বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গঠনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে : ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২০, ৭:৫১ পিএম

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, জাপানের সহায়তায় ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গঠনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে । তিনি বলেন, ৩ ধাপে আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশকে জাপানের মত ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে । প্রতিমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন । বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্ভাব্য ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু ভূমিকম্প নিয়ে আমরা খুব বেশি কাজ করতে পারিনি। তবে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা, ভূমিকম্প পরবর্তীতে উদ্ধার কাজ- এগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা-সেমিনার করেছি। ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গঠন করতে আমরা এতো দিন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি।’ জাপান একটি ভূমিকম্প প্রবণ রাষ্ট্র ছিল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে কোনো ভবন ধসের সংবাদ এখন আর পাওয়া যায় না। সেখানে প্রতিটি ভবন ভূমিকম্প সহনীয় করে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে ১০ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্পে ৭০তলার ভবন টিকে আছে। তাদের ভবনগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে ভূমিকম্পে নষ্ট হবে না।’ জাপানের সাথে কয়েক দফা আলোচনার পর বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় করতে তারা তিন ধাপে ৫০ বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

এনামুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের সকল স্থাপনা ভূমিকম্প সহনীয় করতে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা দেবে জাপান । আমরা সে কাজটি শুরু করেছি। এ কাজটি শুরু করে দিতে পারলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম ভূমিকম্প সহনীয় নিরাপদ রাষ্ট্র পাবে।’তিনি বলেন,‘প্রথম ধাপে পুরান ঢাকার মতো দেশের যে সমস্ত জায়গায় অবকাঠামো আছে সেগুলোকে ডিমোলিশ করা হবে এবং সেখানে নতুন ডিজাইন করে ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণ করে উপকারভোগীদের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হবে। এটার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেবে জাপান।’তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপে হাইরাইজ ভবনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে, এগুলো ভূমিকম্প সহনীয় না হলে রেক্টোফিটিংয়ের মাধ্যমে এগুলো স্ট্রেনদেনিং করা হবে। যেটা জাপান করেছে।’

‘তৃতীয় ধাপে জাপান সরকার ইঞ্জিনিয়ার এবং আর্কিটেকদের প্রশিক্ষণ দেবেন, যাতে ১০ রিখটার স্কেলকে ল্যান্ডমার্ক ধরে নতুন যে ভবন হবে সেগুলো ডিজাইন করা হবে’ বলেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তিন ধাপের এই কাজের জন্য ফোকাল পয়েন্ট নির্বাচিত করা হয়েছে। করোনার কারণে জাইকার সব সদস্য দেশে চলে গেছে। তারা আসলে প্রথমে সমীক্ষা এবং পরে কাজ শুরু হবে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পুরান ঢাকার যে ভবনগুলোর প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্য আছে সেগুলো যদি রেট্রোফিটিং (পূর্বে নির্মিত বিল্ডিং বা স্ট্রাকচারে নুতন কিছু যোগ করে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া) করে ভূমিকম্প সহনীয় করা যায় তাহলে ব্যবস্থা নেবেন তারা। আর কোনোভাবে যদি রেট্রোফিটিং করা না যায় এবং জীবনের ঝুঁকি থাকে তাহলে তারা আমাদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন’ ।

কবে নাগাদ এই কাজ শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমীক্ষার পর তাদের সাথে আর্থিক ও কারিগরি বিষয়ে চুক্তি হবে এবং তারপর কাজ শুরু হবে। ভূমিকম্পের আগাম সতর্কবার্তা দেয়ার বিষয়টি পৃথিবীতে উন্নতি লাভ করেনি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চীন ২০ সেকেন্ড আগে পূর্বাভাস দিলেও এটা খুব বেশি কার্যকর নয়। এটা নিয়ে সারা বিশ্বে কাজ চলছে। ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে উদ্ধারকাজের জন্য দুই হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

দেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে ২০০ থেকে ২৫০ জন মানুষ মারা যায় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যার অধিকাংশই হাওর অঞ্চলে। আমরা বজ্রপাতের পূর্বাভাস কেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নিয়েছি। এটার কাজ চলছে এবং যন্ত্রপাতি আসলে ৪০ মিনিট আগে সংকেত দেয়া হবে। সংকেত দেয়ার পর তারা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে সেজন্য হাওরসহ বজ্রপাত প্রবণ এলাকাগুলোতে একতলা বিশিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন