জার্মানির একটি শহরে মাইকে আজান দেয়া নিষিদ্ধ করার দাবিতে স্থানীয়দের দায়েরকৃত মামলায় জয়ী হয়েছেন মুসলিমরা। টানা পাঁচ বছরের আইনি লড়াই শেষে বুধবার মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন জার্মান আদালত। ফলে, এখন থেকে শহরটিতে মাইকে আজান দিতে আর কোনও বাধা থাকল না। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ২০১৫ সালে জার্মানির উত্তর রাইন-ওয়েস্টফালিয়া অঙ্গরাজ্যের ওর-এরকেনশিক শহরের বাসিন্দারা আজানের সময় মাইক ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। মসজিদ থেকে ৯০০ মিটার দ‚রে বসবাসকারী একটি পরিবারের অভিযোগ ছিল, আজানের শব্দে তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণœ হচ্ছে। কিন্তু পরিবারটির এ দাবি খারিজ করে দিয়েছেন জার্মান আদালত। রায় ঘোষণায় বিচারক বলেছেন, অন্যরাও ধর্মীয় চর্চা করবে এটা প্রতিটি সমাজকে অবশ্যই মানতে হবে। যতক্ষণ কাউকে ধর্মচর্চায় জোর করা হচ্ছে না, ততক্ষণ অভিযোগ জানানোর কোনও সুযোগ নেই। ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, জার্মানিতে মসজিদের ওপরও হামলার ঘটনা কম ঘটেনি। সরকারি হিসেব মতে গত বছর এরকম ১৮৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে, জার্মানিতে বসবাসরত তরুণ মুসলিমদের অনেকেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। জার্মানে জন্ম গ্রহণ করা মুসলিম নারী রানা তানরিফেরদি জানান, তারা এমনভাবে মুসলিমদের দিকে তাকায় যেনো মনে হয় আমরা এদেশের কেউ না। অনুভুতিটা এমন যে, আমি যতই জার্মানি হতে চাই না কেন মনে হবে আমি তাদের থেকে ভিন্ন। ডয়চে ভেলেকে এই তরুণী শিক্ষার্থী আরও জানান, তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা বার্লিনে। কিন্তু ছোট বেলা থেকে অনেককেই বৈষম্যের শিকার হতে দেখেছেন। তারা মুসলিমদের সমান চোখে দেখে না। তিনি জানান, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় একবার স্কুলট্রিপে স্থানীয় একটি জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাই। আমার মা সেখানকার চিকিৎসক ছিলেন। একজন শিক্ষক জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি আমাদের ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিলেন আর চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই আমার মা হেঁটে যাচ্ছিলেন, আর শিক্ষক তাকে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলে পরিচয় করে দিলেন। আল-জাজিরা, ডয়চে ভেলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন