প্রশ্ন : দোয়া ও মোনাজাতের সময় মহানবী সা. এর উছিলা দেওয়া কি নিষিদ্ধ। আমরা এভাবে দোয়া করে অভ্যস্থ। এখন টিভিতে কিছু আলেম নবীর উছিলা দেওয়াকে হারাম বলছেন। আমাদের মনে শান্তি আসছেনা। শরীয়ত কি বলে?
উত্তর : যারা দোয়া মোনাজাতে মহানবী সা. এর উছিলা দেওয়া হারাম বলেন, সম্ভবত তারা একটি ভুল আকীদাকে প্রতিহত করার জন্য বলে থাকেন। যা আমাদের সমাজে নেই বললেই চলে। আমাদের মাঝে নবী করিম সা. এর ওপর দুরুদ ও সালাম পাঠ করা দোয়ার প্রাণ। এক হাদীসে আছে, জনৈক সাহাবী প্রশ্ন করেন, হে নবী আমি কি আমার দোয়ার চারভাগের একভাগ আপনার দুরুদ পড়বো? নবীজি সা. বললেন, পড়তে পারো। সাহাবী বললেন, তিনভাগের একভাগ করবো? নবীজি বললেন, পারো। সাহাবী বললেন, অর্ধেক দুরুদ পড়তে পারবো? নবীজি বললেন, সেটাও পারো। সবশেষে সাহাবী বললেন, আমি কি আমার দোয়ার সবটুকুই শুধু দুরুদ পাঠ করেই সারবো? নবী করিম সা. বললেন, এমন করলেও তোমার দোয়া হয়ে যাবে। আমার দুরুদ পড়ার অর্থ আল্লাহর কাছে তোমাদের সব চাওয়া পাওয়া পৌঁছে যাওয়া। অন্য হাদীসে আছে, সকল ইবাদত প্রথম আকাশে আটকে থাকে। যখন দুরুদ পড়া হয় তখন তা আল্লাহর নিকট পৌঁছে। নবী করিম সা. এর দোহাই দিয়ে দোয়া করার ঘটনা সাহাবীদের জীবনে প্রচুর পাওয়া যায়। তার চেহারা মোবারকের উছিলা দিয়ে সাহাবীরা বৃষ্টি কামনা করেছিলেন। এক অন্ধ সাহাবী নবী করিম সা. এর পবিত্র চেহারা মোবারকে উছিলা দিয়ে দোয়া করে নিজের দৃষ্টি শক্তি ফিরে পান। একবার মদীনায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে লোকজন হযরত আয়েশা রা. এর কাছে গিয়ে উপায় খুঁজতে থাকে। একসময় খলিফা ওমরও (রা.) সেখানে যান। হযরত আয়েশা তখন বলেন, হে ওমর, আপনি রাসূল সা. এর রওজা পাকের জানালাটি খুলে দিন। আকাশ দেখা যাক। এরপর তার উছিলা দিয়ে আল্লাহর নিকট বৃষ্টি কামনা করুন। হযরত ওমর রা. তাই করলেন এবং মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষিত হলো। এটাকে আমরা বলবো, দুরুদের বরকত। যারা ‘হারাম’ বলেন, তারা কোন কাজটিকে হারাম বলেন, কোন উছিলাটিকে হারাম বলেন, কিসের ভিত্তিতে বলেন, তা ভালোভাবে না জেনে আমরা বুঝতে পারবো না। তাদের দাবীর পক্ষেও কোনো যুক্তি থাকতে পারে। তবে আপনারা যেভাবে দুরুদসহ, নবী করিম সা. এর উছিলাসহ দোয়া করতেন, এখনও সেভাবে করতে পারবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন