স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে স্থায়ী বাস স্ট্যান্ড স্থাপন না করায় পথচারী ও যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ১৯৭৩ সাল থেকে বিভিন্ন সরকারি পরিত্যাক্ত জায়গা, প্রতিষ্ঠানের খোলা জায়গা, মালিকানাধীন জায়গা, পেট্রোল পাম্পসহ সড়কে গাড়ী পার্কিং করে যাত্রী সেবা দেয়া হচ্ছে। দিন দিন গাড়ীর সংখ্যা বেড়েছে। বাস টার্মিনাল না থাকায় প্রধান প্রধান সড়ক দখল করে গাড়ি পার্কিং করায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে পথচারী, যাত্রী সাধারণ ও অন্যান্য যানবাহন। এছাড়া সড়কে দাড়িয়ে ট্র্যাক, ট্র্যাকলরীতে মালামাল লোড- আনলোড করা হচ্ছে। পৌরসভা ২০১৩ সালে পূর্ব বাইপাস মোড়ে বাস স্টান্ডের জন্য ৯০ শতক জমি ক্রয় ও অধিগ্রহণ করেছে। সেখানে আজও মাটি ভরাট হয়নি। সত্তরের দশক থেকে বর্তমান পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে শহরের আব্দুল মজিদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক, মীরগঞ্জ সড়ক, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিত্যাক্ত মাঠ, কাঁঠলতলী মোড়, পূর্ব বাইপাস মোড়, খলিল পেট্রোল পাম্প এবং পশ্চিম বাইপাস মোড় আব্দুল করিম পেট্রোল পাম্প থেকে রংপুর, গাইবান্ধা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে যাত্রীবাহী বাস, নাইট কোচ, মিনি কোচ যাত্রীসেবা প্রদান করে আসছে। সড়কে দাড়িয়ে যাত্রী উঠানাম করায় পথচারীসহ ছোট-ছোট যানবাহনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে শ্রমিকরা সড়কে গাড়ী দাড় করে পানি দিয়ে পরিস্কার করায় ময়লা ও নোংরা পানি পথচারীদের জামা কাপড় নষ্ট করছে। ঢাকাগামী যাত্রী ছামিউল ইসলাম জানান, বাস স্ট্যান্ড না থাকায় সব সময় আমাদেরকে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হয়। টিকেট কেটে ব্যাগ ও মালামাল নিয়ে খোলা জায়গায় কখনো বসে কখনো দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়া যাত্রী ছাউনী এবং গণশৌচাগার না থাকায় মহিলাদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হচ্ছে। উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক সাজেদুল ইসলাম জানান, উপজেলার সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং জনদুর্ভোগ হচ্ছে সড়কে গাড়ী পার্কিং করে যাত্রী সেবা প্রদান। এ সমস্যা দেখার কেউ নেই। এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও সকলেই এ সমস্যার বিষয়টি জানেন। তবুও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। জনস্বার্থে অতি তাড়াতাড়ি বাস স্টান্ডটি চালু করা প্রযোজন। শ্রমিক সংগঠনের নেতা স্বপন কান্ত রায় জানান, ১৯৭৩ সাল থেকে এ অবস্থায় চলছে বাস পরিবহন। পৌর মেয়রের সাথে অনেকবার নিয়ে আলোচনা করেছি, সমাধান হয়নি। বাস টার্মিনাল না থাকায় সড়কে গাড়ী পার্কিং করে যাত্রী উঠানামা করা হচ্ছে। টার্মিনাল না থাকলেও পৌরসভা টোল নিচ্ছে। বাস মালিক খয়বর হোসেন মওলা জানান, বাস টার্মিনাল নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে জেলা প্রশাসক, ডিডিএলজির নিকট আবেদন ও অভিযোগ করে কোন লাভ হয়নি। নিজের দায়িত্ববোধ থেকে মেয়রকে বাস টার্মিনালটি চালু করা প্রযোজন। পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, মাটি ভরাটের কাজ চলছে। অল্প সময়ের মধ্যে বাস টার্মিনাল চালু করা হবে। ইতোমধ্যে কয়েক লাখ টাকার মাটি ভরাট করা হয়েছে। মাটি না পাওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার কাজী লুতফুল হাসান জানান, বিষয়টি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। অতিদ্রুত মেয়রের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি সড়কে গাড়ী পার্কিং করে যাত্রী সেবার বিষয়টিও নিরসন করা হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। যেহেতু বাস টার্মিনালের জমি ক্রয় এবং অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তাই অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন