বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রাস্তা তৈরির সময় পানি চলাচল যেন ব্যাহত না হয়

একনেকে ৫১৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন প্রকল্প অনুমোদন একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সড়ক নির্মাণের সময় পানি চলাচলের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। যেন বিল হাওর-বাওর বাঁচিয়ে রাখা যায়। প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পরিমাণে কালভার্ট-ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ অনুশাসন দেন। সভায় ৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। গণভবন থেকে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি ভবন থেকে একনেক সভায় অংশ নেন। এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রকল্পের সার্বিক বিষয় উপস্থাপন করেন। একনেক সভায় পাঁচ হাজার ১৮৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা খরচে তিনটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে দুই হাজার ৮৫৫ কোটি আট লাখ, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৬৩ কোটি ৮৫ লাখ এবং বিদেশি ঋণ দুই হাজার ২৭০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, একনেক সভায় মোট তিনটি প্রকল্পের মধ্যে দুটি সংশোধিত এবং একটি নতুন প্রকল্প। সংশোধিত দুটিই সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের। সেগুলো হলো ‘সোনাপুর (নোয়াখালী)-সোনাগাজী (ফেনী)-জোয়ারগঞ্জ (চট্টগ্রাম) সড়ক উন্নয়ন (দ্বিতীয় সংশোধন) প্রকল্প। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ১৭২ কোটি ৬৫ লাখ, প্রথম সংশোধনীতে হয় ১৮৫ কোটি ৯৬ লাখ এবং দ্বিতীয় সংশোধনে ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াল ২৯৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলে এখন তা বাড়িয়ে করা হলো ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত।

আর ‘সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ : এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্পে মূল খরচ ছিল ১১ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা, প্রথম সংশোধনীতে চার হাজার ৭৬৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বেড়ে হলো ১৬ হাজার ৬৬২ বোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হলো ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত।

সভায় পাশ হওয়া নতুন প্রকল্পটি হলো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ট্রাফিক অবকাঠামো উন্নয়নসহ সড়ক নিরাপত্তা’। এতে খরচ হবে ৩১৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

একনেক সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর সেসব নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ঢাকা সিটি করপারেশনের যে প্রকল্প সেখানে পুরো টাকাই সরকারের তহবিল থেকে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সিটি করপোরেশনগুলো বা স্থানীয় সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য আস্তে আস্তে করে কীভাবে, কোন প্রতিষ্ঠান কী করবে, কিভাবে অর্গানাইজেশন থাকবে- এটা পুরোটা রিভিজিট করতে হবে।

আসাদুল ইসলাম বলেন, দেখা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় লাগে, এর মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে সচিব বা কর্মকর্তারা বদলি হয়ে যান। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, যাতে এই বদলির কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনো গ্যাপ (বিরতি) না হয়। তার জন্য যারা থাকবেন এবং যারা নতুন আসবেন, তাদেরকে একটি অরিয়েন্টেশন করে তাদেরকে অবহিত করতে হবে।

এদিকে ‘সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২: এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন বিষয়ে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব বলেন, এই প্রকল্পটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা ইতিহাস হওয়ার মতো একটি বিষয় যে, তিনটা দেশের প্রথম রাস্তা। শেখ হাসিনা প্রথমবার যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, সেই সময় এটার ডিজাইন করা এবং সে সময় শুরু করা। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রাস্তা যেখানে ধীর গতির যানবাহনের জন্য একটা সাইড লেন আছে। আর যে নির্দেশনা উনি দিয়েছেন, সেটা হলো রাস্তা তৈরির সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে পানির চলাচল কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্রিজ, কালভার্ট ও পানি চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে রাস্তা এদিক-ওদিক করতে হবে। বিশেষ করে বিল, হাওর-বাওর এগুলো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কারণ এগুলো আমাদের লাইফ লাইন, এগুলো ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রক্ষা করে, বিভিন্নভাবে পানি সরবরাহ করে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে তিনি এই নির্দেশনা দিয়েছেন।

একই সঙ্গে মামলার কারণে প্রকল্প দেরি হয়ে যায়। মামলা যখনই হবে, তখনই যেন উদ্যোগী মন্ত্রণালয় সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করে, যাতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কোনোভাবে ব্যাহত না হয় এ নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বলেও উল্লেখ করেন সচিব।

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন-আল-রশীদ, শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
নুরজাহান ২৮ অক্টোবর, ২০২০, ২:২১ এএম says : 0
সড়ক নির্মাণের সময় পানি চলাচলের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
Total Reply(0)
লিয়াকত আলী ২৮ অক্টোবর, ২০২০, ২:২২ এএম says : 0
প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পরিমাণে কালভার্ট-ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
Total Reply(0)
বুলবুল আহমেদ ২৮ অক্টোবর, ২০২০, ২:২২ এএম says : 0
আশা করি সবাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলবে।
Total Reply(0)
নয়ন ২৮ অক্টোবর, ২০২০, ২:২৩ এএম says : 0
প্রত্যেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নে যথাযথ তদারকী দরকার।
Total Reply(0)
কামাল রাহী ২৮ অক্টোবর, ২০২০, ২:২৪ এএম says : 0
সিটি করপোরেশনগুলো বা স্থানীয় সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন