বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিশ্বমঞ্চে ভারতের অবস্থান নড়বড়ে

মিথ্যাচারে ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার হবে না

এশিয়া টাইম্স | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০২ এএম

বিশ্বমঞ্চে ভারতের বর্তমান নড়বড়ে অবস্থান সম্পর্কে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং শীর্ষ আমলাদের উপলব্ধি বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক চিন্তাবিদ এবং গণমাধ্যমের করা ৩টি প্রতিবেদনে বিশ^ দরবারে ভারতের বর্তমান চিত্র উঠে এসেছে। প্রথমটি, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইএফপিআরআই) সূচক ব্যবহার করে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং ওয়েলথুঙ্গারহিলফে যৌথভাবে গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত গেøাবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই)।

ভারতীয় কৌশলবিদরা তাদের দেশকে একটি উচ্চাকাক্সক্ষী বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে দাবি করলেও জিএইচআই র‌্যাঙ্কিংয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান বাদে দক্ষিণ এশিয়ায় তালিকার সর্বনিম্নে অবস্থান করছে ভারত। জিএইচআই’র প্রতিবেদনে তালিকাভুক্ত ১০৪টি দেশের মধ্যে ভারত ৯৪তম স্থানে রয়েছে। ভারত রেড জোনে সুদানের সমান র‌্যাঙ্ক ভাগ করে নিয়েছে। তার মানে ভারতের ক্ষুধার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দেশটির দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশিদের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ৬৪, নেপাল ৭৩, বাংলাদেশ ৭৫ এবং পাকিস্তান ৮৮তম অবস্থানে রয়েছে। ভারত তার শিশুদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে পারছে না, কিন্তু বিশ্বরাজনীতির কৌশলগত খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। দ্বিতীয়টি বøুমবার্গ বিজনেসে ১৭ অক্টোবর তারিখের অ্যান্ডি মুখার্জির একটি প্রতিবেদন। শিরোনামটি আকর্ষণীয় ‘পরবর্তী চীন? ভারতকে অবশ্যই প্রথমে বাংলাদেশকে পরাজিত করতে হবে।’ মুখার্জি লিখেছেন, ‘১৯৯০’র দশকে অর্থনীতি প্রসারিত করার শুরু থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল চীনের দ্রæত সম্প্রসারণ অনুকরণ করা। তিন দশক ধরে এ প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের পিছনে চলে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী তার ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে। পাশ্চাত্য চীনের বিপরীতে অর্থবহ ভারী প্রতিপক্ষ চায়, তবে ভারত নিম্ন-মধ্যম আয়ের জালে আটকা না পড়লেই কেবল সেই অংশীদারিত্ব কার্যকর হবে।’

তৃতীয় প্রতিবেদনটি গত বছর প্রকাশিত হলেও এখনো প্রাসঙ্গিক। দাভোস-ভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডবিøউইএফ) আইডিআই’র ২০১৮ র‌্যাঙ্কিং অনুযায়ী, ভারত আবারো নীচের দিকে রয়েছে। প্রসারমান অর্থনীতি বিভাগের ৭৪টি দেশের আইডিআই র‌্যাঙ্কিংয়ে নেপাল ২২তম, বাংলাদেশ ৩৪, শ্রীলঙ্কা ৪০, পাকিস্তান ৪৭ এবং ভারত ৬২ নম্বরে রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারত দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্য এমনকি মানবাধিকার প্রশ্নেও রোল মডেল নয়। ভারতের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রম বন্ধ করার বিষয়টি এটির সত্যতা নিশ্চিত করে।

এ প্রতিবেদনগুলো থেকে প্রতীয়মান যে, ভারত শীর্ষ পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা উদীয়মান পরাশক্তি চীনের সাথে তুলনীয় নয়। ভারত জাপান বা জার্মানির মতো মধ্যশক্তির দেশের সমানও নয়। এমনকি এটি অনেকগুলি উন্নয়ন সূচকে তার আশেপাশের প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের সমতুল্যও নয়। বিভিন্ন সূচকে ভারত তার দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশিদের অনেক পেছনে অবস্থান করছে। ভারতের এ দুর্বল ভাবমর্যাদার ফলস্বরূপ সাম্পতিককালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি ভারতকে পাশ কাটিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। অর্থনীতিবীদরা বলছেন যে, আর্থ-সামাজিক র‌্যাঙ্কের নিম্নে অবস্থান করা একটি দেশ উচ্চ র‌্যাঙ্কযুক্ত দেশ বা অন্যদের জন্য রোল মডেল হতে পারে না। ভারতীয় নেতারা এবং আমলারা বিষয়টি অস্বীকার করলেও ভারতের পক্ষে তা কাজে দেবে না। ভারত যত তাড়াতাড়ি মেনে নেবে যে, সে পরাশক্তি ও মধ্য-শক্তির দেশগুলির থেকে, এমনকি তার আশেপাশের প্রতিবেশীদের তুলনায়ও অনেক পিছিয়ে রয়েছে, তত তাড়াতাড়িই তার অর্থনীতি ঠিক হতে শুরু করবে। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তাদের গেøাবাল প্লেয়ার হওয়ার মিথ্যা দম্ভ দেশটির জনগণের কোনও উপকারে আসবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
নুবিয়া নাজাত ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৩৯ এএম says : 0
এবার ঠিকাছে...
Total Reply(0)
ALAMGIR HAYDER ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪১ এএম says : 0
WE MUST REALIZE THAT WHAT CHINA CAN OFFER ECONOMICALLY AND MILITARILY, INDIA CANNOT MATCH THAT. CHINA HAS ALREADY ESTABLISHED HERSELF AN IMPORTANT FACTOR ON ANY INTERNATIONAL ISSUES.
Total Reply(0)
সত্য বলবো ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪২ এএম says : 0
বাংলাদেশের সাথে ভারতের বিরোধ আগত দিনের জন্য নিশ্চিত একটি বিস্য.১ম পানি, ভারত পানি দেবেনা, তাই আমদেরর গঙ্গা বাঁধ সহ এমন আরও বাধ দিয়ে বর্ষার পানি ধরে আটকাতে হবে। ২য়তঃআমাদেরকে মায়ানমার হয়ে চীন স দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় যেতে হবে।তাই চাই মায়ানমার, চীনের সাথে বিশেষ সম্পর্ক। এমন কি চীনের সাথে কৌশলগত সামরিক পারমানবিক চুক্তি.৩য়তঃ যে সব জিনিস ভারত থেকে আসছে সেগুলো আমাদের নিজেদেরকে বানাতে হবে, জাতীয় অর্থ নিতির বিকাসের সর্তে ।
Total Reply(0)
মেহেদী ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪৩ এএম says : 0
চীন ও ভারতের মধ্যে, ভারতের প্রতিবেশী অন্য দেশগুলো নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা এমনকি বাংলাদেশের নাগরিকরা কেনো চীনকে পসন্দ করে তা কার অজানা নয়। (১) চীন কখনো বলেনা তোমরা অন্য দেশের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারবেনা । বাংলাদেশকে তার অর্থনৈতিক সম্পর্ক নির্ধারণ করতে গিয়ে ভারতকে আশ্বস্ত করতে হচ্ছে, এটা কেনো ? (২) চীনের সম্পর্ক মুলত অর্থনৈতিক অন্য দেশকে দলে টানে, তার সবাইকে উপরে তোলার জন্য। ভারত নিজের দেশের ২০% নাগরিকদের (Muslim, Christian, Budhist) ভাবে শতরু, উঠতে বসতে অপমান করে, নিজের দেশে এরা পরবাসি। ভারতের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠিকে ভালোভাবে ব্যবহার করে ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে পারত, ভারতের মনে রাখতে হবে প্রতিবেশীদেশীদের অধিকাংশ নাগরিক হিন্দু নয়। শুধু মুখের কথায় চিড়া ভিজে না ।
Total Reply(0)
তাসফিয়া আসিফা ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪৩ এএম says : 0
ভারতের ব্যাপারে বাংলাদেশের নাগরিকদের কী ধারণা হয়, ভারতের নীতিনির্ধারকেরা তা বিবেচনায় নিলে ভালো করবেন।
Total Reply(0)
কামাল রাহী ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
ভারত তার প্রতিবেশি ছোট ছোট রাষ্ট্রগুলোকে বেশি পাত্তা দেয়নি। তাদেরকে এক ধরনের তুচ্ছ, তাচ্ছিল্য আর অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে। আমেরিকা, ইসরায়েল আর রাশিয়ার সাথে দহরম মরহম রক্ষা করেই আত্মপ্রসাদ লাভ করে। কিন্তু এখন তাকে ভাবতে হবে, প্রতিবেশি ছোট ও দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর সাথে দাদাগিরি নয় বরং তাদেরকে সমীহ করতে হবে। কারণ বিপদে আমেরিকা, ইসরায়েল আর রাশিয়াকে নয় এদেরকেই পাশে পাওয়া যাবে।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
ভারত শুধু আমাদের সাথেই পারে দাপট দেখাইতে। চীন,পাকি, নেপালের কাছে পিটানি খেয়ে তারা বন্ধু রাষ্ট্রের বর্ডারে নিরিহ মানুষ হত্যা করে
Total Reply(0)
কামাল ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪৬ এএম says : 0
ভারত সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র দেশ যার সাথে প্রতিবেশী কারো সুসম্পর্ক নাই।
Total Reply(0)
নাসিম ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
দক্ষিণ এশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র ভারত। ক্ষমতার দম্ভ যাকে অন্য রাষ্ট্রের প্রাপ্য সম্মান লাভের ন্যায্যতাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। ছোট বড় কিংবা সমান সকল রাষ্ট্রের সাথেই তার বৈরি ভাব! সবাই খারাপ শুধু সে একাই ভালো!! যদি এটা ভারতের আচরণগত সমস্যা না হতো তবে সবার সাথে বিরোধ হওয়ার কথা তো নয়।
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ৮:০৪ এএম says : 0
ভারতের পরিণতি সোভিয়েত রাশিয়ার মত হবে। বিশ্বের মানুষ দেখেছে উগ্রবাদী হিন্দুদের অত‍্যাচার জাতিগোষ্ঠীর বর্বরতা গনতন্ত্র ধ্বংসের ধর্মীয় উগ্রবাদ। বিশকোটি মুসলিম নিরাপত্তা হীনতার মাঝে ক্ষমতাসীনদের কাছে কোন ধর্মের মানুষ নিরাপদ। গোমুত্রের পূজারীদের কাছে মানুষ খুন হচ্ছে। ভারত ঠিকবে কিনা? ভারতের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চীনের সাথে যদি ভারত যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ে তাহলে ভারত সোভিয়েত ইউনিয়নের মত পরিণতি হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে পাশের অনেক দেশ কুটনৈতিক সম্পর্ক নেই। যাদের সাথে আছে ছেড়েদে মা কেদে বাছি এই হিসাবে। এই হলো মন কি বাদ। অর্থনৈতিক সামরিক সুপার পাওয়ার চীনের চাপের মাঝে ঠিকে থাকতে পারবে কিনা সন্দেহ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত পরিস্কার সবার সাথে বন্ধুত্ব। বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছেন বিশাল ব‍্যাক্তিত্বের দক্ষ বিচক্ষন সুদূরপ্রশারী চিন্তা চেতনার বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের একজন সৎ জাতীয় নেতা দক্ষিণ এশিয়ার টাইগার বাংলাদেশের বিশাল অর্জনের কারিগর মাননীয় প্রধান মন্ত্রী। এই ভারত আমাদের কাটা তারের বেড়াদিয়ে গিরে রেখেছ। বর্ডারে ইসরায়েলের মত বিনা বিচারে বিনা উস্কানিতে পশুপাখির মত হত‍্যাযজ্ঞ এই দেশের মানুষ কি বুঝেনা। অহংকারের পতন হবে হচ্ছে।শিরোনাম বিশ্ব মন্চে ভারতের অবস্থান নড়বডে। আরও বড় বড় শিরোনাম হবে ভবিষ্যতে।
Total Reply(0)
abu hasan ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ৮:২৮ এএম says : 0
ধর্মীয় গোড়ামীই ভারতের যত সমস্যার মূল কারণ। এখান থেকে উত্তরন ঘটাতে হবে।
Total Reply(0)
Ramadan Hredoy ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ৯:৪২ এএম says : 0
ভারতীয়রা এখনো,মহাভারতীয় যুগ ভেবে চলছে। মুখ্য সমস্যা হচ্ছে,গোরা ধর্ম কখনোই কল্যান আনেনি।
Total Reply(0)
abul kalam ২৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৪০ পিএম says : 0
ভারত বুঝবে, তবে দেরিতে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন