বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গোয়ালন্দে ভাঙন ঝুঁকিতে ফেরিঘাট

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৬ এএম

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীতে তৃতীয় দফা পানি বৃদ্ধির কারণে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। এতে ফেরি ঘাটের ২০০ মিটার এলাকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে ২ ও ৩ নম্বর ফেরিঘাট। ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে যে কোন মুহূর্তে গত বছরের মতো ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার লঞ্চঘাট থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ মিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ২ নম্বর থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাটের প্রায় ২০০ মিটার এলাকার কয়েক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে বেশি। ২ নম্বর ঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কের মাথার অংশবিশেষ ভেঙে বিলীন হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় দৌলতদিয়ার ১ ও ২ নম্বর ফেরিঘাট।

বর্ষা পরবর্তীতে দুটি ঘাট সংস্কার করে প্রস্তুত করা হয়। এ বছর নতুন করে ২ নম্বর ঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে সড়কের মাথায় ইটের আদলা ভর্তি বস্তা এবং বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হলেও বিলীন হয়েছে। ৩ নম্বর ফেরিঘাট সংলগ্ন সিদ্দিক কাজী পাড়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কারণে ৩ নম্বর ফেরিঘাটও হুমকিতে পড়েছে। ভাঙন থেকে কয়েক গজ দূরে ৩ নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরিতে যানবাহন ওঠানামা করছে। দ্রæত ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ৩ নম্বর ফেরিঘাটটি চরম ঝুঁকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙনের কারণে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে ফেরি সেক্টরের লোকজন। ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় ভাঙন শুরু হওয়ায় ফেরিঘাট রক্ষা ও যানবাহন পারাপারে বিপর্যয় আসতে পারে এ আশঙ্কা করছেন তারা। এছাড়া ফেরিঘাট সংলগ্ন সিদ্দিক কাজী পাড়ার বাসিন্দাদের মাঝেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সিদ্দিক কাজী পাড়ার আক্কাছ আলী বলেন, গত বছর ১ নম্বর ফেরিঘাট মজিদ শেখের পাড়ায় ভাঙনে ভিটেমাটি বিলীন হলে ৩ নম্বর ফেরিঘাটের কাছে জাকের পার্টি অফিসের পাশে এসে ঘর তুলি। এ বছর এখানেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন যদি বাড়তে থাকে তাহলে বিকল্প উপায় বের করতে হবে। কিন্তু কোথায় যাব তা ভেবে পাচ্ছি না। এ নিয়ে এখানকার প্রায় ১০০ পরিবার বাড়তি দুশ্চিতায় আছি।

স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, লঞ্চঘাট থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রতি বছর ভাঙন দেখা দেয়। এবারও লঞ্চঘাট থেকে ১ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার মজিদ শেখের পাড়ার প্রায় ৬০০ পরিবার এবং ২-৩ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার সিদ্দিক কাজী পাড়ার প্রায় ৩০০ পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রæত পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মেরিন আব্দুস সাত্তার বলেন, প্রতি বছর সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসে ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন ঠেকানো না হলে গত বছরের মতো এবারও ফেরিঘাট বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে জানিয়েছি।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দীন পাঠান বলেন, বন্যার আগে লঞ্চঘাট থেকে ৬ নম্বর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেছি। বন্যা পরবর্তী সময়ে লঞ্চঘাট থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ মিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন