মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দিলেন এরদোগান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ১০:২৫ এএম | আপডেট : ১০:৫৪ এএম, ২৭ অক্টোবর, ২০২০

রবিউল আওয়াল মাসে ফ্রান্সে যেভাবে মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে বির্তকিত কর্মকাণ্ড করছে তাতে করে সারা বিশ্বের মুসলিমদের মনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশে দেশে চলছে ফরাসী পণ্য বর্জন ও বিক্ষোভ মিছিল।

এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসলামবিদ্বেষী মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করে সোমবার প্রেসিডেন্ট এরদোগান বিশ্বের সকল মুসলিমের প্রতি এই আহ্বান জানান।


ফরাসি পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, কখনই কোনো ফরাসি ব্র্যান্ডকে সহায়তা করবেন না অথবা ফ্রান্সের লেবেলযুক্ত পণ্যসামগ্রী কিনবেন না।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের প্রতিবাদে মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত, কাতারসহ পুরো মুসলিম বিশ্বেই ফরাসী পণ্য বয়কটের হিড়িক পড়ে গেছে। দোকান থেকে ফরাসী পণ্য সরিয়ে ফেলছে অনেক খ্যাতনামা চেইন শপসহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

করোনা মহামারীকালে এই বয়কটের বিশ্বব্যাপী ফরাসি বাণিজ্যে সুদূরপ্রসারী প্রভাব আঁচ করতে পেরে আরব দেশগুলোর প্রতি পণ্য বয়কট বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে ফ্রান্স। রোববার এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ অনুরোধ জানায়।

সম্প্রতি ফ্রান্সের একটি বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রদর্শন করেন দেশটির ধর্মবিদ্বেষী এক শিক্ষক। এর জেরে চেচেন বংশোদ্ভূত এক কিশোর তাকে গলাকেটে হত্যা করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। চালানো হচ্ছে ইসলাম ও মুসলিমবিরোধী প্রচারণা।

এ ঘটনার পর কথিত ‘ইসলামী বিচ্ছিন্নতাবাদের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, ‘এই বিচ্ছিন্নতাবাদ ফ্রান্সের মুসলমান সম্প্রদায়গুলোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। ফ্রান্সের সরকারি ভবনে মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করে চিত্র প্রদর্শন বন্ধ হবে না।’

‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’কে সমর্থনের নামে ইসলামবিরোধী ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রদর্শন ও বক্তব্যকে উসকানি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য গ্রহণ ও যুক্তিযুক্ত মতামতকে প্রতিহত করি না।’

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর এমন মন্তব্যের পর মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফরাসি পণ্য বয়কট শুরু হয়েছে। কুয়েত, জর্ডান এবং কাতারের কিছু কিছু দোকান থেকে ফরাসি পণ্য সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া লিবিয়া, সিরিয়া এবং গাজা উপত্যকায় বিক্ষোভও দেখা গিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্য থেকে এই বয়কট মুসলিম বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়ছে। এরই জের ধরে ফরাসি পণ্য বর্জন না করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। এর আগে ম্যাক্রো মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কার্টুন দেখানোর পক্ষে সাফাই দিয়েছিলেন।

হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর চিত্রাঙ্কন মুসলিমদের জন্য গুরুতর আপত্তির জায়গা হয়ে ওঠার কারণ হচ্ছে, ইসলামী ঐতিহ্য অনুযায়ী মুহাম্মদ (সা.) এবং আল্লাহর প্রতিকৃতি তৈরি কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

রোববার জর্ডান, কাতার ও কুয়েতের অনেক দোকানের তাক থেকে সরিয়ে নেয়া হয় ফরাসি পণ্য। ফ্রান্সে তৈরি হওয়া চুল এবং সৌন্দর্য পণ্য ডিসপ্লে-তে রাখা হয়নি। কুয়েতে প্রধান একটি রিটেইল ইউনিয়ন ফরাসি পণ্য বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।

বেসরকারি ইউনিয়ন অব কনজ্যুমার কো-অপারেটিভ সোসাইটি বলে, হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে "বার বার অসম্মান" করার কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিভিন্ন আরব দেশ যেমন সৌদি আরবে অনলাইনে এ ধরণের বয়কটের আহ্বান জানানো হচ্ছে। আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবে ফরাসি সুপারমার্কেট চেইন শপ "ক্যাফৌউ" বয়কট করা নিয়ে হ্যাশট্যাগ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ট্রেন্ডিং ইস্যু হিসেবে উঠে এসেছে।

এদিকে, লিবিয়া, গাজা এবং উত্তর সিরিয়ার তুরস্ক সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ফরাসি বিরোধী ছোট ছোট বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সূত্র : ইয়েনি শাফাক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Anwar Hossain ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫৩ এএম says : 0
আবারও ফ্রান্স সরকার তার শয়তানি চরিত্র স্পষ্ট করেছে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন