অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সরকার নিয়ন্ত্রিত রেগুলেটরী সংস্থার কারণে পুঁজিবাজারে দরপতন অত্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট আহসানুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে বাজার যখন স্থিতিশীল হতে যাচ্ছিল তখনই বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের ট্যারিফ কমানোর মতো একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কারণে তিতাসসহ ৭টি সরকারি কোম্পানির শেয়ার দামে ব্যাপক দরপতন ঘটে। যার প্রভাবে বিনিয়োগকারীরা আস্থাহীন ও পুঁজিহীন হয়ে পড়ে। এর ফলে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডিএসইতে থেকে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠটির সদস্য মোস্তাক আহমেদ সাদেক, মিনহাজ মান্নান ইমন, শাহেদ আব্দুল খালেক, খুজিস্তা নুর-ই নাহরিন।প্রেসিডেন্ট জানান, তিতাস গ্যাস তালিকাভুক্ত কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও ট্যারিফ কমানোর বিষয়টি এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয় এনার্জি রেগুলেটর কমিশন। যে বিষয়ে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। এছাড়া ট্যারিফ কমানোর বিষয়টি গোপন রাখা হয়। যাতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণœ ও ডিএসই তালিকাভুক্তি রুলস ভঙ্গ হয়েছে। তিতাস গ্যাস কোম্পানি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি প্রায় ৯ টাকা আয় করে। কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণা করে ১৫ শতাংশ। যে কোম্পানিটি আগে ধারাবাহিকভাবে ৩০ শতাংশ বা তার ওপরে লভ্যাংশ প্রদান করে। তিতাস গ্যাসের এ আচরণে কোম্পানিটিসহ তালিকাভুক্ত সরকারি আরও ৬টি কোম্পানির উপরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তিতাসের ট্যারিফ যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে সরকারি তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্য সংবেদনশীল সিদ্ধান্ত অন্যান্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সঙ্গে বিএসইসি, স্টক এক্সচেঞ্জদ্বয়ের সঙ্গে সম্বিল্লিতভাবে নেয়া। যাতে বাজারে কোন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার মধ্যে না আনলে এরকম নেতিবাচক ঘটনা বার বার ঘটার সম্ভাবনা থাকবে বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি কিছু দায়িত্বশীল জায়গা থেকে বিএসইসি ও পুঁজিবাজার নিয়ে কিছু নেতিবাচক মন্তব্য করা হয়েছে উল্লেখ্য করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পুঁজিবাজার নিয়ে অনুমান নির্ভর নেতিবাচক মন্তব্য গভীর চক্রান্তের অংশ। গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কয়েকদিনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২৪০০ কোটি টাকা। তাই বাজারকে কেন্দ্র করে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অনুমান নির্ভর মন্তব্য না করার আহ্বান জানান তিনি।পুঁজিবাজার ধসের ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আহসানুল ইসলাম বলেন, ছিয়ানব্বই ও ২০১০ সালের কেলেঙ্কারির তদন্ত প্রতিবেদন তথ্য-উপাত্তভিত্তিক ছিল না এমনকি আইনের ভ্যালুয়েশনও ছিলো না। এই প্রতিবেদনে আইন অমান্য করে কে কোন ধরনের কেলেঙ্কারি সঙ্গে জড়িত ছিল তা সুনির্দিষ্ট ছিল না। আইনের কোন বিষয় লংঘন হয়েছে তা নিয়ে রিপোর্টে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু তারা যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে তা আমাদের কাছে গভীর ষড়যন্ত্রের চক্র হিসেবে মনে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন