হত্যার দায় স্বীকার করে মিথ্যা জবানবন্দি আদায়ের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে ৪ নভেম্বর। পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে ৫ নভেম্বর।
নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রী নিশিকে অপহরণ, গণধর্ষণ এবং শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দেয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তিন কিশোর। পরবর্তীতে কথিত হত্যার শিকার স্কুলছাত্রী ৪৯ দিন পর জীবিত ফিরে আসে। এটি কেমন করে সম্ভব হলোÑ জানতে হাইকোর্টে আবেদন জানান সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকার স্কুলছাত্রী নিশি গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর ১৭ জুলাই সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা। এক মাস পর ৬ আগস্ট একই থানায় তিনি অপহরণ মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় বন্দর উপজেলার বুরুন্ডি খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২) ও তার বন্ধু বুরুন্ডি পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিবকে (১৯)। তাদের ওইদিনই গ্রেফতার করা হয়। দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার বাসিন্দা নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬)।
গত ৯ আগস্ট পুলিশ জানায়, স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয় আসামিরা। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় এ ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দিও দেন। অথচ ২৩ আগস্ট দুপুরে বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকায় সুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায় নিখোঁজ স্কুলছাত্রীকে। সে নিজে তার মাকে একটি দোকান থেকে কল করে ৪ হাজার টাকা চায়। বিস্মিত বাবা-মা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন।
পরে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে তারা থানায় হাজির হন। তাদের সঙ্গে ছিল স্কুলছাত্রীর স্বামী ইব্রাহিম। তাকে জীবিত অবস্থায় পাওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেয়া জবানবন্দিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে অ্যাডভোকেট শিশির মনির রিভিশন দায়ের করেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে শুনানি শেষে গতকাল উপরোক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন