ঘরোয়া ফুটবলের নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ক্লাব কর্তা ও ফুটবলারদের মাঝে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে সম্প্রতি এক সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) পেশাদার লিগ কমিটি। নতুন মৌসুমের দলবদল কার্যক্রম শুরুর আগেই পরিত্যাক্ত মৌসুমের পারিশ্রমিকের ৫০ ভাগ চেয়েছেন খেলোয়াড়রা। কিন্তু ক্লাবগুলো ২৫ ভাগ দিতে রাজি আছে। আর তাদের এই চাওয়ায় আপাতত সায় দিয়েছে লিগ কমিটি। গত ১৭ সেপ্টেম্বর লিগ কমিটির সর্বশেষ সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, করোনাভাইরাসের কারণে গত ফুটবল মৌসুম পরিত্যক্ত হলেও এখন বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই নতুন করে মাঠে গড়াবে ফুটবল। এই সভায় খেলোয়াড়দের পরিত্যক্ত মৌসুমের পারিশ্রমিক দেওয়ার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেন লিগ কমিটির কর্তারা। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরে ফেডারেশন কাপ দিয়ে শুরু হবে নতুন মৌসুম। তার আগে হবে খেলোয়াড়দের দলবদল কার্যক্রম।
৩ অক্টোবর বাফুফের নির্বাচন। নির্বাচনের পরই নতুন কমিটি এসে দলবদলের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে। এছাড়া খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ইস্যু নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, গত মৌসুমের পুরো পারিশ্রমিকের সঙ্গে নতুন মৌসুমের ২৫ ভাগ পারিশ্রমিক দেওয়া হবে ফুটবলারদের। নতুন মৌসুমের আগে চুক্তির সময় ৪৫ ভাগ অর্থ পাবেন খেলোয়াড়েরা। এছাড়া আগামী মৌসুম শেষ হওয়ার আগে পারিশ্রমিকের বাকি টাকা দেবে ক্লাবগুলো।
তবে এমন সিদ্ধান্ত এখনো মেনে নিতে পারছেন না খেলোয়াড়েরা। যদিও লিগ কমিটির ওই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত নয়। সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে বাফুফের নির্বাহী কমিটি। সে কারণে বলা যায় ক্লাব ও খেলোয়াড়দের মাঝে সৃষ্ট জটিলতার বল এখন বাফুফে নির্বাহী কমিটির কোর্টে। ক্লাব কর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী লিগ কমিটি সিদ্ধান্ত দেওয়ায় হতাশ ফুটবলাররা! তাই তারা নিজেদের দাবী আদায়ে নির্বাচনের পর ৫ অক্টোবর বাফুফে’র নতুন নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে বসতে চান তারা। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম মামুন বলেন,‘আমরা একটা সুষ্ঠ সমাধান চাই। তবে এমন কিছু করব না যে, কোনো একটি পক্ষ তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। বাফুফের নির্বাচনের পর নতুন কমিটির কাছে আমরা খেলোয়াড়রা যাব। সেখানে গিয়ে আমাদের দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করব। আশাকরি আলোচনার মধ্যে ভাল একটা সমাধান হবে।’ তিনি যোগ করেন, ‘এখানে আন্দোলন কিংবা ধর্মঘট করার মতো অবস্থা হয়নি। আর আমরা চাই এটা যেন কোন ইস্যু হয়ে না দাঁড়ায়।’ মামুনুলের সুরেই কথা বলছেন জাতীয় দলের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। তার কথায়, ‘যে ২৫ শতাংশ বেতন ধরা হয়েছে, তা আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। আমাদের সবার একটি করে পরিবার রয়েছে। আমরা খেলে যা আয় করি, তা দিয়ে পরিবারের খরচ চালাতে হয়। শেষ মিটিংয়ে যা হয়েছে এটা আমাদের মনের মত হয়নি। এখনো সমাধানের পথ খোলা আছে। আশাকরি সুষ্ঠ একটা সমাধান হবে।’ রানা আরো বলেন, ‘ক্লাবের মাধ্যমে আমরা লিগে খেলবো। এখানে তাদের সঙ্গে কোন বিরোধ নেই। যেহেতু বাফুফে আমাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করছে। তাই বাফুফের কাছে দাবী, আমাদের রুটি-রুজির বিষয়টা যেন বাফুফে ও ক্লাব কর্মকর্তারা দেখেন।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন