বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ফেনীতে ভাঙন আতঙ্কে ৪০ পরিবার

মো. ওমর ফারুক, ফেনী থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

নদী ও খালের পানি কমে যাওয়ায় ফেনীর সদর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতের রাস্তা, মানুষের বসতভিটা ও ফসলি জমিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর, লেমুয়া, ফরহাদনগর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে কালিদাস পাহালিয়া নদী। এই নদী থেকে সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে শাখা খাল বেরিয়ে গেছে। এসব খালগুলো চওড়া ও গভীর হওয়ায় পানি কমার সাথে সাথে দুই পাড়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। তখন রাস্তাঘাট, খাল ঘেঁষা বসবাসরত মানুষের বসতভিটা ও ফসলি জমি ভাঙনের কবলে পড়ে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফেনী সদর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালিদাস পাহালিয়া নদী থেকে সৃষ্টি হওয়া গজারিয়া খালটি ধলিয়া ইউনিয়ন হয়ে সোনাগাজী উপজেলার কুঠিরহাটে ছোট ফেনী নদীতে গিয়ে মিশে গেছে। এই খালটি সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের পূর্ব দৌলতপুর, পশ্চিম দৌলতপুর ঘেঁষা হওয়ায় এই দুই গ্রামের অনেক মানুষের বসতভিটা ও ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট খালের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।
এদিকে গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ধলিয়া ইউপির ৭নং ওয়ার্ড পশ্চিম দৌলতপুরে গজারিয়া খাল ঘেঁষা জেলে বাড়ির গীতা রানী জলদাস, প্রিয় লাল, সুকুমার, সুমঙ্গল, হরিকমল, খুদিরাম, রায়কমল, নিরঞ্জন, শ্রীধরন ও বিশ্বনাথসহ আরো অনেকের বসতবাড়ি খালের ভাঙনের শিকার। ফকির আহাম্মদ সওদাগর বাড়ির ডা. সাহাব উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, আবুল কাসেম, শাহআলম, মিজান, খুরশিদ, বাবুল ও রাজুসহ ভুক্তভোগি প্রায় ৪০ পরিবারের বসতভিটা খালের অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে। তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কথা হয় খালের পাশে বসবাসরত জেলে বাড়ির বৃদ্ধা গীতা রানী জলদাসের সাথে, তিনি বলেন স্যার এই গজাইর‌্যা খালের ভাঙনেরর কারনে আন্ডা রাতে ঘুমাইতে হারিনা, আন্নেরা কিছু করেন। আঁড় ঘরের লগে দিয়ে ওয়াল দিছিলো সব হানিয়ে লই গেছে। আঁই হোলাহাইন লই কেমনে থাকুম বলে তিনি বিলাপ করেন।
কথা হয় ফকির আহম্মদ বাড়ির ডা. সাহাব উদ্দিনের সাথে, তিনি বলেন ৮ বছর পূর্বে তৎকালিন চেয়ারম্যান আমাদের বাড়ির পাশে খালের অংশে গার্ডওয়াল করে দিয়েছিলেন এবং সর্বশেষ গত ১ বছর পূর্বে বর্তমান চেয়ারম্যান আরেকটি গার্ড ওয়াল নির্মাণ করে দিয়েছিলেন।
কিন্তু এই ওয়াল নির্মাণের ১ মাসের মধ্যে ভেঙে খালে পড়ে যায়। এ বিষয়ে আমরা কয়েকবার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। এদিকে খালে পানি কমে যাওয়ায় দিন দিন ভাঙন আরো তীব্র হচ্ছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগিরা ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হুদার সাথে, তিনি জানান, ভুক্তভোগিদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি ও চেয়ারম্যান একমাস আগে সরেজমিনে পরিদর্শন করে এসেছি। ওই স্থানে খালের গভীরতা বেশি থাকায় গার্ডওয়াল টিকেনা। এখানে ভাঙন রোধে টেঁকসই গার্ডওয়াল নির্মাণ করতে হলে বড় বরাদ্দের প্রয়োজন। আমাদের এ ব্যাপারে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন