সাবেক মন্ত্রী ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের উপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এ মামলার অন্যতম আসামী বিএনপির কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ও সিেেলট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহারিয়ার কবিরের আদালতে এই মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। একই আদালতে সুরঞ্জিত সেনের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলা এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলারও অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই ৩ মামলায়ই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবার, সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র জিকে গৌছকে আসামি করা হয়েছিল।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি সরওয়ার হোসেন আবদাল বলেন, সুরঞ্জিত সেনের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনার দুটি মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছ সহ ১০ জন আসামি । আর শাহ এএসএম কিবরিয়ার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বিস্ফোরক মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ্ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীদের করা হয়েছে আসামি। অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আজ থেকে এই তিন মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলো বলে জানান পিপি সরওয়ার। তিনি আরো বলেন, আজ কিবরিয়া হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ থাকলেও সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ গেছে পিছিয়ে। এই মামলার কার্যক্রমও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে চলমান আছে। এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সহ কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আসামিদেও নিয়ে আসাম হয় সিলেট আদালতে। জামিনে থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছও হাজির হন আদালতে। মামলার ১১ জন আসামিই আজ ছিলেন আদালতে উপস্থিত।
প্রসংগত, ২০০৪ সালের ২১ জুন দিরাই বাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে বোমা হামলা ঘটে। সমাবেশে তখন প্রধান অতিথির বক্তব্যরত ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই বোমা হামলায় এক যুবলীগ কর্মী নিহত ও আহত হন ২৯ জন। ওই ঘটনায় দিরাই থানায় মামলা দায়ের করেন এসআই হেলাল উদ্দিন ।
অপরদিকে, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আ’লীগ আয়োজিত সমাবেশ শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া, তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদা সহ ৫ জন। আহত হন ৭০ জন। এ ঘটনায় সদর থানায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান। এ হত্যা মামলায় আসামি করা হয় ১০ জনকে।
পরে ২০১১ সালে তদন্তের প্রেক্ষিতে আরও আসামি করা হয় ২৬ জনকে। পরে ৩য় দফায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফর জামান বাবর, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সহ আসামি করা হয় ৩৫ জনকে। এর মধ্যে মারা গেছেন দু’জন। নানা কারণে এই মামলার কার্যক্রম বিগত ১৫ বছর ধরে ঝুলে আছে । দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের পরও গতি পাচ্ছে মামলার কার্যক্রম। আজ সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তারিখ আরেক দফা পিছিয়ে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন