বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফটিকছড়িতে হাটহাজারীর অবস্থা হতে দেব না-নজিবুল বশর এমপি

নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা পরিস্থিতি উত্তপ্ত

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:০৭ পিএম

হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার পর ফটিকছড়ির সব চেয়ে প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা’র মুহতামিম পদ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উদ্ভূদ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে গতকাল (২৪/০৯/২০২০ইং) বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত উপজেলা আইন শৃংখলা সভায় স্থানীয় এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ঘোষণা দিয়েছেন ‘ফটিকছড়িতে হাটহাজারী মার্কা কোন অবস্থা তৈরী হতে দেব না’।

জানা যায়, গত ২৮ মে আল-জামিয়া নছিরুল ইসলাম নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুহতামিম আল্লামা মুহাম্মদ ইদ্রিছ ইন্তিকাল করলে মুহতামিমের পদটি শুন্য হয়। তারই প্রেক্ষিতে একজন মুহতামিম নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজনীয়তা হেতু দায়িত্বপ্রাপ্ত নায়েবে মুহতামিম মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান কাসেমীকে মজলিশে শুরার সভা আহবান করার জন্য অনুরোধ জানান ওই মাদ্রাসার মোতাওয়াল্লী এবং সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফি। কিন্তু তিনি কোন উদ্যোগ নেননি বরং গড়িমসি করে সময়ক্ষেপণ করছিলেন বিধায় মাদ্রাসার শুরা কমিটির সভাপতি ও মুতাওয়াল্লীর ক্ষমতাবলে আল্লামা শফি গত ৭ জুন বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর নিজ কার্যালয়ে মজলিশে শুরার সভা আহবান করেন। উক্ত সভায় উপস্থিত শুরা সদস্যগণের সর্বসম্মতিক্রমে এবং বিশেষ পরিস্থিতির কারণে অনুপস্থিত সদস্যগণের সম্মতি নিয়ে ওই মাদ্রাসার শিক্ষা বিভাগীয় প্রধান মাওলানা মুহাম্মদ ছলিম উল্লাহকে নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুহতামিম নিযুক্ত করা হয়। এ নিয়োগ অবৈধ বলে অগ্রাহ্য করে দায়িত্বরত নায়েবে মুহতামিম মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান কাসেমী আদালতের আশ্রয় নেন। কিন্তু আদালত দু’পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে নবনিযুক্ত মুহতামিম মাওলানা ছলিম উল্লাহ মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, ৭২ মাসের বাসা ভাড়া বকেয়াসহ নানা অভিযোগে নায়েবে মুহতামিম মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমীকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দিয়ে দেন। এরপর থেকে মাওলানা ছলিম উল্লাহ এবং হাবিবুর রহমান কাসেমীর পক্ষে এলাকাবাসী বিভক্ত হয়ে পাল্টা-পাল্টি প্রচার-অপপ্রচার প্রতিযোগিতা শুরু করে। তাই সরকার মাদ্রাসার নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহারা বসিয়েছে। ইত্যবসরে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় ছাত্র অসন্তোষে আল্লামা আহমদ শফী পুত্র আনাস মাদানীর পতন এবং পরে মুহতামিম পদ থেকে আল্লামা শফীর পদত্যাগ পরবর্তী চিরবিদায়ে মূল কর্তৃত্বে অলংকৃত হয় দীর্ঘদিন নিগৃহীত হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। এতে করে আরব বসন্তের ন্যায় পুরো কওমী অঙ্গনে পরিবর্তন হাওয়া শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আল্লামা শফীর অনুসারী খ্যাত নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা ছলিম উল্লাহকে সরিয়ে জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারী খ্যাত মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমীকে ওই পদে বসাতে আজ (২৫/০৯/২০২০) জুমাবার কতিপয় এলাকাবাসী এবং বহিরাগত লোকজন মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে জড়ো হতে কর্মসূচী ঘোষণা করে। পাল্টা হিসেবে মাওলানা ছলিম উল্লাহ’র লোকজনও ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়। এমনতর পরিস্থিতিতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত ফটিকছড়ি উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় স্থানীয় এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ঘোষণা দিতে বাধ্য হন; আল্লামা শফীকে শ্রদ্ধা করতাম। ওনি চলে গেছেন। ওখানে জুনায়েদ বাবুনগরী আছেন; ওনাকেও শ্রদ্ধা করি। মুরুব্বী হিসেবে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীকেও শ্রদ্ধা করি। হাটহাজারী মাদ্রাসায় কোন গন্ডগোল হোক- আমরা চাইনি; সরকারও চায়নি। এখন দেখছি- আমার ফটিকছড়িতে হাত দিছে! আমার ফটিকছড়িতে আমি কোন কিছু করতে দেব না। আমি সবার এমপি; ওনারা দু’পক্ষেরও এমপি। আমি শফী সাহেব গ্রুপ এবং জুনায়েদ বাবুনগরী গ্রুপেরও এমপি। আমি আলিয়া মাদ্রাসা কিংবা সুন্নীদেরও এমপি। আমি সবার কথা শুনব। শুনেছি দু’গ্রুপ নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার সামনে হাজির হবে। আমার সুস্পষ্ট নির্দেশ- রাস্তায় যাকেই পাবেন; গ্রেফতার করে জেলে দেবেন। দায়-দায়িত্ব আমার। মাদ্রাসার আশ-পাশে কেউ অবস্থান নিতে পারবে না। আমি যতক্ষণ এমপি আছি; সরকারকেও চিন্তা করার দরকার নেই। সরকার হাটহাজারী মাদ্রাসার বিষয়ে স্বীকৃতি দিলে আমি শুনব; এখনো ম্যাসেজ আসেনি। যখন আসে; তখন তাদের কথা শুনব। এর আগে নয়। আর বাড়াবাড়ি করলে আমি সোজা মাদ্রাসায় তালা মেরে দেব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Abdur Rahman ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:১৯ এএম says : 0
I request both mufti habibur rahman and moulana salimullah qasemi, pls sit and solve the issuse by comprising. Do not allow present awami govt, and their ministers , M.P 's to intervene in madrasa issue. These awami govt hv no religious value, so what they do with madrasa ? They do politics, let them do outside , not inside masjid and madrasa. Pls pls do not allow media, newspaper to intervene madrasa issue. For the sake of ALLAH, save the image of madrasa in front of general public, I.e Muslims. ALLLAH knows best
Total Reply(0)
Imran ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:১৩ পিএম says : 0
ভালো বলেছেন।
Total Reply(0)
Imran ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:১৪ পিএম says : 0
ভালো বলেছেন।
Total Reply(0)
মুহাম্মদ হাফিজুররহমান ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৩৪ পিএম says : 0
কওমী মাদরাসাগুলো নিজস্ব নিয়মে স্বকীয়তা এবংস্বাতন্ত্র্য নিয়ে শত বছর ধরে চলছে। এগুলোতে কখনো কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। এমনকি যে সকল এলাকায় মাদরাসাগুলো অবস্থিত সে এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তিবর্গও কখনো এর কমিটি বা নিয়োগে হস্তক্ষেপ করেনি। কিছু সুবিধা গ্রহণ, সুবিধাগুলোর সাথে কিছু লেনদেন, দেনাপাওনা আর অনিয়ম কওমী মাদরাসাগুলোতে ছোট আকারে প্রবেশ করতে করতে এখন তা বড়ো রূপ ধারণ করেছে। যেমন বানের পানিতে ছোট একটি ফাটল এক সময় বড়ো ধ্বসের সৃষ্টি করে এবং সমাপ্তির পর্যায়ে একটি জনপদের গোটা পরিবেশকে ধ্বংস্তুপে পরিণত করে। কওমী মাদ্রাসার বাইরের হস্তক্ষেপ তাদের স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য এবং ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাকে ইতিহাস হিসেবেই কি থাকবে?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন