি বছর কন্টেইনারের প্রবৃদ্ধি অনুপাতে স্থান সঙ্কট এবং বেসরকারি কন্টেইনার ইয়ার্ডসমূহের (অফডক) যথেচ্ছ দুর্নীতি, অনিয়ম ও অদক্ষতার পরিণামে বন্দর দীর্ঘদিন পর কন্টেইনার জট একই সাথে জাহাজের জটগ্রস্ত হয়ে পড়েছে বলে পোর্ট-শিপিং সার্কেল ও বন্দর ব্যবহারকারীদের (স্টেকহোল্ডার) বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ অবস্থায় বন্দরে জাহাজের টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম বেড়েই চলেছে। চট্টগ্রাম বন্দর ও বহির্নোঙরে অলস বর্ধিত সময় নিয়ে অপেক্ষায় থাকার জন্য একেকটি জাহাজকে দৈনিক গড়ে ৮ থেকে ১০ হাজার ডলার হারে ডেমারেজ বা লোকসান দিতে হচ্ছে। আর এ কারণে সামগ্রিকভাবে বন্দর-ব্যয় বেড়েই চলেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প পরিচালনায় ব্যয় বাড়ছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে আমদানিকৃত নিত্য ও ভোগ্যপণ্য, উৎপাদিত পণ্যের মূল্য। যার আর্থিক খেসারত বা ক্ষতি গুনতে বাধ্য হচ্ছেন দেশের ক্রেতাসাধারণ। তদুপরি বহির্বিশ্বে দেশের প্রধান বন্দরের সুনামহানিও ঘটছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার জটের আলামত শুরু হয় গত মে মাস থেকে। তবে কর্তৃপক্ষের নির্লিপ্ততা ও কার্যকর উদ্যোগের অভাবে বিগত ঈদুল ফিতরের সময় থেকেই কন্টেইনারের জট ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছিল। এখন তা ঠাঁই নেই অবস্থায় গিয়ে ঠেকেছে। আমদানি কন্টেইনার খালাস ও রফতানিমুখী কন্টেইনার জাহাজীকরণ ব্যবস্থা দুইই অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। শিল্প কাঁচামাল ও রফতানি পণ্য বিশেষ করে গার্মেন্টস পণ্য খালাস ও রফতানিতে সুনির্দিষ্ট সময়সূচি নিয়ন্ত্রণে রাখা আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। আমদানি-রফতানিকারক ও ব্যবসায়ীরা শুধুই প্রহর গুনছেনÑবন্দরজট কবে নিরসন হবে? এ অবস্থায় গতকাল পর্যন্ত বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে আমদানি পণ্যবোঝাই কন্টেইনারের মজুদ বা স্থিতি ধারণক্ষমতার চেয়ে বাড়তি ২ হাজার টিইইউস (বিশ ফুট সাইজের ইউনিট হিসাবে)। বন্দরে আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার ৯৮১ টিইইউস। আর জটে পড়ে আছে ২৭ হাজার ৯শ’ টিইইউস। আমদানি, রফতানিমুখী ও খালি কন্টেইনার সমেত চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বমোট ৩৬ হাজার ৩৫৭ টিইইউস কন্টেইনার ধারণক্ষমতার বিপরীতে গতকাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার টিইইউস কন্টেইনারের মজুদ সৃষ্টি হয়েছে। গত সপ্তাহ শেষে কন্টেইনার মজুদ স্থিতি ছিল ৩২ হাজার ৭শ’ টিইইউস।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদ্যমান কন্টেইনার জট ও জাহাজজটের সমস্যা নিরসনের উপায় সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য প্রশাসন ও পরিকল্পনা (যুগ্ম-সচিব) বন্দরের মুখপাত্র মো. জাফর আলম গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমানে বন্দরে জট নেই। তিনি জানান, বন্দরের সবক’টি বার্থে ১০টি কন্টেইনার জাহাজ আমদানি ও রফতানিমুখী কন্টেইনার ওঠানামা করছে। বার্থে ভিড়ার জন্য বহির্নোঙরে অপেক্ষা করছে ১০টি কন্টেইনার জাহাজ। এর মধ্যে দু’টি রয়েছে গিয়ারলেস জাহাজ। যার একটি গত ৩ আগস্ট ও অপরটি ৫ আগস্ট বহির্নোঙরে এসে পৌঁছায়। সিসিটি’র দু’টি বার্থে গিয়ারলেস জাহাজ হ্যান্ডিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে কী গ্যান্টিক্রেনের মাধ্যমে। অন্য বার্থগুলোতে তা নেই। এর জন্য আমরা ব্যবসায়ীমহলকে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি গিয়ারলেস জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার নিয়ে আসা হলে সেক্ষেত্রে এ ধরনের বিলম্ব হতে পারে। তিনি আরও জানান, বন্দরে কন্টেইনারেরও জট বর্তমানে নেই। আমদানি কন্টেইনার আছে ২৭ হাজার। আমদানি কন্টেইনার বন্দরের ধারণক্ষমতা অতিক্রম করেছে কিনা সে সম্পর্কে মন্তব্য না করে তিনি বলেন, ৩৬ হাজার ৫৫৩ টিইইউএস ধারণক্ষমতার বিপরীতে বর্তমানে আমদানিসহ সব মিলে কন্টেইনার আছে ৩৩ হাজার। তবে বন্দরে ৪০ হাজার টিইইউএস পর্যন্ত কন্টেইনার রাখা যায়।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরটি পরিচালনায় দূরদর্শী, স্বচ্ছ ও দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণ অত্যাবশ্যকীয় হলেও বর্তমানে সে ক্ষেত্রে প্রতি পদে তার অভাব, একই সঙ্গে ব্যাপক অদক্ষতা ও অনভিজ্ঞতা ফুটে উঠছে। গিয়ারলেস জাহাজের ক্ষেত্রেও তা সুস্পষ্ট। বর্তমানে পৃথিবীর সব সমুদ্র বন্দরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গিয়ারলেস ভেসেল (ক্রেনবিহীন জাহাজ) অধিকহারে আসা-যাওয়া করছে। চট্টগ্রাম বন্দরও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু গিয়ারলেস জাহাজ হ্যান্ডলিং করতে গিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরেই ঘটছে বিপত্তি। কেননা চট্টগ্রাম বন্দরে গিয়ারলেস জাহাজে কন্টেইনার ওঠানো-নামানোর সক্ষমতা রয়েছে সিসিটি’র মাত্র ৩টি জেটি-বার্থে। সেখানেই রয়েছে গিয়ারলেস জাহাজের কন্টেইনার ওঠানামার জন্য অপরিহার্য কী গ্যানন্ট্রি ক্রেন। তাও সচরাচর বড়সড় জাহাজ হলে সেক্ষেত্রে পাশাপশি দু’টি জাহাজে কন্টেইনার ওঠানামা করা সম্ভব। এক জোড়া করে দুই জোড়া কী গ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে দু’টি জাহাজের কন্টেইনার ওঠানামা হয়ে থাকে। বন্দরের অপর কোন বার্থে তা সম্ভব নয়। চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি’র ৫টি জেটি-বার্থ ও জেনারেল কার্গো বার্থের অপর ৫টি বার্থে কন্টেইনার খালাস কিংবা জাহাজীকরণ প্রক্রিয়ায় ক্রেনযুক্ত জাহাজই হ্যান্ডেল করতে পারে। বন্দরে গিয়ারলেস জাহাজের গমনাগমন বেড়ে যাওয়ার ফলে শুধু সিসিটি’র দু’টি বার্থে কন্টেইনার ওঠানামার জন্য জাহাজকে অপেক্ষায় কাটাতে হয় (বহির্নোঙরে) বার্থ খালি হওয়া পর্যন্ত। এ অবস্থায় জাহাজজট আরও বেড়ে যাচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ তাতে বিপাকে পড়েছে। পরিস্থিতি শামাল দিতেও হিমশিম দশায় পড়েছে। তবে ভবিষ্যতে গিয়ারলেস জাহাজের আগমন আরও বাড়বে। অথচ আগেই বন্দর কর্তৃপক্ষ যদি দূরদর্শী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বন্দরের অপর ১০টি বার্থের জন্য (ন্যূনতম এনসিিিট’র ৫ বার্থে) কী গ্যানট্রি ক্রেন সংগ্রহ করতে সমর্থ হতো তাহলে এহেন নাজুক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতো না। এমনকি বন্দরের বছর বছর মুনাফালব্ধ অর্থ বাবদ নিজস্ব অর্থায়নেই তা করা সম্ভব ছিল।
অনুরূপভাবে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিবছরই কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের চাপ ও চাহিদা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সর্বশেষ গতবছরে কন্টেইনারে প্রবৃদ্ধির হার ১৭ শতাংশ। আর কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল ২১ লাখ ৮৯ হাজার টিইইউএস। গতবছরে চট্টগ্রাম বন্দর মিলিয়ন ক্লাবে প্রবেশ করলেও কন্টেইনারের স্থানাভাবে ধুঁকছে প্রধান সমুদ্র বন্দর। সুষ্ঠু ও স্বচ্ছন্দে বন্দর পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ৩০ শতাংশ অবকাঠামো খালি বা রিজার্ভ রাখার নিয়ম থাকলেও বাস্তবে ধারণক্ষমতা অতিক্রম করছে কন্টেইনারের মজুদ স্থিতি, যাতে বেসামাল অবস্থা বিরাজ করছে। বর্তমানে বন্দরের আর কোথাও কন্টেইনার রাখার জায়গা খালি নেই। এই জট স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। কন্টেইনার রাখা ও হ্যান্ডলিং আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও স্থান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ডক ওয়ার্কার্স কলোনী সংলগ্ন জায়গায় এবং এক্স ও ওয়াই শেডের পাশে ওভার ফ্লো কন্টেইনার ইয়ার্ড স্থাপনের চিন্তা-ভাবনার কথা বন্দর কর্তৃপক্ষ জানালেও তার বাস্তব রূপায়ণ নেই। তাছাড়া বন্দরে সময়ের তাগিদে আরও কয়েকটি কন্টেইনার ইয়ার্ডের পরিকল্পনা থমকে আছে।
এদিকে বেসরকারি কন্টেইনার ইয়ার্ড চট্টগ্রামের অধিকাংশ ক্ষেত্রে যত্রতত্র ও অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। অফডক পরিচালনার ক্ষেত্রে সুষ্ঠু কোনো নিয়ম-পদ্ধতি, নীতিমালা গড়ে ওঠেনি। অনিয়ম, দুর্নীতি, যথেচ্ছাচার সেখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। অথচ সরকারের সরাসরি কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। অফডক মালিকদের সাথে বন্দর ব্যবহারকারীদের টাগ অব ওয়ার চলছে প্রতিনিয়তই। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৩০ ধরনের পণ্যসামগ্রী বেসরকারি কন্টেইনার ইয়ার্ডগুলোতে হ্যান্ডেল করা হচ্ছে। সঠিক, স্বচ্ছ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভাবে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনভিজ্ঞতার কারণে অফডক অবকাঠামো থাকলেও তা বন্দরের জন্য তেমন সহায়ক ও পরিপূরক হতে পারছে না, যতটা শুরুর দিকে প্রত্যাশিত ছিল। অথচ অফডক খাতে দক্ষ, স্বচ্ছ ও সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে বন্দর পরিচালনা আরও অনেকাংশে গতিশীল হতো। ব্যবসায়ী তথা বন্দর ব্যবহারকারীদের সেবা প্রদানও সহায়ক হয়ে উঠতো।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জামের চলমান সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। যা ‘গোঁদের উপর বিষফোঁড়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধুমাত্র সময়োচিত ও দূরদর্শী পদক্ষেপের অভাবেই চট্টগ্রাম বন্দর যন্ত্রপাতির সংকটে ধুঁকছে। অথচ বন্দরের নিজস্ব তহবিলে এর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ জমা রয়েছে। এই সংকটের সুবাদে একে পুঁজি ও ব্যবসায়ীদের নানা কৌশলে জিম্মি করে অপারেটর থেকে শুরু করে উপরস্তরের একটি দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট ঘুষ, বকশিশ, স্পিডমানির হাট বসিয়েছে। কিন্তু সময়মতো পদক্ষেপ নেয়া হলে বন্দরে আজ ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জামের সংকট বিরাজ করতো না। বন্দরে অত্যাধুনিক ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জাম (ইকুইপমেন্টস) সংগ্রহের জন্য অনেক বিলম্বে গত জুলাইয়ের গোড়াতে ফাইল নড়াচড়া শুরু হলেও কি পদ্ধতিতে কেনা হবে সেই জটিলতায় তাও আবার থমকে গেছে। জানা গেছে, বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়নে ১ হাজার ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬১ ধরনের অত্যাধুনিক ভারী যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে ১০টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ছাড়াও আছে রাবার টায়ারড গ্যান্ট্রি (আরটিজি) ক্রেন, স্ট্র্যাডল ক্যারিয়ার, রিচ স্ট্র্যাকার, কন্টেইনার মোভার, রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন। যার সবগুলোই কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের উপযোগী ভারী যন্ত্রপাতি। দীর্ঘ ১২ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে এসব সরঞ্জাম সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হলেও এসব যান্ত্রিক সরঞ্জাম ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট পদ্ধতিতে, উন্মুক্ত টেন্ডারে কোন প্রক্রিয়ায় কেনা হবে তা নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী ২০২০ সাল নাগাদ চট্টগ্রাম বন্দরে বার্ষিক অন্ততপক্ষে ২৯ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে হবে। এই লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের উপযোগী ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জাম এখনিই সংগ্রহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাস ওঠানামা, স্থানান্তর, মজুদের উপযোগী যান্ত্রিক সরঞ্জামের উল্লেখযোগ্য ঘাটতির ফর্দে রয়েছেÑকী গ্যানট্রি ক্রেন, রাবার টায়ারড গ্যানট্রি ক্রেন, সার্র্বক্ষণিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কাজে অপরিহার্য (ফোর হাইটের ৪০ টনী) স্ট্র্যাডল ক্যারিয়ার, ৭ টন থেকে ৪৫ টনী রিচ স্টেকার, ৪০-৪৫ টনী স্ট্র্যাডল ক্যারিয়ার, ১৬ থেকে ৪২ টনী ফর্ক লিফট, ফর্ক লিফট ¯েপ্রডার, কনটেইনার মুভার, এম্পটি হ্যান্ডলার ফর্কলিফট, টার্মিনাল ট্রাক্টর, ট্রেইলর। ২-৩ টনী শ্যোর ক্রেন, ৫০ টনী মোবাইল ক্রেন, ২০ টনী মোবাইল ক্রেন, ১০ টনী মোবাইল ক্রেন, ১০ টনী লগ হ্যান্ডলার, ৫ টনী ফর্ক লিফট, ৫ টনী লো মাস্ট ফর্ক লিফট, ৩ টনী ফর্ক লিফট, ২৫ টনী ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাক্টর, ২৫ টনী হেভি ট্রেইলর ও লাইট ট্রেইলর।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
তুষার ১০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:২১ পিএম says : 0
বন্দরের সক্ষমতা ও গতিশীলতা বাড়াতে হবে।
Total Reply(0)
Fazlul Haque ১০ আগস্ট, ২০১৬, ১২:২৮ পিএম says : 0
দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরটি পরিচালনায় দূরদর্শী, স্বচ্ছ ও দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণ অত্যাবশ্যকীয়
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন