করোনাকালীন সময়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রায়ই শিরোনাম হতে দেখা গেছে চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের নানান অসুবিধা এমনকি বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর মত ঘটনা। আবার এই দু:সময়ে নিজের জীবন বাজী রেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন অনেক চিকিৎসক। তেমনি এক মানবিক ডাক্তার আল আমিন । দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের স্বেচ্ছায় চিকিৎসাসেবা দিতে যেসব চিকিৎসক এগিয়ে এসেছিলেন ডা. আল আমিন ছিলেন তাদের মধ্যে প্রথম সারির একজন। তিনি যখন এগিয়ে এসেছিলেন তখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। অদৃশ্য এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে সামনের কাতারের যোদ্ধারাও আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটির চিকিৎসা করার বিষয়ে সহকর্মীদের মধ্যে ছিল ভয়। সে সময় ডা. মুন্সী মো. আল-আমিন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হেলথ সায়েন্স জেনারেল হাসপাতালে (বিআইএইচএস বারডেম) এর ডায়বেটিস ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত থেকে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
ডা. আল-আমিন দৈনিক ইনকিলাকে বলেন, আমাদের কাছে এবং একের পর এক রোগীদের সহায়তা করতে এগিয়ে আসা অন্য সহকর্মীদের কাছে এটি ছিল একটা বিশাল মুহুর্ত। তবে ডা. আল আমিনের জন্য এটি এক বিপরীতধর্মী অভিজ্ঞতাও বটে। তিনি একদিকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে তার সহকর্মীদের মৃত্যুবরণ করতে দেখছেন, অন্যদিকে ডায়বেটিসসহ কিডনী জটিলতায় অসংখ্য রোগীকে জটিল পরিস্থিতি থেকে সেরে উঠাতে দিনভর কাজ করতে হয়েছে তাকে। রোগীদের চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা কোভিড-১৯ পজিটিভ বা নেগেটিভ রিপোর্ট যাই আসুক না কেন, ল²ণ থাকলেই চিকিৎসা শুরু করে দেই। পাশাপাশি আরও কিছু পরীক্ষা করাই, যা কোভিডের লক্ষণ গুলোকে সাপোর্ট করে। তখন দেরি না করে সব নিরাপদ ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করি। এখানে হারানোর কিছু নাই। রিপোর্ট একবার নয়, অসংখ্যবার ভুল আসতে পারে। তাই চিকিৎসা শুরু করে আমরা পর্যাক্রমে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখি।
রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়ার তার অনুপ্রেরণার উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ডা. মুন্সী মো. আল-আমিন ইনকিলাবকে বলেন, আমি আমার মা ও বাবার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। তিনি আরও জানান, বিপদের বিষয়টি জানা সত্তে¡ও তারা আমাকে কাজটি করতে উৎসাহিত করেছিলেন। তারা আমাকে বলেছিলেন যে, আমি একজন ডাক্তার ও তার সন্তান এবং আমার ভয় পাওয়া উচিত হবে না। কারন আমি বিশেষ প্রয়োজনের সময় মানুষের সেবা করছি এবং আল্লাহ আমাকে দেখবেন। বিআইএইচএস বারডেমের এই চিকিৎসক জানান, করোনার কোনও রোগী যদি তার বাবা, মা, ভাই বা বোন হতেন তবে তিনি কি করতেন-নিজেকে এমন একটি জিজ্ঞাসাই ছিল তার চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করার আরেকটি কারণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন