শুধু রফতানির জন্য তৈরি চীনের ভিটি৪ ট্যাঙ্ক এমন একটি সময় পাকিস্তানের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক সুদৃঢ় করছে যখন এই অঞ্চল উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছে। পাকিস্তান ভিটি৪ ট্যাঙ্ক আমদানি করছে বলে জেনিস-এর খবরে বলা হয়েছে। আল-খালিদ ট্যাঙ্কের স্থলাভিষিক্ত হবে এসব ট্যাঙ্ক। আল-খালিদ ট্যাঙ্কও পাকিস্তানে রফতানির জন্য তৈরি করে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিরক্ষা সংস্থা নরিনকো। ভিটি৪-এর পারফরমেন্সে পাকিস্তান সেনাবাহিনী খুশি বলে জানিয়েছে জেনিস। স¤প্রতি ভিটি৪ ট্যাঙ্কের সামর্থ্য প্রদর্শনীতে পাকিস্তানের একজন সেনারেল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। ভিটি৪ ট্যাঙ্কের প্রধান গানটি হলো ১২৫ মিলিমিটার স্মুথবোর গান, যা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গোলা বর্ষণ করা যায়। এগুলোর মধ্যে হাই-এক্সপ্লোসিভ এন্টি-ট্যাঙ্ক, আর্মার পিয়ার্সিং স্যাবুট ও হাই এক্সপ্লেসিভ গোলা রয়েছে। এর হালে একটি ০.৫০ ক্যালিবারের রিমোট উইপন স্টেশন বসানো আছে। অনুরোধ করা হলে ভিটি৪ ট্যাঙ্কে ১২০ মিলিমিটার মেইন গানও বসানো যেতে পারে। তাহলে সহজেই ন্যাটো-স্টান্ডার্ড ক্যালিবারের গোলাও এতে ব্যবহার করা সহজ হবে। এক্সপ্লোসিভ-রিঅ্যাকটিভ আর্মার (ইআরএ) ও এ ধরনের কম্পোজিট আর্মার ছাড়াও ভিটি৪-এ রয়েছে চীনের জিএল৫ অ্যাকটিভ প্রটেকশন সিস্টেম। এই সিস্টেম আগত প্রজেক্টাইল শনাক্ত করতে পারে এবং হুমকির দিকে এক জোড়া রকেট নিক্ষেপ করতে পারে। ছুটে আসা যেকোন গোলা ধ্বংস করার জন্য এই জোড়া-রকেট যথেষ্ট বলে মনে করা হয়। জিএল৫ সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াও ভিটি৪ ট্যাঙ্ক তার তিনজন ক্রুকে পারমাণবিক, জৈবনিক ও রাসায়নিক (এনবিসি) হুমকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। অনবোর্ড ফায়ার এক্সটিংগুইশিং সিস্টেম ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা মানসম্পন্ন করা হয়েছে, যা পাকিস্তানের মতো উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য জরুরি। ভিটি৪ এমবিটি’র ডিজাইনকে চীনা প্রতিষ্ঠানটির জন্য রীতিমত ক্যু করে ফেলা বলতে হবে। আল-খালিদ এমবিটি ইউক্রেনের তৈরি ইঞ্জিন ও ট্রান্সমিশনের উপর নির্ভর করতো। কিন্তু নরিনকো সম্প‚র্ণ চীনের ডিজাইন করা ইঞ্জিন ভিটি৪-এ সংযোজন করতে সক্ষম হয়েছে। এই রফতানি সাফল্যের সঙ্গে নরিনকোর আরেকটি বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। সেটি হলো থাইল্যান্ডের কাছে ভিটি৪ অপারেটর বিক্রি। দেশটি নরিনকোর সরঞ্জাম নতুন কিনছে না। তবে এবার তারা নরিনকোর এম্ফিবিয়াস এসল্ট ভেহিকেল টাইপ-০৫ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেকোন বিচারে ভিটি৪-কে সমীহ আদায় করার মতো এমবিটি মনে হচ্ছে, বিশেষ করে ওইসব দেশের জন্য যারা অত্যন্ত দামি আমেরিকান, ইউরোপিয়ান বা রাশিয়ান ট্যাঙ্ক কিনতে পারছে না। চীনা ট্যাঙ্ক আরো অধিক উন্নত পশ্চিমা দেশেগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে পারে। যেসব দেশের বাজেট সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ভিটি৪ হতে পারে আকর্ষণীয় বিকল্প। ভিটি৪ ট্যাঙ্ক হলো সর্বশেষ ক্ষেত্র যেখানে চীন ও পাকিস্তান আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে। দুই দেশ পরস্পরের পররাষ্ট্রনীতির অবস্থানকে সমর্থন করে। তিব্বত ও তাইওয়ানের ব্যাপারে চীনের অবস্থানকে সমর্থন করে পাকিস্তান। অন্যদিকে কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তানের অবস্থানকে সমর্থন করে চীন। চীনা সমরাস্ত্রের শীর্ষ ক্রেতা পাকিস্তান। ফলে পাকিস্তানের অস্ত্রভাÐারে ভিটি৪ যোগ হওয়ায় বিস্ময়ের কিছু নেই। ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট, এসএএম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন