পৃথিবীর মজলুম মুসলিমদের পক্ষে সব সময় সরব তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। কাশ্মীর, ফিলিস্তিন, আফগানসহ যেখানে মুসলিমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেখানেই তার ভূমিকা থাকবেই। এবার দাঁড়িয়েছেন আজারবাইজানের পাশে।
পূর্ব ইউরোপে দক্ষিণ ককেশাসের নাগোর্নো-কারাবাখকে কেন্দ্র করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে কয়েকদিন ধরে তীব্র লড়াই চলছে। এই অঞ্চল নিয়ে দুটো দেশের মধ্যে এর আগেও থেকে থেকে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, সামরিক সঙ্ঘাতও হয়েছে, কিন্তু সেগুলো সবই ছিল সীমিত পরিসরে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের এই দুটো দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে শুরু হওয়া এবারের যুদ্ধ আগের সঙ্ঘাতগুলোর তুলনায় ভিন্ন। বর্তমান সংঘর্ষের মাত্রা, ধরণ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতিক্রিয়া- এসব কিছুই ওই অঞ্চলের সাম্প্রতিক কালের সব উত্তেজনাকে ছাড়িয়ে গেছে।
এদিকে দেশ দুটির মধ্যে সঙ্ঘাতে আজারবাইজানের পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। তিন দেশই মনে করে আজারবাইজানের ভূখণ্ডে আর্মেনীয় দখলদারিত্ব বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আজারবাইজানকে জোরালো সমর্থন দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান।
বৃহস্পতিবারও প্রেসিডেন্ট এরদোগান দেশটির প্রতি তার জোরালো সমর্থন পুনর্ব্যাক্ত করেছেন। তিনি বলেন, নাগার্নো কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়ার সাথে চলমান যুদ্ধে আজারবাইজানের প্রতি সর্বশক্তি নিয়ে সমর্থন অব্যাহত রাখবে তুরস্ক।
বৃহস্পতিবার রাজধানী আঙ্করায় তুরস্কের পার্লামেন্টের ১৪তম অধিবেশনের সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তিনি আরো বলেন,‘আমরা যেকোনো মূল্যে সর্বশক্তি দিয়ে আজারবাইজানি ভাইদের প্রতি হৃদয় থেকে আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবো। আমরা ‘‘এক জাতি, দুই রাষ্ট্র’’ নীতির ওপর ভিত্তি করে আজারবাইজানের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবো।’
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, আর্মেনীয়া কর্তৃক কারাবাখ দখলের মাধ্যমে এ অঞ্চলে যে সংকট শুরু হয়েছিল অবশ্যই তার অবসান ঘটাতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আর্মেনীয়াকে অবশ্যই অবিলম্বে আজারবাইজানের ভূখণ্ড ছাড়তে হবে। একমাত্র এর মাধ্যমেই এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়। কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখণ্ড হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। মূলত এ নিয়েই সংঘাতের সূত্রপাত।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘ বিবাদের জেরে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কার্যত যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। এতে এখন পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ উভয় পক্ষের শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের বেশিরভাগই আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে জানা গেছে। সূত্র : ইয়েনি শাফাক
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন