রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ফের ইউরোপের সাথে আলোচনায় ব্রিটেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২০, ৩:৪৬ পিএম

অবশেষে বিরোধ মিটিয়ে আবার আলোচনার টেবিলে ফিরছে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউ-র প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা বন্ধ রেখেছিলেন। বৃহস্পতিবার থেকে আবার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু হচ্ছে।

গত শুক্রবার ইইউ শীর্ষ সম্মেলনের পর জনসন চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট পুরোপুরি কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছিলেন। ইইউ-র মনোভাবকে সে জন্য দায়ী করে তিনি আলোচনাও বন্ধ রেখেছিলেন। বুধবার আবার মতবদল করেছে জনসনের সরকার। ফলে বৃহস্পতিবার থেকে দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে। ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে ব্রিটেনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী ডেভিড ফ্রস্ট এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, আলোচনার ভিত্তি আবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, সব দায় শুধু ব্রিটেনের উপর চাপিয়ে না দিয়ে জট ছাড়াতে বার্নিয়ে দুই পক্ষের আপোশের কথা বলেছেন। তাই বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আলোচনা শুরু হবে। হাতে সময় কম থাকায় প্রতিদিনই আলোচনা চলবে। অর্থাৎ সপ্তাহান্তেও কোনো বিরতি হবে না। আপাতত ২২ থেকে ২৫শে অক্টোবর পর্যন্ত আলোচনার কর্মসূচি স্থির হলেও দুই পক্ষের সম্মতি থাকলে তার মেয়াদ বাড়ানো হবে।

গত কয়েক মাস ধরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে মতপার্থক্য দূর হচ্ছে না। তাই আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঐকমত্যের সম্ভাবনা কতটা বাস্তব, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। ব্রিটেন ও ইইউ-র কোম্পানিগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতার ন্যায্য পরিবেশ, মাছ ধরার অধিকার এবং বিরোধ মেটাতে আইনি কাঠামোর মতো বিষয়কে কেন্দ্র করে কোনো পক্ষই আপোশের লক্ষণ দেখাচ্ছে না। তবে কিছু সূত্র অনুযায়ী নেপথ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে।

বুধবার মিশেল বার্নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সামনে বলেন, দুই পক্ষই আপোশ করতে রাজি হলে এখনো বোঝাপড়া সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। আর মাত্র দশ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কে ঐকমত্য অর্জন করা এবং সেই চুক্তি অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ করে কার্যকর করা বড় চ্যালেঞ্জ হলেও তা একেবারে অসম্ভব নয় বলে মনে করেন বার্নিয়ে।

এর আগে ইউরোপীয় সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল পার্লামেন্টের সদস্যদের বলেন, হাতে সময় খুব কম। তবে ইইউ কোনো বিরতি ছাড়াই সব বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। ব্রিটেনকে স্বাধীনভাবে সেই প্রস্তাব বিবেচনা করতে হবে, বলেন মিশেল। উল্লেখ্য, ব্যর্থতার দায় এড়াতে ইইউ নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অবিরাম আলোচনার প্রস্তাব রেখেছে। শেষ পর্যন্ত চুক্তি স্থির হলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

বাকি সব বিষয়ে আপোশ সম্ভব হলেও একটি মৌলিক বিষয় নিয়ে ঐকমত্যের আশা দেখা যাচ্ছে না। বরিস জনসন ব্রিটেনের সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি ফিরিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু একইসঙ্গে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ বাজারে অবাধ প্রবেশের সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। ক্যানাডার সঙ্গে ইইউ-র বাণিজ্য চুক্তির আদলে তিনি বোঝাপড়া চেয়েছিলেন। অন্যদিকে ইইউ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ব্রিটেনের ক্ষেত্রে এমন চুক্তি সম্ভব নয়। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' নিশ্চিত করতে না পারলে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ইইউ-র কোম্পানিগুলি অসুবিধায় পড়বে। সেটা সম্ভব না হলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পথে যেতে প্রস্তুত এই রাষ্ট্রজোট। সূত্র: ডিপিএ, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন