বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

এবার সালাউদ্দিনের ৩৬ প্রতিশ্রুতি!

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:৪০ পিএম | আপডেট : ৯:০৭ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বহুল আলোচিত নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাফুফের তিনবারের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধী সম্মিলিত পরিষদ। রোববার দুপুরে প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে ২১ জনের প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে পাঁচ বিভাগে ৩৬ প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন সালাউদ্দিন। সর্বশেষ ২০১৬ সালে সালাউদ্দিনের নির্বাচনী ইশতেহারে ২৫ প্রতিশ্রুতি থাকলেও এবার বেড়েছে ১১টি। আগের প্রতিশ্রুতিগুলোর সঙ্গে এবার নতুন যুক্ত হয়েছে অনূর্ধ্ব-১০ জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ। যা আয়োজন হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে মরহুম শেখ রাসেলের নামে। শেখ কামালের নামে হবে অনূর্ধ্ব-১৮ বা অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় যুব চ্যাম্পিয়নশিপ। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক যে টুর্নামেন্টগুলো হয়ে আসছে সেগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছে ইশতেহারে।

ইশতেহার ঘোষণার প্রক্রিয়াও ছিল ব্যতিক্রম। সালাউদ্দিনের ৩৬ প্রতিশ্রুতির ইশতেহার পাঠ করে শোনান ছয়জন। পাঁচ বিভাগের মধ্যে জাতীয় দল নিয়ে প্রতিশ্রুতি পড়েন বাফুফের বর্তমান কমিটির অন্যতম সহ-সভাপতি ও জাতীয় দল কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ। ঘরোয়া ফুটবল নিয়ে প্রতিশ্রুতি পাঠ করেন বর্ষিয়ান ফুটবল সংগঠক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ। মহিলা ফুটবল নিয়ে প্রতিশ্রুতির কথা শোনান ফিফা ও বাফুফে সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ। উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পড়েন সম্মিলিত পরিষদের সহ-সভাপতি প্রার্থী আতাউর রহমান খান মানিক এবং টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে প্রতিশ্রুতি পাঠ করেন এই প্যানেলের দুই সহ-সভাপতি প্রার্থী আমিরুল ইসলাম বাবু ও ইমরুল হাসান।

ইশতেহারে বলা হয়েছে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশকে ৩০ ধাপ ওপরে তোলার চেষ্টা করা হবে। নারী ফুটবল র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশকে ৯০ এর কাছাকাছি তোলার প্রতিশ্রতিও দেয়া হয়েছে। ঘরোয়া ফুটবলকে নির্দিষ্ট ছকের মধ্যে আনা, বর্ষপঞ্জি ঠিক রাখা, প্রতিটি লিগের মধ্যে সমন্বয় তৈরির কথাও বলা হয়েছে সম্মিলিত পরিষদের ইশতেহারে। শুধু তাই নয়, দেশের নূন্যতম চারটি স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ভেন্যুগুলোর মাঠের মান উন্নয়নের উদ্দ্যোগের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে কাজী সালাউদ্দিনের প্যানেল। মতিঝিলস্থ বাফুফে ভবনে অত্যাধুনিক জিম তৈরি করা, নারী ফুটবলারদের আবাসিক ব্যবস্থা আরো উন্নত করা ছাড়াও সাংবাদিকদের জন্য আধুনিক মিডিয়া সেন্টার স্থাপনের কথা উল্লেখ করা হয় ইশতেহারে।

ইশতেহার অনুযায়ী জাতীয় ফুটবল দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফি বছর আয়োজন, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও সাউথ এশিয়ান গেমসে শিরোপা পুনরুদ্ধার, জাতীয় দলের জন্য হাইপ্রোফাইল কোচের সঙ্গে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম, ২০২৪ সালের মধ্যে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির লক্ষ্যে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার মতো অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সম্মিলিত পরিষদ। ইশতেহার ঘোষণা শেষে র‌্যাঙ্কিং প্রসঙ্গে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্বগ্রহণ করি, তখন র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৮০ ছিলাম। আর আজ ১৮৭ নম্বরে। র‌্যাঙ্কিংতো আর এভাবে হয় না। নইলে ফ্রান্স বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েও এখন ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে চার নম্বরে। আর বেলজিয়াম এক নম্বরে। র‌্যাঙ্কিং অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যত বেশি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলা যাবে, ততই র‌্যাঙ্কিংগনণা হবে। আমাদের আর্থিক সমস্যার কারণে প্রায় তিন বছর কোনো ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারিনি আমরা। এখন আমরা খেলি বলে আবার ফিরে এসেছে ১৮৭ নম্বরে।’

গত নির্বাচনের ইশতেহার নিয়ে বাফুফের সভাপতি বলেন, ‘গত নির্বাচনে ইশতেহার তৈরী করেছিলেন আমাদের প্যানেলের নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক তরফদার মো. রুহুল আমিন। যে বিষয়গুলোর সম্পর্কে কিছুই জানতাম না আমি সেগুলো স্থান পেয়েছিল ওই ইশতেহারে। এবার নিজের তত্বাবধানে তৈরী করেছি। তাই দুই ইশতেহারের মধ্যে ফারাকটা অনেক। তবে আমি বলবো গত নির্বাচনের ইশতেহারে যে প্রতিশ্রুতিগুলো ছিল তার ৭০/৭৫ ভাগ আমরা গেল ৪ বছরে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’

দেশের আনাচে কানাচে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত ফুটবল একাডেমিগুলোকে ‘একাডেমি অ্যাক্রিডিটেশন স্কীমে’ আনতে চায় সম্মিলিত পরিষদ। গত ১২ বছরে একজন সালাউদ্দিন, সালাম মুর্শেদী বা আসলাম কেন তৈরী করতে পারেনি বাফুফের বর্তমান কমিটি? এমন প্রশ্নের উত্তরে সালাউদ্দিন বলেন, ‘যখন আমি খেলতাম তখন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি ম্যাচে ৩-২ গোলে হেরেছিলাম আমরা। ওই ম্যাচে দু’গোলই করেছিলাম আমি। সবাই বাহবা দিয়েছিল। অথচ ম্যাচটি ছিল কিন্তু একটি ক্লাব দলের বিপক্ষে। আমাদের সময়ে বিদেশী জাতীয় দলের সঙ্গে আমরা খেলিনি। এখন খেলতে হচ্ছে ছেলেদের। তাই ফোকাস করে কেউ উঠে আসতে পারছে না।’

নির্দিষ্ট সময়ের পর আবেদন করায় সভাপতি পদে প্রার্থীতা প্রত্যাহার চেয়েও পাননি বাদল রায়। ব্যালটে ঠিকই থাকছে তার নাম। ‘ইচ্ছে’ করলেই এই সঙ্কট কাটাতে পারতেন সালাউদ্দিন, তিনি কেন আমাকে হয়রানী করছেন? দু’দিন আগেই বলেছিলেন বাদল রায়। এ প্রসঙ্গে বাফুফে বসের কথা, ‘নির্বাচনের সব বিষয় দেখে নির্বাচন কমিশন। এখানে আমার কোন হাত নেই। নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করিনি আমি। আর কাউকে হয়রানীও করছি না।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন