শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

এবার পাটের ভালো মূল্য পেয়ে চাষিরা খুশি

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২০, ৬:০০ পিএম

এবার চাষিরা পাটের মূল্য খুবই ভালো পেয়েছেন। এ কারণে তারা রয়েছেন খোশমেজাজে। পাটচাষি ফরিদপুরের নগরকান্দার আলতাফ হোসেনের কথা ‘পাটের দাম এবার গত কয়েকবছরের চেয়ে বলা যায় দ্বিগুণ। কদর ও দাম বেড়েছে পাটকাঠিরও। পাট চাষিদের কথা এই অবস্থা যদি থাকে তবে অচিরেই আগের মতো স্বর্ণযুগ ফিরবে সোনালি আঁশে। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারি রাখতে হবে। একথা চাষি, বিপনন কর্মকর্তা ও মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদেরও।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল মুঈদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, চলতি মৌসুমে সারাদেশে ৭লাখ ২৭হাজার হেক্টর আবাদ হয়। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭০লাখ বেল। তার কথা এবার পাটের উৎপাদন যেমন আশানুরূপ হয়েছে। চাষিরা মূল্যও পাচ্ছেন ভালো।

কৃষি বিপনন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি বছরে পাটে সর্বোচ্চ মুনাফা ঘরে তুলতে পেরেছেন চাষিরা। বিঘা প্রতি পাট চাষে এবার কৃষকের দ্বিগুণ লাভ হয়েছে। পাটের উৎপাদন খরচ নির্ণয়ে দেখা গেছে, এক বিঘা বা ৩৩ শতক জমিতে পাট উৎপাদন করতে কৃষকের ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ পড়েছে। গড় উৎপাদন বিঘাপ্রতি ১২মণ হওয়ায় এবং মূল্য বেশি পাওয়ায় গত কয়েকবছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ লাভ হয়েছে চাষিদের। বর্তমানে বাজারে ২হাজার ৩শ’ থেকে শুরু করে ৩হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে।
চাষিদের কথা, বেশ কিছু দিন পাটে একেবারেই লাভ হত না। তাই চাষে আগ্রহ হারিয়ে যায়। দাম ভালো হওয়ায় লাভের দেখা মিলছে বিধায় আবার আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তাদের কথা, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর পাটের ফলন হয়েছে আশানারুপ। দামও ভালো মিলছে। যশোর সদরের শেখহাটির ঈসমাইল হোসেন জানান, এক বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। সেখান থেকে ১০ মণ পাটের ফলন পেয়েছেন। তিনি জানান, বাজারে তুলে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৫শ’টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এছাড়াও টাকার পাটকাঠি বিক্রি করেছেন ৬ হাজার। ঈসমাইল হোসেন বললেন, সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে পাটের আবাদে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১১ হাজার টাকা।

সুত্র জানায়, দেশে রাষ্ট্রায়াত্ব¡ ও প্রাইভেট মিলে ১শ’৮২টি জুট মিলে আনুমানিক ৫০ লাখ বেল পাটের চাহিদা রয়েছে। আরো বেশ কয়েক লাখ বেল জুট মিলের বাইরেও স্থানীয়ভাবে দড়ি তৈরীসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের কথা, সম্ভাবনাময় ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম মাধ্যম কৃষির এই খাতটির দিকে সরকার বিশেষ নজর দেয়ায় হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসছে। পাট উৎপাদন বেশী হওয়ায় পাটকলগুলো সহজে পর্যাপ্ত পাট হাতে পাচ্ছে। জুট মিলের উৎপাদিত চট, সুতা, কার্পেট ও বস্তা রফতানী করে যথেষ্ট সুগম হয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ।
ধানসহ অন্যান্য ফসলের মতো সার্বক্ষণিক নজরদারী ও যতœ নিতে হয় না পাটচাষীদের। আবাদ খরচও তুলনামূলক কম। মাঠপর্যাযের কৃষি কর্মকর্তা ও পাটচাষীদের বক্তব্য, সোনালী আঁশের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তা টিকিয়ে রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারের সংশ্লি¬ষ্ট বিভাগকে। তাছাড়া যে কোন ফসলের প্রাণ হচ্ছে বীজ। সারা দেশে ৫ সহস্রাধিক মেট্রিক টন পাটবীজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বিএডিসি’র বীজ মাত্র ১হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন। বাকি চাহিদা পুরণ করতে হচ্ছে ভারত থেকে। বীজ নিয়ে প্রতিটি মৌসুমে নানামুখী খেলা হয়। মাঠেরচিত্রে কিন্তু পাটবীজ এবং পাট উৎপাদন ও বিপনন ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন