বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আল্লামা শফীর জানাযা দাফন হাটহাজারী মাদরাসায়

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও হাটহাজারী সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:৫০ এএম | আপডেট : ৩:২২ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

হেফাজতে ইসলামের আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নামাজে জানাজা শনিবার বাদ জোহর (দুপুর ২টায়) হাটহাজারী মাদরাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। পরে মাদরাসার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। শুক্রবার রাতে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে হাটহাজারী মাদরাসার শুরা কমিটি। তার কফিন ঢাকা থেকে হাটহাজারী মাদরাসায় আনা হচ্ছে। মাদরাসার একটি শ্রেণিকক্ষে কফিন সকলের দেখার জন্য রাখার কথা রয়েছে।
শুরা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাটহাজারী মাদরাসায় জানাযা ও দাফন সম্পন্ন করতে মাদরাসা শুরা কমিটি ও প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। হাটহাজারীসহ চট্টগ্রামের চার উপজেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।
দেশের অংসখ্য আলেমের শিক্ষক সর্বজন শ্রদ্বেয় এই আলেমকে শেষ বারের মতো দেখতে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে ছুটে আসছেন। হাটহাজারীতে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
জানাজা শেষে মাদরাসা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বায়তুল আতিক জামে মসজিদের সামনের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নাস্তিক মুরতাদ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা দেশের কওমি শিক্ষার কিংবদন্তি এ আলেমের ইন্তেকালে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তার ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
হাটহাজারী মাদরাসায় তার ইন্তেকালের খবর পৌঁছলে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছাত্র-শিক্ষকেরা। সারাদেশে তার অগণিত ছাত্র, ভক্ত এবং অনুসারী শোকে মুহ্যমান। দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
১০৩ বছর বয়সী আল্লাম শাহ আহমদ শফী দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে এর আগেও দফায় দফায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মাধ্যমে ৯২ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এ দেশের তৌহিদী জনতার ঈমান, আক্বিদা রক্ষার আন্দোলনে ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
কওমি ধারার ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের পথিকৃৎ, বিশ্ববরেণ্য এ আলেম সাদাসিধে জীবনযাপন করেন। রাঙ্গুনিয়ায় তার নিজ বাড়ি হলেও তার ধ্যান-জ্ঞান সবকিছুই ছিল হাটহাজারী মাদরাসাকে ঘিরে। ২০ বছরের শিক্ষকতা এবং ৩০ বছরের মহাপরিচালকের (মুহতামিম) দায়িত্ব পালনকালে হাটহাজারী মাদরাসাতেই তিনি থাকতেন।
১৯১৬ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়ারটিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শাহ আহমদ শফী। তার পিতার নাম বরকম আলী, মা মোছাম্মাৎ মেহেরুন্নেছা বেগম। আহমদ শফীর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে।
তার বড় ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ পাখিয়ারটিলা কওমি মাদরাসার পরিচালক। ছোট ছেলে আনাস মাদানি হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক।
আল্লামা শফীর লেখা বইয়ের মধ্যে রয়েছে; বাংলা ভাষায়- হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্ব, ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা, ইসলাম ও রাজনীতি, সত্যের দিকে করুন আহ্বান, সুন্নাত ও বিদ-আতের সঠিক পরিচয় এবং উর্দু ভাষায়- ফয়জুল জারি (বুখারির ব্যাখ্যা), আল-বায়ানুল ফাসিল বাইয়ানুল হক ওয়াল বাতিল, ইসলাম ও ছিয়াছাত এবং ইজহারে হাকিকাত।
হাটহাজারীর মাদরাসার মহাপরিচালক হিসেবে দেশের কওমি মাদরাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন আহমদ শফী। তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশেরও (বেফাক) সভাপতি পদেও ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন