মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মার্কিন ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটগুলোতেও অগ্রিম ভোটের রেকর্ড

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ৭:১৪ পিএম

মার্কিন নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগেই ৬ কোটি ৪০ লাখ ভোটার ইতিমধ্যে ভোট দিয়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ১২টিরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক রাজ্যের, যেগুলো শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেবে যে নির্বাচনে কে জিতবে। যুক্তরাষ্ট্রে এই রাজ্যগুলো পরিচিত ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট নামে। এদিকে, নির্বাচনের মুখে বিতর্কিতভাবে অ্যামি কোনে ব্যারেটকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, ২০১৬ সালে সালে অর্ধেকেরও বেশি ব্যাটলগ্রাউন্ডগুলোতে মোট যত ভোট পড়েছে, ইতিমধ্যে তার থেকেও বেশি ভোটার ইতিমধ্যে অগ্রিম ভোট দিয়েছেন। জাতীয়ভাবে ভোটাররা ২০১৬ সালের মোট ভোটের ৪৬ শতাংশ ভোট ইতিমধ্যে অগ্রিম দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ট্রাম্প ও ডেমোক্রাট দলীয় ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী কমলা হ্যারিস অগ্রিম ভোট দিয়েছেন। করোনা মহামারীর কারণে, অনেক রাজ্যই ভোটের নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে। লাখ লাখ লোক প্রথমবারের মতো মেইলে ভোট দেয়ার সুযোগ নিয়েছে। অনেকেই নির্বাচনের দিন ভোটারদের প্রত্যাশিত চাপ এড়াতে প্রথম দিকে ব্যক্তিগতভাবে ভোট দিয়ে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোটারদের উৎসাহ সারা দেশে রেকর্ড-স্তরের অগ্রিম ভোট প্রদানে উৎসাহ দিয়েছে।

ডেমোক্র্যাটরা অগ্রিম ভোট দেয়ার বিষয়ে আরও আগ্রহী বলে দেখা যায়। পাঁচটি ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটে নিবন্ধকরণের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত রিপাবলিকানদের চেয়ে প্রায় ২০ লাখ বেশি নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট সমর্থক ভোট দিয়েছেন। পেনসিলভেনিয়ায় রাজ্যে, যেখানে ২০১৬ সালে ট্রাম্প জিতেছিলেন, সেখানেও রিপাবলিকানদের তুলনায় তিনগুণ বেশি ডেমোক্র্যাট সমর্থক ভোট দিয়েছেন। ফ্লোরিডা এবং উত্তর ক্যারোলিনাতেও প্রায় একই চিত্র দেখা যায়। জনবহুল টেক্সাসের প্রারম্ভিক ভোট, যা রিপাবলিকানদের ঘাঁটি বলে পরিচিত, সেটিও ক্রমবর্ধমান অ-শেতাঙ্গ ভোটারের কারণে এ বছর প্রতিযোগিতামূলক হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানে ২০১৬ সালের মোট ভোটের ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নেভাডা এবং উত্তর ক্যারোলাইনাতে ভোট চার বছর আগে মোট যত ভোট পড়েছিল তার ৬০ শতাংশের বেশি অগ্রিম ভোট পড়েছে।

এদিকে, মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অ্যামি কোনে ব্যারেটের নিয়োগ চূড়ান্ত করলো সেনেট, যেটাকে নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য একটি বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ৫২-৪৮ ভোটে রিপাবলিকানরা এই নতুন বিচারপতি নিয়োগ নিশ্চিত করেন। হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে বিচারক হিসেবে অ্যামি কোনে ব্যারেট তার শপথ নেন। এই নিয়োগ সামনের দিনগুলোতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হবে। তার এই নিয়োগের বিপক্ষে ভোট দেয়া একমাত্র রিপাবলিকান হচ্ছেন সেনেটর সুশান কলিন্স। মেইনের পুনঃনির্বাচনে তিনি কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে যাচ্ছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোনয়ন দেয়া সুপ্রিম কোর্টের তৃতীয় বিচারপতি অ্যামি কোনে ব্যারেট। এর আগে ২০১৭ সালে নেই গোরসাচ এবং ২০১৮ সালে ব্রেট কাভানাকে মনোনয়ন দেন তিনি। গত মাসে ফেডারেল আপিল বিভাগের বিচারক রুথ ব্যাডার গিন্সবার্গ মারা যান বিচারপতিদের একটি পদ শূন্য হয়। ডেমোক্র্যাটরা দাবি করেন, ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যারা জিতবেন তারাই বাছাই করবেন নতুন বিচারক। সিনেটের ভোটাভুটির আগে ডেমোক্র্যাটদের নেতা চাক শুমার বলেন তারা লড়াই থামাবেন না। কিন্তু তাদের কাছে এই নতুন বিচারক নিয়োগ থামানোর কোনো উপায় ছিল না।

পেনসিলভ্যানিয়ায় নির্বাচনী প্রচারনা থেকে ফিরেই বিচারক ব্যারেটের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষিণ লনে আয়োজিত হয় এই শপথ অনুষ্ঠান। ঠিক এক মাস আগে প্রেসিডেন্টের মনোনীত বিচারক হিসেবে অ্যামি কোনি ব্যারেটের নাম ঘোষণা করা হয়। যার পরপরই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, ‘এটা আমেরিকার জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের জন্য ও সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ আইনের শাসনের জন্য এটা বিশেষ কিছু।’ তিনি যোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইন নিয়ে যারা পড়ালেখা করেছেন তাদের মধ্যে ব্যারেট সবচেয়ে মেধাবীদের একজন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তিনি দারুণ কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ক্ল্যারেন্স থমাস তার নতুন সহকর্মীর শপথ পাঠ করান।

আসছে দিনে বেশ কয়েকটি ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বিচারপতি ব্যারেট। যার মধ্যে একটি অ্যাফর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট, যা ওবামার আমলের একটি স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত আইন। এটি ওবামাকেয়ার নামেও পরিচিত। এছাড়া ১৯৭৩ সালে পুরো আমেরিকায় গর্ভপাত সম্পর্কিত যে আইন পাশ হয়েছিল সেটাও বাতিল হতে পারে এই বিচারপতির আমলে। বিচারপতি ব্যারেটের আগের নানা লেখালেখি থেকে এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন লিবারেলরা। নর্থ ক্যারোলিনা ও পেনসিলভ্যানিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালট ভরার সময়সীমা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই নতুন বিচারপতিকে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট উইসকনসিন রাজ্যে নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে ভোটগ্রহন বাতিল করেছে। এই রাজ্যও হোয়াইট হাউজে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন