সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে লেবাননে গিয়ে অকাল মৃত্যুর শিকার হয়েছে শান্তা ইসলাম নামে বাংলাদেশের এক যুবতী। তার বাড়ি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার গীর্জাপাড়া গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত বাচ্চু মিয়া এবং মায়ের নাম হামিদা বেগম। শান্তার লাশ এখনো বৈরুতের একটি হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। টাকার অভাবে তার মা হামিদা বেগম শান্তার লাশ দেশে আনতে পারছে না। শান্তার মৃত্যুর খবরে মুষড়ে পড়েছে তার মাসহ গোটা পরিবারের সদস্যরা। মা হামিদা বেগমের আহাজারিতে গীর্জাপাড়ার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। জানা গেছে, শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের গীর্জাপাড়ার মৃত বাচ্চু মিয়ার কন্যা শান্তা ইসলাম মায়ের সংসারের অভাব দূর করার জন্য চাকরি খুঁজতে থাকে। এ অবস্থায় এলাকার একটি দালাল চক্র তাকে ২০১৩ সালে বিদেশে চাকরি দেয়ার নামে প্ররোচিত করে লেবাননের বৈরুতে পাচার করে দেয়। এ অবস্থায় সে দীর্ঘ ২ বছর একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে পালিয়ে চাকরি করে কিছু টাকা যোগাড় করে। কিন্তু এরই মধ্যে সে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে কোম্পানির চাকরিটি চলে যায়। পালিয়ে পালিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে জানতে পারে যে তার লিভার ক্যান্সার হয়েছে।
প্রবাসী সুশীল সমাজের সহ-সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজাদ, প্রাক্তন প্রধান উপদেষ্টা মো. আব্দুল্লাহ তালুকদার। একপর্যায়ে গত ৬ আগস্ট শনিবার শান্তা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানকার গ্রীনবাংলা স্পোর্টি ক্লাবের ম্যানেজার জালাল বেপারীর সহযোগিতায় বৈরুত জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয় শান্তা ইসলাম। এরই মধ্যে ঘটনাটি সেখানকার বাংলাদেশী দূতাবাসকে জানালে দূতাবাসের কর্মকর্তারা বৈধ কাগজপত্রের জন্য টাকা চায়। শান্তা তার দীর্ঘ দিনের জমানো ৭শ ডলার দূতাবাসে জমা দেয়। কিন্তু গত ৯ আগস্ট বৈরুতের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। শান্তার মৃত্যুর পর তার লাশ বৈরুত হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। ভিসা জটিলতার কারণে তার লাশ দেশে পাঠাতে পারছে না প্রবাসীরা। এ অবস্থায় শান্তার মা হামিদা বেগম তার কন্যার লাশ দেশে আনার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। এব্যাপারে শান্তার ভাই মো. বাতেন মিয়া ও আত্মীয়-স্বজন শিবপুরের এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার সাথে যোগাযোগ করেছেন। তিনি শান্তার লাশ দেশে আনার জন্য দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলে জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন