শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

অবশেষে ধরা খেল ভুয়া পুলিশ অফিসার

রাজশাহী ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০০ এএম

অবশেষে ধরা পড়লো কথিত পুলিশ অফিসার। দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল ফারুখ হোসেন ফিটু। কিন্তু অবশেষে চার বছর পর পুলিশের ফাঁদে ধরা পড়তেই হলো। সে প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় নিখোঁজদের সন্ধানে কিংবা কোনো কোনোকিছু হারিয়ে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি খুঁজতেন। বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়লেই ঠিকানা ও জিডির নম্বর সংগ্রহ করে নিজেকে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিচয় দিতেন। এরপর চলতো নিখোঁজদের সন্ধান চাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহ। সব টাকা নেয়া হতো বিকাশের মাধ্যমে। 

গত চার বছর ধরে এভাবে শত শত মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ সংগ্রহ করতো ফারুক হোসেন ফিটু। এইজন্য তিনি ব্যবহার করতেন ১৬টি মোবাইল ও ২৪টি সিম। সব সিম ও বিকাশ নম্বর রেজিস্ট্রেশনে তিনি ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন। প্রতারণা দায়ে গত মঙ্গলবার তাকে পাবনার আমিনপুর থানার চক আব্দুল শুকুর এলাকা থেকে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।
ফারুক হোসেনের বাড়ি চক আব্দুল শুকুর গ্রামে। তার বাবার নাম নাদের শেখ। তিনি পাবনা কাজির হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এরপর ২০০১ সালে ঢাকায় গিয়ে টপিক্যাল সিকিউরিটি হোম’স লিমিটেড নামক সিকিউরিটি কোম্পানিতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চাকরি করেন। এরপর তিন বছর পাবনায় থেকে ২০১২ সালে আবার ঢাকায় যায়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্নস্থানে চা বিক্রি করেন। কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে তিনি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতো।
গত মাসের ২৯ তারিখে রাজপাড়া থানার একজন এস আই আরএমপি সদর দফতরে অভিযোগ করেন যে, রাজপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদ আলমের পরিচয় দিয়ে চারটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে নগরীর ডাবতলা এলাকার তিনজন ব্যক্তিকে ফোন করেন। ফোন করে পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি তদন্ত, উদ্ধার ও উদ্ধারকৃত ডকুমেন্ট পাঠানোর জন্য টাকা দাবি করে।
পরে তারা থানায় অভিযোগ করলে দেখা যায় রাজপাড়া থানার এস আই মাসুদ ও থানার কেউ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। তখন রাজপাড়া থানা পুলিশ মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে নম্বরগুলো প্রেরণ করে। নম্বরগুলোর পাওয়ার পর ২১ দিন বিশ্লেষণ করে সাইবার ক্রাইম ইউনিট মিথ্যা পরিচয়দানকারী ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর তাকে পাবনা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ফারুক হোসেনকে গ্রেফতারের পর গতকাল বুধবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস, সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রধান উৎপল কুমার চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বলেন, ফারুক হোসেন গত কয়েকবছর ধরে পুলিশের ওসি, এস আই পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছেন। প্রতিমাসে কমপক্ষে ২০ জনের কাছ থেকে সারাদেশে এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আরো তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন