সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য নির্মিতব্য ৬০টি মাল্টিপারপোস এক্সেসিবল রেসকিউ বোটের কীল লেয়িং অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড (ডিইডব্লিউ)এর কনস্ট্রাকসন সাইটে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এমপি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী বোটসমূহের নির্মাণকাজের সূচনা করেন। গত ২১ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সাথে ডিইডব্লিউ লি. প্রতিটি বোট ৪৫ লাখ টাকা করে সর্বমোট ২৭ কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত করে।
প্রত্যেকটি বোট আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ক্লাসিফাইড মেরিন গ্রেড মাইল্ড স্টিল দ্বারা নির্মাণ করা হবে। বোটটিতে থাকবে ব্র্যান্ড নিউ মেরিন ডিজেল ইঞ্জিন, উন্নত মানের ফিটিং এবং ইলেকট্রিক আইটেম। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য থাকবে সোলার প্যানেল। লাইফ সেভিং ইকুইপমেন্ট হিসেবে প্রত্যেকটি বোটে পর্যাপ্ত সংখ্যকলাইফ জ্যাকেট ও লাইফ বয়া থাকবে। বোটগুলি দ্বারা সারাদেশে যে কোন দুর্যোগ মুহূর্তে অতি অল্প সময়ে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা সক্ষম হবে। এই ৬০টি বোট আধুনিক বোট বিধায় বিভিন্ন নদী পথে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বন্যা দুর্গতদের সেবায় যাতায়াত করতে সক্ষম হবে। ৬০টি বোট আগামী ৩ বছরে ৩টি ধাপে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ দুরদর্শিতার কারণে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক পর্যায়ে পরিণত হয়েছে এবং দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন সরকারি সংস্থার নিকট সফলতার সাথে বোট/ জাহাজ সরবরাহ করতে সক্ষম হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে ১৯২৬ সালে ডিইডব্লিউ লি. প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত এটি ব্রিটিশ কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হতো। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর এটি ইওউঈ এবং পরে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে চলে আসে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ডিইডব্লিউ লি. স্বাধীনতার পর বিভিন্ন কারণে লাভের মুখ দেখতে পারেনি। ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তরের পর এটি একটি লাভজনক শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঐতিহ্যবাহী এই ইয়ার্ডে নির্মাণ করা হয় দেশের প্রথম সামরিক জাহাজ বিএনএস পাবনা। তার একে একে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য আরো চারটি জাহাজ নির্মিত হয় যেগুলো পাবনা ক্লাস নামে পরিচিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন