মহানবী হযরত মুহাম্মদের (স.) বিতর্কিত কার্টুন নিয়ে ক্লাসে আলোচনার জেরে ফ্রান্সে শিরশ্ছেদ করে স্যামুয়েল প্যাটি নামের একজন স্কুলশিক্ষককে হত্যার ঘটনায় দেশটির রাজধানী প্যারিসের বাইরে একটি মসজিদ বন্ধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গ্র্যান্ড পানতিন এলাকায় অবস্থিত মসজিদটি বুধবার (২১ অক্টোবর) থেকে ছয় মাসের জন্য বন্ধ থাকবে। মসজিদটিতে প্রায় দেড় হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
শুক্রবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুহাম্মদ (স.) বিতর্কিত একটি কার্টুন নিয়ে আলোচনা করা ইতিহাস বিষয়ের ওই শিক্ষককে ফ্রান্সের রাস্তায় গলা কেটে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশটিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ এই ঘটনাকে ‘ইসলামী সন্ত্রাসবাদী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ওই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক বার্তা দেওয়ার অন্তত ৮০টি ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এরইমধ্যে শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৫০টিরও বেশি সংগঠনের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ফরাসি মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু গোষ্ঠী হিংসা ছড়াচ্ছে কিনা সেটিও যাচাই করে দেখা হচ্ছে। সে রকম প্রমাণ পাওয়া গেলে এই গোষ্ঠীগুলো ভেঙে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার উত্তর-পূর্ব প্যারিসের নিম্নআয়ের মানুষের বসতি গ্র্যান্ড পানতিনের একটি মসজিদ ছয় মাসের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শিক্ষককে হত্যার আগে মসজিদটির ফেসবুক পেজ থেকে তার বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ’ ছড়ানো হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের এ নির্দেশনার একটি নোটিশও মসজিদের বাইরে লাগিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ৪৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষক স্যামুয়েল পেটিকে হত্যার পর ঘটনাস্থলের কাছেই পাহারায় থাকা পুলিশের গুলিতে হামলাকারীও নিহত হয়। নিহত ওই হামলাকারী চেচেন বংশোদ্ভূত ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ বলে ফরাসি গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে। তবে হামলাকারীর নাম ও বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ঘটনার পর পরই পুলিশ তার চার আত্মীয়কে আটক করে, যাদের মধ্যে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক। পরে আরো পাঁচজনকে আটক করা হয়। সূত্র : রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন