বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আইসিজের আদেশও মানছে না মিয়ানমার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৩৬ এএম

মিয়ানমারের চরম নিপীড়িত জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস, সংক্ষেপে আইসিজে) অন্তর্বর্তী আদেশ মানা বাধ্যতামূলক হলেও তা মানছে না মিয়ানমার।

গতকাল মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) কানাডার সহযোগিতায় লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত আলোচনায় তাঁরা এ মনোভাব ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশ থেকে ভার্চুয়ালি ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, গুরুতর দায়মুক্তি ও মিয়ানমারের প্রতি আঞ্চলিক সমর্থন অব্যাহত থাকলে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী লর্ড তারিক আহমদ বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় আইসিজের আদেশ মেনে চলতে আমরা মিয়ানমারের প্রতি আমাদের আহ্বান অব্যাহত রেখেছি।’

গত শুক্রবার রাতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আটটি দেশ যৌথ বিবৃতিতে আইসিজের আদেশ মেনে চলতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে গত ২৮ জানুয়ারি আইসিজের দেওয়া ওই আদেশের কপি পাওয়ার পরপরই জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তা নিরাপত্তা পরিষদে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আট মাস হয়ে এলেও নিরাপত্তা পরিষদ আইসিজের আদেশ কার্যকরে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আটটি দেশের বিবৃতির মধ্য দিয়েও মিয়ানমার ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন, রাশিয়াসহ অস্থায়ী সদস্য ইন্দোনেশিয়া, নাইজার, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডাইন্স, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভিয়েতনাম ওই বিবৃতিতে যুক্ত হয়নি। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, আইসিজের আদেশ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কথা থাকলেও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তাতে ব্যর্থ হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক বিচারিক কাঠামোকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানালেও বিবৃতিতে কৌশলগতভাবে অনেক শব্দ এড়িয়ে গেছে। যেমন- আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতেও (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট, সংক্ষেপে আইসিসি) যে মিয়ানমারকে জবাবদিহি করানোর চেষ্টা চলছে তা নিরাপত্তা পরিষদের আট সদস্য রাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ নেই।

মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ‘বার্মা ক্যাম্পেইন, ইউকে’র পরিচালক মার্ক ফ্রেমনার বলেছেন, তাঁরা মনে করেন রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরার অর্থ হলো তাঁদের ওপর সংঘটিত নিপীড়নের জবাবদিহি নিশ্চিত করা। অথচ তারা আইসিজে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় গাম্বিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়নি। যুক্তরাজ্য মিয়ানমার পরিস্থিতির তদন্তের দায়িত্ব আইসিসিকেও দেয়নি। যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরার কথা বলেছে, অথচ এই ফেরার জন্য যে নাগরিকত্ব অপরিহার্য তা তারা উল্লেখ করে না।

সম্প্রতি মিয়ানমারে সরকারি মানচিত্রে রোহিঙ্গা গ্রাম মুছে দেওয়ার যে খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে তাও জেনোসাইডের আলামত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সাবেক রাষ্ট্রদূত মুনশি ফয়েজ আহমেদের ভাষ্য, মিয়ানমারে সরকারি মানচিত্রে রোহিঙ্গা গ্রাম মুছে দেওয়ার বিষয়টি আইসিজের নজরে আনা উচিত। সূত্র : রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন