শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

গাঁজা নিয়ে ধর্ম সঙ্কটে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০২০, ৮:০১ পিএম

গেল সেপ্টেম্বরে ভারতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (এনসিবি) এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যখন বলিউড অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে তার প্রেমিক জুনে আত্মহত্যা করা প্রখ্যাত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের জন্য গাঁজা সরবরাহের অপরাধে এক মাস যাবত কারাগারে অন্তরীণ করে রেখেছিল, তখন দেশটির মিডিয়া প্রাণঘাতী গাঁজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমে পড়ে। রিয়ার ব্যক্তিগত যোগাযোগগুলো খুঁজতে যেয়ে তদন্তকারীরা তার সাথে অন্যান্য বিতর্কিত তরুণ অভিনেতাদের সাথে দীপিকা পাডুকোনের সংশ্লিষ্টতার কথাও জানতে পারেন, যিনি হোয়াটসঅ্যাপে অন্যদের সাথে নেশাদ্রব্যটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির গণ্যমান্যদের ড্রাগ অবসেশনকে বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান, সেক্স র‌্যাকেট, সন্ত্রাসবাদ ও বন্যপ্রাণী হত্যার সাথে যুক্ত করে সরকারের ঘনিষ্ঠ এক সাংবাদিক সতর্ক করে দিয়ে এও বলেছেন যে, বলিউড সাফাইয়ের জন্য ময়দান তৈরি করা হয়ে গেছে।

একদিকে ভারতের নীতিবাদীরা গাঁজাআচ্ছন্ন বলিউড তারকাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন যে, তারা ভারতের যুবসমাজকে বিপদগ্রস্ত করছে, অন্যদিকে, গাঁজার বিরুদ্ধে এ যুদ্ধ এখন দেশটির প্রাচীন ধর্মভক্তি ও অনুশীলনের রীতির ওপর একটি আঘাত হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, গাঁজার সাথে ভারতীয় হিন্দুদের সম্পর্ক হাজার বছরের পুরোনো। গাঁজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রাচীনতম উল্লেখগুলি হিন্দু বেদ থেকে এসেছে, যেটিতে ৩ হাজার বছর আগে মাদকটির মাহাত্ম্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, সময়ের আবর্তনের বহু আগেই দেবতা শিব এটি আবিষ্কার করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। তিনি হিমালয়ে তার বাসভবনে বসে মহাবিশ্বের রহস্য নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময় গাঁজা সেবন করতেন বলে তার অনুকরণকারীও তেমনটি করে থাকেন।

ভারতে মাত্র প্রায় দুই রুপির বিনিময়ে আনাচে কানাচে গাঁজা পাতা বেঁটে তৈরি ভাঙের শরবত ফেরি করা হয়। জার্মান বিপণন সংস্থা এবিসিডি’র পরিসংখ্যান মতে, ২০১৮ সালে গাঁজা সেবনকারী বিশ্বের শীর্ষ ৬টি শহরের মধ্যে দিল্লি এবং মুম্বাইতে একসাথে প্রতি বছর ৭০ টনেরও বেশি গাঁজা সেবন করা হয়। পাশপাশি, সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারগুলিও ভরপুর ভাঙ পান করে বসন্ত উৎসব হোলি উদযাপন করে থাকে। এমনকি, ১৮৯০ সালের ইন্ডিয়ান হ্যাম্প ড্রাগস কমিশন রিপোর্ট নামক সাত-খণ্ডের একটি বিস্তারিত ব্রিটিশ গবেষণা উপসংহারে বলা হয়েছে, ‘গাঁজার মাঝাড়ি মাত্রার সেবনে কার্যত কোনও কুফল দেখা যায়নি।’ তাই সব মিলিয়ে গাঁজা নিয়ে বর্তমানে ধর্ম সঙ্কটে ভুগছেন ভারতের নীতিবাগিশ হিন্দুরা। সূত্র: দ্য ইকোনোমিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন