বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হাত-পা বেঁধে গণধর্ষণ

দিনাজপুর বাড়ি থেকে তুলে স্কুলছাত্রীসহ শিকার আরো ৩ : আটক ৭

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

পটুয়াখালীতে হাত পা বেঁধে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গতকাল দুপুরে ওই গৃহবধূর মেডিক্যাল চেকআপ ও আলামত সংগ্রহ করে ফরেনসিক টেস্টের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিশ^নাথে চাচার হাতে ভাতিজি ধর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দিনাজপুর বাড়ি থেকে তুলে স্কুলছাত্রী ও গাজীপুরে এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার সদরে ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনসহ বিভিন্ন ধর্ষণ মামলায় ৬ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে পটুয়াখালীর রাঙ্গাঁবালী উপজেলার চর মোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেটের ধারভাঙ্গা গ্রামে এক গৃহবধূকে হাত পা বেঁধে গণধর্ষনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ এঘটনায় গতকাল সকালে এ ঘটনায় একই এলাকার শাকিব (২২) ও দুপুর ১২ টার দিকে পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার সীমান্তবর্তী চর চর কুকরীমুকরী থেকে আলহাদী (২৫) নামে এক যুবককে আটক করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙ্গাবালীর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহমেদ। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই গৃহবধূর বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই মরিয়ম বেগম (৩০) কে উদ্ধার করে গলাচিপা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মরিয়ম বেগমের স্বামী কৃষক জলিল সরদার গতকাল দুপুরে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় আমি সুøইজ বাজারে যাই। রাত সাড়ে আটটার দিকে তার বাড়ির মোবাইল থেকে তাকে একটি ফোন দিয়ে স্ত্রী চিৎকার করেন। পরবর্তীতে তার ঐ বাড়ির মোবাইলটি বন্ধ পাই। তিনি আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির এসে তার স্ত্রীকে বিধ্বস্থ অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তিনি স্থানীয় লোকজনসহ চৌকিদারকে খবর দেন। তিনি অভিযোগ করেন আমার স্ত্রীকে শাকিব, আরিফ ও আলহাদি মিলে ঘরের ভিতর হাত পা বেঁধে রেখে ধর্ষণ করেছে। এ সময় তারা বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণলংকার নিয়ে যান।এ সময় তার ৯ বছরের ছেলে ও ৭ বছরের মেয়ে শিশু সন্তান ঘুমানো রাতেই তাকে চিকিৎসার জন্য গলাচিপা হাসপাতালে চিকিৎসার পর ভোর রাতে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। জলিল সর্দার জানান, তার সাথে শাকিলের পরিবারের সাথে পূর্ব বিরোধ আছে।

রাঙ্গাঁবালী থানার ওসি আলী আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে আছি। মরিয়ম বেগমকে মারধর করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হতে পেরেছি। অভিযোগ এখনও পাইনি। তবে ভিকটিমের পরীক্ষার পর বলা যাবে আসলে ঘটনাটি ধর্ষণ না কি মারধরের ঘটনা। এদিকে মরিয়ম বেগমের পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গতকাল দুপুরে মেডিক্যাল চেকআপ ও আলামত সংগ্রহ করে ফরেনসিক টেস্টের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক সিনিয়র কনসালটেন্ট গাইনী ডা. ফেরদৌসি আখতার।

কক্সবাজার ব্যুরো জানান, কক্সবাজার সদরে ধর্ষণের শিকার এক শিশুকে উদ্ধার করে ও ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে আটক করে র‌্যাব-৭ এর সদস্যরা। র‌্যাব জানান, কক্সবাজার সদর থানাধীন কস্তুরাঘাট ও খুরুশকুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি মেয়ে শিশুকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি ও তার অপর তিন সহযোগীকে আটক এবং ওই মেয়ে শিশুকে উদ্ধার করে।

র‌্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কিছুদিন পূর্বে ভিকটিমের মা র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামে অভিযোগ করে জানায়, মো. শাহাবদ্দিন (২৮) ও তার ০৩ জন সহযোগী মিলে তার ছোট মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারা প্রায় দেড় মাস যাবত অজানা স্থানে আটকে রেখে ধর্ষণ করছে। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭ ঘটনার সত্যতা যাছাই এবং আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে র‌্যাব-৭ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে উক্ত ধর্ষণকারী ও তার সহযোগীরা কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন এলাকায় অবস্থান করছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে টানা ৩৬ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং প্রধান আসামী মো. শাহাবউদ্দীন ও তার অপর তিন সহযোগীকে আটক করতে সক্ষম হয় র‌্যাব-৭। আসামিরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করায় তাদের আটকের কাজটি ছিল কষ্টসাধ্য। এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭ জানতে পারে

আসামিরা কক্সবাজার সদর থানার কস্তুরা ঘাট এলাকায় অবস্থান করছে মর্মে তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ অক্টোবর র‌্যাব-৭ এর একটি দল বর্ণিত স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি মো. শাহাব উদ্দিন (২৮)কে আটক করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর ০৩ আসামি আরমান হোসেন (২৭), মো. নুরুল আলম (৩৮) ও লোকমান হাকিম (৩৪) কক্সবাজার সদরকে খুরুশকুল থেকে আটক করা হয়।

বিশ^নাথ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, এবার চাচার হাতে ভাতিজি ধর্ষণ হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের বিশ^নাথ পৌর এলাকার রামপাশা রোডস্থ আরামবাগ আবাসিক এলাকার আক্তার মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলায়। ধর্ষকের নাম আব্দুর রশিদ (৩৫)। সে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি (দক্ষিণপাড়া) গ্রামের মৃত মনফর আলীর ছেলে এবং নির্যাতিত তরুণী রমনা বেগম আব্দুর রশিদের আপন ভাতিজি হয়। এ ঘটনায় ধর্ষিতা রমনা বেগম বাদি হয়ে, গতকাল বিশ^নাথ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে, (মামলা নং-১১, তারিখ ১৭/১০/২০২০ইং)। খবর পেয়ে পুলিশ বখাটে আব্দুর রশিদকে তার (ভাড়াটে) বাসা থেকে রাতেই গ্রেফতার করেছে।
জানা গেছে, ধর্ষিতা রমনা আক্তার একটি গবির পরিবারের মেয়ে। তার বাবা মারা যাওয়ার পর তার ফুফু মরিয়ম বেগম তাকে টেইলারি সেখানোর জন্য বিশ^নাথে নিয়ে আসেন। রমনার চাচা আব্দুর রশিদের স্ত্রী ডির্ভোস হওয়ার পর সেও গোলাপগঞ্জ থেকে বিশ^নাথে (ভাড়াতে) বাসায় থাকত। সেই সুবাদে রমনার সাথে আব্দুর রশিদের গড়ে উঠে অবৈধ সম্পর্ক। এক পর্যায়ে (১৬ অক্টোবর) রাতে আব্দুর রশিদ তার তার বোনের বাড়িতে রাত্রি যাপনের উদ্দেশে যায় এবং রাতের খাবার দাবার শেষে ভাতিজি রমনা বেগমের সাথে কথা আছে বলে তার রুমে ডেকে নিয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ রুম থেকে বের না হওয়ায় ফুফু মরিয়ম বেগমের সন্দেহ হয়। তিনি আব্দুর রশিদের দরজা খুলতে ডাক দিলে মেয়েটি বিবস্ত্র অবস্থায় দরজা খুলে ফুফু মরিয়ম বেগমকে বিস্তারিত খুলে বলে। পরে তারা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ রাতেই তাকে গ্রেফতার করে।

এ ব্যাপারে থানার ওসি শামিম মুসা ইনকিলাবকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রæত আসামিকে গ্রেফতার করে এবং রোববার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাটানো হয়েছে।
বিরামপুর (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুর জেলার অন্তগত বিরামপুর পৌর এলাকার হাবিবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী (১৫) কে জোরপূবর্ক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বিরামপুর থানায় মামলা করলে বিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামান নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই ধর্ষকে আটক করে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বিরামপুর পৌর এলাকার মামুদপুর মহল্লার সিরাজুল ইসলামের পুত্র নাহিদ ইসলাম (২০) ও তার বন্ধু একই মহল্লার এনামুলের পুত্র সুমন আহাম্মেদ (২৪) মিলে একই মহল্লার মিজানুর রহমান এর কন্যা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আকতার (১৫) কে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তাতে ঐ ছাত্রী সম্মত না হওয়ায় রাত্রী (আনুমানিক) ৮ ঘটিকার সময় ঐ ছাত্রীকে বাড়ির সামনে থেকে জোরপূবর্ক তুলে নিয়ে ভিকটিমের বাড়ির পাশ্বে একটি কলা বাগানে নিয়ে যায়। কলা বাগানে নিয়ে গিয়ে দুই ধর্ষক মিলে ভিকটিমের মুখে ওড়না গুজে ধর্ষণ করে। সে সময় প্রতিবেশিরা ছাত্রীর গ্যাংগানির শব্দ শুনতে পেয়ে এগিয়ে আসলে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।

গাজীপুর : গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের শিমুলতলী এলাকায় এক কলেজছাত্রীকে (১৮) কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতেই ওই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার আবুল কালামের ছেলে মাসুদ রানা (২৫) ও ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার গলগন্ডা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মো. আনন্দ (২২)। দু’জনই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চতর এলাকায় বসবাস করতেন।

মামলার বরাত দিয়ে সদর থানা পুলিশের ওসি আলমগীর ভুইয়া জানান, নাইম নামে এক যুবক ও ওই কলেজছাত্রী গাজীপুর শহরে একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নাঈম ওই কলেজছাত্রীকে কল দিয়ে জরুরি কাজের কথা বলে শিমুলতলী বটতলা এলাকায় দেখা করতে বলেন।
পরে একটি অটোরিকশাযোগে ওই কলেজছাত্রী শিমুলতলী বটতলায় যান। সেখানে আগে থেকেই নাঈম ও তার সহযোগী আনন্দ ও মাসুদ রানা উপস্থিত ছিলেন। কিছুক্ষণ পর ওই স্থান থেকে আনন্দ ও মাসুদ রানা চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর নাঈম পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ওই কলেজছাত্রীকে একটি অটোরিকশায় করে শিমুলতলী স্কুল গেট সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যান।

সেখানে পৌঁছালে ওই কলেজছাত্রীর বিষয়টি সন্দেহ হলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় নাঈম ও তার সহযোগী আনন্দ ও মাসুদ রানা তাকে জোড়পূর্বক ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। এ সময় কলেজছাত্রীর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই কলেজছাত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন