বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৫০ লাখ টাকার টেন্ডারে বাধা

ছাত্রলীগের আধিপত্যের লড়াইয়ে ফের উত্তপ্ত বিএল কলেজ

প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : বরিশাল বিএম কলেজে সংগঠনের নামধারীদের তা-বের পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ছাত্রলীগের সব কার্যক্রম স্থগিত করল মহানগর নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে একই দিনে বরিশাল এলজিইডির ৫০ লাখ টাকার কাজের দরপত্র জমাদানে বাধা দিয়ে নিজেদের পছন্দের লোককে কাজ পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করল মহানগর ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী।
গত কয়েক বছর ধরে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কতিপয় নেতাকর্মী টেন্ডারবাজিসহ নানা অনৈতিক কর্মকা-কেই নিজেদের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে সর্বসমক্ষে জাহির করছেন বলে অভিযোগ এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য।
গত বুধবার সকাল ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুটি বিবদমান গ্রুপ ত্রাস সৃষ্টি করে। পূর্বেও ব্যক্তিগত দেনা-পাওনা নিয়ে দুটি গ্রুপের গোলযোগের রেশ ধরে এ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে এক পর্যায়ে পলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি শান্ত করে। কিন্তু তার আগেই কলেজটির প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে চড়াও হয় ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। তারা ভাইস প্রিন্সিপালের সাথে দুর্ব্যবহার করা ছাড়াও কলেজ প্রিন্সিপালের অফিসসহ ক্যাম্পাসের আরো কয়েকটি বিভাগের কক্ষের বৈদ্যুতিক বাতি ভাঙচুর করে। এ সময় ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের তা-বে পুরো ক্যাম্পসে ত্রাস সৃষ্টি হয়। সন্ত্রাসীদের ধাওয়ায় কলেজটির দুই ছাত্রী পু-ুরে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও আরো ৩ ছাত্র আহত হয় এ তা-বের ঘটনায়। রাতে একপক্ষ অপরপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও দায়েরে করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষও যথারীতি আরেকটি তদন্ত কমিট গঠন করেছেন।
অপরদিকে একই দিনে বরিশালে মহানগর ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে স্থানীয় এলজিইডি অফিসে এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট গ্রামীণ অবকাঠামো প্রকল্পের ৫০ লক্ষাধিক টাকার কাজের দরপত্র জমাদানে সাধারণ ঠিকাদারদের বাধাদানের অভিযোগ উঠেছে। ঐসব কাজের জন্য মোট ১০৮টি টেন্ডার ডকুমেন্ট বিক্রি হলেও টেন্ডারবাজদের ভয়ে সাধারণ ঠিকাদাররা তা জমা দিতে সাহস করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এ ঘটনার প্রতিবাদ করারও সাহস ছিল না কারো। ফলে মুখ খোলেননি সাধারণ ঠিকাদার। তবে এলজিইডির দায়িত্বশীল মহল তাদের অফিস ক্যাম্পাসে টেন্ডার জামাদানে কোন অপ্রীতিকতর ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন।
বরিশালে বিভিন্ন অফিসে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজির অভিযোগ গত কয়েক বছরের প্রতিষ্ঠিত সত্য। পাশাপাশি নগরীর বিএম কলেজ, মেডিকেল কলেজ ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আধিপত্য কায়েমের জন্য গত কয়েক বছর ধরে নিজেদের মধ্যেই লড়াই করছে ছাত্রলীগের কতিপয় কর্মী। এদের পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে আরেকটি মহল। বরিশালে মূল দলের মত জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগও অনেকটা দ্বিধাবিভক্ত। আবার মহানগর ছাত্র লীগের মধ্যেও আধিপত্যের  প্রকাশ্য ও নীরব লড়াইয়ে জনজীবনে বিড়ম্বনা ও অস্বস্তি সৃষ্টি হচ্ছে  প্রায়সই।
কিন্তু এসব পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোন পথ খুজছেন না মূল দলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। মূলত মূল দলেই এখন প্রত্যক্ষ ও প্রকাশ্য বিভাজনের ফলে অভিভাবকহীন বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এ বক্তব্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন