দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শুরু হয়েছে, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। ঢাকার আশুলিয়ার কাইচাবাড়ির একটি মিনি ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। এসময় ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার করা হয় ২১জনকে। গত বছরের মাঝের দিকে রাজধানীসহ সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন ক্লাবে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও নগদ টাকা। গ্রেফতার করা হয় এর সাথে জড়িত রাঘব বোয়ালদের।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, আশুলিয়ার কাইচাবাড়ির ক্যাসিনোতে প্রতিরাতে ১০-১৫ লাখ টাকার জুয়া খেলা হতো। আর এই জুয়ার আসরে খেলতেন অধিকাংশ নিম্নআয়ের মানুষ। যাদের অনেকেই জুয়ায় আসক্ত হয়ে হারিয়েছেন তাদের নিত্যদিনের আয়। গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন কাইচাবাড়ি এলাকায় জুয়ার আসর থেকে মাদকসহ তাদের গ্রেফতার করে র্যাব-৪ এর একটি দল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিছুর রহমানের উপস্থিতিতে এবং সহকারী পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে র্যাব-৪ এর একটি দল ওই অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে মিনি ক্যাসিনো জুয়ার আসর হতে প্লেয়িং কার্ডসহ একটি ক্যাসিনো বোর্ড, ১০০ পিস ইয়াবা, ১২ ক্যান বিদেশি বিয়ার, ২২টি মোবাইল এবং নগদ ৩৮ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
গতকাল রোববার মিরপুর পাইকপাড়ায় র্যাব-৪ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, এই মিনি ক্যাসিনো চলছিল গত দেড়বছর ধরে। এ ক্যাসিনোতে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত খেলতেন। রাত যত গভীর হতো ক্যাসিনো তত জমে উঠত। এই ক্যাসিনো ব্যবসার মালিকানায় রয়েছেন প্লাবন হোসাইন ও ওমর ফার”ক নামে দুজন।
যদিও তাদেরকে আমরা গ্রেফতার করা সম্ভব হইনি। তাদের গ্রেফতার করতে পারলে এই মিনি ক্যাসিনো সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা জানতে পারব।
দেড় বছর ধরে চলা এই মিনি ক্যাসিনো কাদের ছত্রছায়ায় চলত-জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, এটা বলা খুব মুশকিল, কারণ বাইরে প্রদর্শন করা হয় ক্যারাম বোর্ড আর এর আড়ালে চলে এরকম জুয়ার আসর কিংবা মিনি ক্যাসিনো। আমরা যখনই গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছি তখনই অভিযান করে মিনি ক্যাসিনো থেকে ২১ জনকে গ্রেফতার করেছি।
এই মিনি ক্যাসিনোর বোর্ড কীভাবে আমদানি করা হয়েছে- জানতে চাইলে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, এই বোর্ড আমদানি করা হয়েছে মালয়েশিয়া থেকে। তবে দেখে মনে হচ্ছে- স¤প্রতি আমদানি করা হয়নি। সমাজের খুব বড় বড় তথাকথিত গ্যাংস্টারকে আটক করা হয়েছে। তারা কে কীভাবে এই ক্যাসিনো বোর্ড আমদানি করেছে সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। অবৈধভাবে যারাই এই বোর্ড আমদানি করুক না কেন, খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে এই মিনি ক্যাসিনোয় খেলায় জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় তাদের বির”দ্ধে নিয়মিত জুয়া আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন