শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

এতিম দশায় চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়াম : মশার খামার?

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

১৯৫৫ সালে নির্মাণ হয়েছিল নিয়াজ স্টেডিয়াম। তৎকালীন জেলা প্রশাসক নিয়াজ মোহাম্মদ এর প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীতে স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয় এমএ আজিজের নামে। এ স্টেডিয়ামকে ঘিরে তৈরি হয় ক্রীড়াবিদ তৈরির কারখানা আউটার স্টেডিয়াম। এখান থেকে দেশসেরা অনেক ক্রীড়াবিদের জন্ম।
জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, আকরাম খান, নুরুল আবেদীন নোবেল, ফজলে রাব্বী রুবেল, নাফিস ইকবাল, আফতাব আহমেদ, নাজিম উদ্দিন, তামিম ইকবালের মতো ক্রিকেটাররা এ মাঠে খেলে তাদের খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন। সাবেক জাতীয় ফুটবলার আশীষ ভদ্রও এ মাঠে খেলে গেছেন। স্টার যুব টুর্নামেন্ট এবং স্টার সামার টুর্নামেন্টও এ মাঠে আয়োজন করা হতো। মাঠের চারিদিকে প্রচুর দর্শক খেলা উপভোগ করতো। কলকাতা ইস্ট বেঙ্গল টিমও খেলে গিয়েছিল এ মাঠে।
কালের বিবর্তনে যেখানে আউটার স্টেডিয়াম আরো স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার কথা, সেখানে এখন তা একেবারে খেলার অনুপযোগী। এটি দেখার দায়িত্ব সিজেকেএস’র হলে এ ব্যাপারে তারা নীরব। চারপাশের সবকিছু দৃষ্টিনন্দন কিন্তু মাঠের অবস্থা একেবারেই নাজুক। এতিম দশায় চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়াম ডোবায় পরিণত হয়েছে। গত কয়েক বছরে আউটার স্টেডিয়ামের আশপাশের পরিবেশে যে পরিবর্তন এসেছে তার ছিটেফোঁটাও পড়েনি মাঠে।
মাঠটিকে খেলার উপযোগী করার দায়িত্ব ছিল সিজেকেএস’র। কিন্তু কর্তা-ব্যক্তিরাও তা করতে পারেননি। ফলে ঐতিহ্যবাহী আউটার স্টেডিয়ামের মাঠটি অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। ময়লাপানিসহ জঞ্জালে পরিণত হয়েছে মাঠটি। জমে থাকা পানিতে সৃষ্টি হচ্ছে মশা।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এবং সিজেকেএস’র সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন আউটার স্টেডিয়াম এলাকাকে দৃষ্টিনন্দন স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন এবং মাঠের কাজও শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়রের মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে মাঠ সংস্কার অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
যদিও এ আউটার স্টেডিয়ামকে খেলার উপযোগী করতে বিভিন্ন সময় নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়। শিশু-কিশোরদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। করোনায় দীর্ঘ কয়েক মাসের বেশি সময় ঘরবন্দি হয়ে থাকা শিশু-কিশোররা নেমে পড়েছে মাঠে। যে যেদিক পারছে সেদিকেই ছুটছে খেলার জন্য। খেলতে পারলেই তারা সুস্থ থাকবে, কিন্তু কোথায় তারা খেলবে।
সিটি প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে বালু ফেলে খেলার উপযোগী করে দিয়েছেন। এরপর সকাল-বিকাল অনেকেই সেই মাঠে খেলছে। এতে সবাই খুশি। আউটার স্টেডিয়ামের মাঠটির ব্যাপারেও তিনি যদি উদ্যোগী হয়ে বালু ও মাটি ফেলে সমতল করে দেন তাহলে শিশু-কিশোরসহ অনেকেই এখানে খেলতে পারবে। তবে অনেকে বলছেন, মাঠটি সিজেকেএস’র অধীনে। বর্তমানে সিজেকেএস বেশ স্বচ্ছল। আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে তাদের। তারাই পারে এ মাঠ সংস্কার করতে। এছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অবকাঠামো উন্নয়নের নানা প্রকল্প রয়েছে।
আউটার স্টেডিয়ামের একপাশের সুইমিং পুলটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদই করে দিয়েছে। সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন মাঠ থেকে হয়েছিলেন মেয়র। বর্তমানে তিনি সিজেকেএস’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও আছেন। তিনি স্টেডিয়াম এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। তৈরি করেছেন একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদও। খেলাধুলার স্বার্থে আউটার স্টেডিয়ামের মাঠের সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য নিয়েছিলেন অনেক পরিকল্পনা। কিন্তু তা তিনি করতে পারেননি। তারপরও ক্রীড়ামোদীদের প্রত্যাশা, আউটার স্টেডিয়ামের মাঠটি আবার খেলার উপযোগী হোক। মুখরিত হোক শিশু-কিশোরদের পদচারণায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন