শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নারায়ণগঞ্জে স্কুল ছাত্রী জিসা মনি কান্ডে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:০৬ পিএম

নারায়ণগঞ্জ নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রী জিসা মনিকে কথিত ধর্ষণ ও হত্যা ও জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই ঘটনার এজাহার, আসামিদের জবানবন্দি, ভুক্তভোগী ও আসামিসহ সবার বক্তব্য সম্বলিত প্রতিবেদন আগামী ৪ নভেম্বরের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গত ২৫ আগস্ট এই ঘটনার তদন্ত ও আসামিদের জবানবন্দিকে প্রশ্নবিদ্ধ হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করেন পাঁচ আইনজীবী। সেখানে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, বাদী এবং আসামিদের বিবাদী করা হয়।
পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন অ্যাড. মোহাম্মদ শিশির মনির। এই মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন অ্যাড. মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
পুলিশ ও মামলার নথি সূত্রে, গত ৪ জুলাই শহরের দেওভোগের এলএন রোড এলাকার স্কুলছাত্রী জিসা মনি (১৫) নিখোঁজ হয়। ১৭ জুলাই সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন জিসার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন। পরে ৬ আগস্ট একই থানায় একটি অপহরন মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২) ও তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিবকে (১৯)। ওই দিনই তাদের গ্রেফতার করা হয়। একই ঘটনায় দুই দিন পর গ্রেফতার করা হয় বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬)। আসামিদের দুই দফায় রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে তারা ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে ওই স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা জানায় আসামিরা। ঘটনার নাটকীয় রূপ নেয় গত ২৩ আগস্ট জীবিত অবস্থায় জিসা মনির ফিরে আসার পর। ওইদিন বিকেলে বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
জিসা মনি জানায়, ইকবাল পন্ডিত (একই মামলায় গ্রেফতার) নামে এক যুবকের সাথে সে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে তারা শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করে দেড় মাস একত্রে সংসার করেছে। তার সাথে অপহরণ, ধর্ষণ কিংবা হত্যার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় চারদিকে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দি প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
ব্যাপক সমালোচনার মুখে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এসআই শামীম আল মামুনকে প্রত্যাহার ও পরে বরখাস্ত করা হয়। তদন্তভার দেওয়া হয় একই থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল হাইকে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলমের নির্দেশে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জিসা মনির জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন হাইকোর্ট। মামলার নথিসহ হাজির হতে হওয়ার নির্দেশ দেন বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে। সে অনুসারে তারা হাজির হয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর ব্যাখ্যা দেন। এরপর আদালত ২৪ সেপ্টেম্বর আদেশের জন্য দিন রাখেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন