ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বন্ধুর সাথে বেড়াতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের কবলে পড়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে দুই বান্ধুবী। ঘটনার প্রায় ৩৬ দিন পর ভিডিও ফাঁস হলে প্রশাসনের নজরে আসে বিষয়টি। পরে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতাসহ ৪ জনকে আটক করে পুলিশ।
মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে আশুলিয়ার ভাদাইল ও নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলো- সারুফ, জাকির, রাকিব ও ডায়মন আলামিন। তারা ভাদাইল এলাকায় বসবাস করে। দলনেতা সারুফকে খুলনা থেকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে রাকিব ভাদাইল এলাকায় মাঝে মধ্যে শাক বিক্রি করে। অন্যরা শিক্ষার্থী। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
বুধবার আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, গত ৩০ আগষ্ট আশুলিয়ার ভাদাইলের পবনারটেক এলাকায় প্রতিবেশি দুই তরুণকে নিয়ে দুই কিশোরী বান্ধবী পাশের গুলিয়ারচক এলাকায় বেড়াতে যায়। সেখানে কিশোর গ্যাং সারুফের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন কিশোরীদের সঙ্গে থাকা দুই তরুণকে বেদড়ক মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে দুই কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। পরে বিষয়টি সারুফের বাবা আকরাম হোসেন টাকা বিনিময়ে চামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এদিকে তাদের হুমকিতে ভয়ে এক কিশোরী নিজ গ্রামে চলে যায়।
কিশোরীদের সাথে বেড়াতে যাওয়া তরুন ইসরাফিল জানায়, আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় ভাড়া থেকে চুল কারখানায় কাজ করতো তাদের দুই বান্ধবী। ৩৬ দিন আগে তাদের নিয়ে ভাদাইলের গুলিয়ারচক এলাকায় বেড়াতে যাই। এসময় তাদের চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেলে ১০ থেকে ১২ জন ছেলে। মেয়েদের সাথে কি সম্পর্ক জানতে চায়। তখন তাদের আত্বীয় পরিচয় দিলেও তারা কোন কিছু শুনতে না চেয়ে এক পর্যায়ে মারধর করে আমাদের দুই জনকে তাড়িয়ে দেয় ও কাউকে এই ঘটনা বললে মেরে ফেরার হুমকি দেয়। তবে কিশোরীদের আটকে রাখে। পরে কি হয়েছে তাদের জানতে পারেনি। তবে ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনার মধ্য দিয়ে বিষয়টি জানতে পারি।
আটক জাকিরের বাবা আনসার আলী সাংবাদিকদের জানায়, সারুফের বাবা আকরাম হোসেনের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ছেলে জাকিরসহ কয়েক ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত। বিষয়টি চামাচাপা দিতে আমার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা দেই আকরাম হোসেনকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে দেয় সারুফ। তার সহযোগিতায় জাকির, রাবিক, আলামিন, ডায়মন আলামিন, রেদওয়ান ও জিদানসহ আরও কয়েকজন এ ঘটনা জড়িত।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী এক কিশোরীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে ও সেই হামলার শিকার দুই তরুণকে শনাক্ত করেছে। তবে এক কিশোরী না দুইজনই ধর্ষণের শিকার হয়েছে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
তার ধারনা, কিশোর গ্যাং এর নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধের জের ধরে ভিডিও ফাঁস করে দেয়া হয়। সেই ঘটনার স‚ত্র ধরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে আটক করেছে। তবে ভিকটিম ও তাদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে আইনত ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়া চলছে। এ ঘটনা সাথে জড়িত বাকীদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন