মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ : আহত ১১, আটক ৬

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২০, ৪:৪২ পিএম

খুলনার আটরা শিল্পাঞ্চলে বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়াত্ব পাটকল চালুর দাবিতে মহাসড়ক অবরোধকালে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করার ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন ১১ জন শ্রমিক। আহতদের মধ্যে তিনজন পুলিশ। একজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে।

আটকৃতরা হলেন, মো : আবুল হোসেন, মো : নওশের, শহিদুল, ওলিয়ার রহমান, রবিউল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর সরদার।
আজ সোমাবার বেলা ১১টা থেকে ইস্টার্ন গেটে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদে ব্যানারে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ শুরু করে শ্রমিকরা। ১১ মিনিট পর পুলিশ এসে তাদের তুলে দিলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

আহত শ্রমিকরা হলেন- নাজমা খাতুন, খাদিজা বেগম, হাফিজা বেগম, সুমি রায়, শেফালী বালা, সুচিত্রা বিশ্বাস, সাফিয়া।
অবিলম্বে বন্ধকৃত ২৫ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু, আধুনিকায়ন করা, অবসরপ্রাপ্ত, কর্মরত, বদলী, অস্থায়ী সব শ্রমিকের বকেয়া পাওনা এককালীন পরিশোধ করাসহ ১৪ দফা দাবিতে সকাল ১০টায় ইস্টার্ন জুট মিলের গেটে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক নেতারা ও শ্রমিকরা একত্র হয়ে সমাবেশ করেন। পরে তারা খুলনা-যশোর হাইওয়ের আটরা শিল্পাঞ্চলের পথ অবরোধ করেন। এসময় খুলনামুখী গাড়ি আটকা পড়ে এবং খুলনা থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলো বিকল্প পথ ধরে চলাচল করে। শত শত মানুষকে পায়ে হেঁটে এলাকা অতিক্রম করতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। তারা পরে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ উঠিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানতে রাজি হননি। পরে শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং ধাওয়া দিয়ে তাদেরকে স্টার জুট মিলের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) এডিসি (উত্তর) সোনালী সেন বলেন, শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত মিডিয়া সেল থেকে জানানো হবে।
পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের আহŸায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা বলেন, শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ অবরোধ শুরু করে। পুলিশ সকলকে তুলে দেয়ার পর উত্তজনা সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, ‘এই করোনাকালে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করে ৫০ হাজার শ্রমিককে কর্মহীন করা এবং লক্ষাধিক মানুষকে নতুন করে দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দেওয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের চরম নিষ্ঠুরতার বহিঃপ্রকাশ। পাটশিল্প সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও পাটচাষিসহ প্রায় তিন কোটি মানুষ নতুন করে ক্রমান্বয়ে দারিদ্র সীমার নীচে নেমে যাচ্ছে।’

পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের নেতারা বলেন, বিজিএমসির দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে পাটকলে লোকসান হয়েছে। লুটপাটের জন্য পাটকল ও পাটশিল্প আজ ধ্বংসের পথে। অথচ বিজিএমসির দুর্নীতি ও লুটপাটের ফলে সৃষ্ট লোকসানের দায় সাধারণ পাটকল শ্রমিকদের ওপর চাপাচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের অন্যায় শাস্তির ফল ভোগ করছেন শ্রমিকেরা। অবিলম্বে পাটকল চালুর দাবি জানান তারা।

শ্রমিক নেতারা আরও জানান, করোনাভাইরাস মহামারিতে সরকারি পাটকল বন্ধ করে দেওয়ায় অনেক শ্রমিকের জীবন চলছে পেশার বদল ঘটিয়ে মানবেতরভাবে। কর্মহারা এ্ই শ্রমিকদের কেউ কেউ সহজ পেশা হিসেবে রিকশা চালাচ্ছেন। কেউবা ফল বিক্রেতা কিংবা নির্মাণ শ্রমিকের কাজেও নেমেছেন। আর এখনও কাজ জোগাড় করতে না পেরে বেকার জীবন পার করছেন অনেকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন