বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সীমান্ত পিলারে বাংলাদেশের নাম

বিজিবির সংবাদ সম্মেলন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার সীমান্ত পিলার থেকে পাকিস্তানের নাম মুছে দিয়ে বাংলাদেশের নাম লেখার কাজ সম্পন্ন করেছে বিজিবি। ২০১৯ সাল েেথকে এ বছরের শুরু পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ২৪০টি পিলারের গায়ে লেখা ‘পিএকে’ বা পাকিস্তান লেখা মুছে ‘বিডি’ বা ‘বাংলাদেশ’ লেখা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বিজিব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিজিবির পরিচালক (অপারেশন্স) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রতিবেশি দুই দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটারের সীমান্তে ১০ হাজার ২৪০টি সীমানা পিলার রয়েছে। গত ৪৯ বছর ধরে এই পিলারগুলোর গায়ে পাক বা পাকিস্তান লেখা ছিল। কিন্তু আমাদের বাহিনীর দেশপ্রেমী সদস্যরা এগুলোকে ‘বিডি’ বা ‘বাংলাদেশ’-এ কনভার্ট করার বিষয়টি আমাদের বিবেচনা করতে বলেন। পরে ডিজি’র নির্দেশনা মোতাবেক বাহিনীর প্রক্রিয়া অনুযায়ী এগুলো বদলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান জানান, পিলারের গায়ের নাম পরিবর্তনের কাজটি বিজিবি সদস্যরা করেছেন। বিভিন্ন দুর্গম স্থানে নিজেদের ঘারে করে সিমেন্ট-বালু নিয়ে নিজেদের পরিশ্রমে সীমান্তে সব পিলারে এ লেখা বসিয়েছেন। পাশাপাশি পার্বত্য সীমান্ত এলাকার ৮১৫কিলো মিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩১৭কিলো মিটার বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সীমান্তে ৭৩টি নতুন আধুনিক কম্পোজিট বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) নির্মাণ করার অনুমোদন গ্রহণ করা হয়েছে।
সীমান্তে বন্দুকযুদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু বিজিবি নয়, কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটাতে চায় না। আমাদের একমাত্র টার্গেট থাকে অপরাধীকে গ্রেফতার করা। গ্রেফতারের সময় অনেক অপরাধী আমাদের আক্রমণ করে, গুলি ছোড়ে, তখন আত্মরক্ষার্থে এবং সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বিএসএফের গুলিতে কতজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, সংখ্যাটি নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে রয়েছে। স¤প্রতি বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিএসএফের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে আপনাদের জবাব দিয়েছেন। এর পর থেকে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য সীমান্ত দিয়েই মাদক প্রবেশ করছে, বিজিবি তৎপর হলে বিষয়টি ঠেকানো যেত- এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা যিনি বলেছে, এটা তার ব্যক্তিগত মতামত বা অভিমত হতে পারে। এটা পুলিশ সদরদপ্তরের বক্তব্য না। আমরা প্রায়ই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বা সরাসরি পুলিশ সদরদপ্তরের সঙ্গে তথ্য বা মতামত শেয়ার করি। কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো সাজেশন আসলে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করা হবে। দেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা হাজির রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে যেই মাদকই আসছে আমরা সেগুলো জব্দ করছি।
মাদক ব্যবসায় বিজিবি সদস্যদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, রাষ্ট্রীয় আইনের পাশাপাশি বিজিবির নিজস্ব আইন রয়েছে। আমরা সেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দায়িত্বপালন করি। তাছাড়া বিজিবি অনেকবার রিফর্মও করা হয়েছে। এটা বলতে পারি যে, বর্তমানে সীমান্তে মাদকের সঙ্গে বিজিবির সম্পৃক্ততা জিরো।
মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্তে সে দেশের সেনাবাহিনীকে তাদের সশস্ত্র উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে দেখা গেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের কতটুকু উপস্থিতি থাকা প্রয়োজন, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা নিশ্চয়ই আরও ভালো জানেন। আমাদের সীমান্ত রক্ষার জন্য যতটুকু দরকার, ঠিক ততো পরিমাণ বিজিবি সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সীমান্তে আমাদের লোকজন সতর্ক রয়েছে। দায়িত্বশীলদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিজিবির বর্তমানে জনবল বেড়েছে, আমাদের অংশে যে দায়িত্ব রয়েছে, তার সর্বোচ্চটাই আমরা দিচ্ছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন