শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

অনিয়ম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত

পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান পেকুয়া স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স। এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কয়েকজন চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্য সেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

জানা যায়, গত ২২ বছর ধরে এক চিকিৎসকসহ ৫ কর্মচারী এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত থাকার সুবাধে তারা সরকারি এ প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও প্রতিনিয়তই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কুকের দায়িত্বে থাকা নেজাম উদ্দিন হাসপাতালের ক্যান্টিনকে খাবার হোটেল বানিয়ে বাণিজ্য চালিয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা। নেজাম উদ্দিন নিজের ইচ্ছেমতো হাসপাতালকে অনিয়ম-দুর্নীতির আঁখড়ায় রূপান্তরে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচ্ছনতাকর্মী মো. ইউনুচ, নিরাপত্তা প্রহরী জসিম উদ্দিন, অফিস সহায়ক ইসমাইল পালা করে হাসপাতালের নিচ তলায় অবস্থিত জরুরি বিভাগে রোগীদের ড্রেসিংসহ চিকিৎসকের ভ‚মিকা পালন করেন। হাসপাতালে কর্মরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. জিয়া উদ্দিনও প্রায় সময় হাসপাতালের দায়িত্ব ফাঁকি দিয়ে পেকুয়া চৌমুহুনীর প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখেন।

পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফার্মাসিস্ট পদ শূন্য রয়েছে। এই সুবাধে হাসপাতালের এক অফিস সহায়ক ফার্মাসিস্টের দায়িত্ব পালন করছেন। হাসপাতালের রোগীদের খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের বিরুদ্ধেও রয়েছে অভিযোগ। অফিস সহকারী নেজাম উদ্দিনের সাথে আঁতাত করে ঠিকাদার নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করে। উপজেলার কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যে কোন বিল উত্তোলনের সময় হাসপাতালের অফিস সহকারী নেজাম উদ্দিনকে বিলের উপর হিসাব করে ১০% হারে দিতে হয়। এমনকি বেতন-ভাতা উত্তোলনের সময়ও নেজাম উদ্দিনকে ঘুষ দিতে হয়।

আমরা পেকুয়াবাসী সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জহিরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের টিএইচও ডা. ছাবের ও অফিস সহকারী নেজাম উদ্দিন একটি ডিজিটাল নেমপ্লেটের দাম ২৮ হাজার টাকা দেখিয়ে সরকারি টাকা লোপাট করেছেন। ওই ডিজিটাল নেমপ্লেটের দাম ২-৩ হাজার টাকা হবে। গত ১০ বছর ধরে হাসপাতালের জেনারেটরের জ্বালানি খরচ বাবদ ভুয়া হিসাব দেখিয়ে টাকা উত্তোলন, হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা বাবদ খরচ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎসহ এমন কোন দুর্নীতি ও আত্মসাতের ঘটনা নেই যা অফিস সহকারী নেজাম উদ্দিন করেনি।


অভিযোগের ব্যাপারে অফিস সহকারী নেজাম উদ্দিন জানান, হাসপাতালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত রয়েছেন সেটা ঠিক। তবে তিনি সততার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন কমিউিনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার প্রসঙ্গে বলেন, এসম মিথ্যাচার। তিনি কারো কাছ থেকে ঘুষ নেননি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আবুল কাসেম অভিযোগ করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি ডিজিটাল সাইন পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লাগানো হয়েছিল। কিন্তু, সেখানে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী এবং চকরিয়া-পেকুয়ার সংসদ সদস্য জাফর আলমের নাম আছে বলেই ওই হাসপাতালে কর্মরত টিএইচও ডা. ছাবের আহমদ ও অফিস সহকারী নেজাম উদ্দিন মিলে ডিজিটাল সাইনটি বন্ধ করে দিয়েছে। পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. ছাবের আহমদ জানান, তিনি হাসপাতালে যোগদান করার পর থেকে হাসপাতালে রোগীরা আগের চেয়ে বেশি সেবা পাচ্ছে। হাসপাতালের প্রধান সহকারী নেজাম উদ্দিনের অনিয়ম-দুর্নীতি ও একই কর্মস্থলে ২২ বছর ধরে কিভাবে কর্মরত রয়েছে জানতে চাইলে বলেন, এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন