মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পদ্মায় ইলিশ ধরা নিষেধ, তবুও ভারতীয় জেলেরা ধরে নিয়ে যাচ্ছে ইলিশ

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ৯:৩৯ এএম

পদ্মায় ইলিশ ধরা নিষেধ। বাংলাদেশী জেলেরা হাত গুটিয়ে বসে আছে। অন্যদিকে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশী জলসীমা থেকে ইলিশ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে প্রতিবছরই ভারতীয়রা ইলিশ ধরে নিয়ে যায়। এবারো তার ব্যাতিক্রম নয়। এমনি অভিযোগ পদ্মা পাড়ের জেলেদের। আবার সরকারী খাদ্য সহায়তাও জুটছেনা সবার ভাগ্যে। তাদের দিনটিও ভাল যাচ্ছেনা। জেলেরা বলছেন, নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে তারা ভারতীয়দের মাছ ধরে নিয়ে যাওয়া দেখছেন। কিন্তু তাদের ঘরে খাবার নেই। মাছ ধরার অনুমতিও নেই।
ইলিশ মাছের প্রজনন নির্বিঘেœ করতে ২২ দিনের জন্য নদ-নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা, বিক্রি, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ। মৎস্য অধিদপ্তর এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে অভিযানও চলছে। জাল কেড়ে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনাও ঘটছে। বাংলাদেশে নদ-নদীতে মৎস্য শিকার বন্ধ থাকায় সরকার জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে মাথাপিঁছু ২০ কেজি করে চাল দিচ্ছে। কিন্তু শতভাগ জেলে এই চাল পাচ্ছেন না। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে এসব রাজশাহীর পবা উপজেলার নবগঙ্গা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সদস্য ২২ জন। তাদের সমিতির নিবন্ধনও আছে। নিবন্ধন নম্বর-১৩৭৪। কিন্তু এই সমিতির একজন জেলেও সরকারের খাদ্য সহায়তা পাননি। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনাল হক বলেন, ভারতীয়রা চোখের সামনে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা মাছ ধরতে পারছি না। সরকার আমাদের সহায়তাও করছে না।
প্রবীন জেলে আইনালহক বলেন, পদ্মানদীতে এবার এমনিতেই ইলিশ কম। তারপরও ভারতীয় জেলেরা ইলিশ শিকার করছেন। পেটে ক্ষুধা নিয়ে নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে তারা সেই দৃশ্য দেখছেন। তাদের ইলিশ তো দূরের কথা, জাল নিয়ে পদ্মায় নামারই অনুমতি নেই।
পদ্মায় মাছ ধরা বন্ধ রাখতে মৎস্য অধিদপ্তর, নৌ-পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে অভিযান চালাচ্ছে। গত মঙ্গলবার রাজশাহীর পদ্মানদীর বাবলাবন নামক স্থান থেকে দুই লাখ ২৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে মৎস্য অধিদপ্তর ও নৌ-পুলিশ। পরে জালগুলো পাড়ে এনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এই অভিযানে ছিলেন নৌ-পুলিশের পরিদর্শক মেহেদী মাসুদ।
তিনি বলেন, বাবলাবন এলাকাটি একেবারেই সীমান্ত এলাকা। অথৈ পানি। সেখানে নির্দিষ্ট করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চিহ্নিত করা কঠিন। আমরা সেইখানে জেলেদের নৌকা নিয়ে জাল ফেলে মাছ ধরতে দেখি। সেদিকে এগিয়ে যাই। আমাদের দেখে জেলেরা জাল ফেলে ভারতের দিকে পালিয়ে যায়। আমরা জালগুলো তুলে নিয়ে আসি। জেলেরা ভারতে ঢুকে পড়ায় আটকের জন্য তাদের পিছু নেয়া যায়নি। পুলিশের এই কর্মকর্তার ধারণা, ওই জেলেরা ভারতীয়।
গত বছর ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বালুঘাট এলাকায় ঢুকে পড়েছিলেন ভারতীয় জেলেরা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ায় মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তিন জেলেকে আটক করার চেষ্টা করে বিজিবি। তখন দুজন পালিয়ে যান এবং একজনকে আটক করে নদীর এপারে নিয়ে আসা হয়। আটক ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক বলে বিজিবি নিশ্চিত হয়।
কিছুক্ষণ পর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফের চার সদস্যের একটি টহল দল স্পিডবোট নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিজিবির টহল দলের কাছে আসে এবং আটক ভারতীয় নাগরিককে ছেড়ে দিতে বলে। আটক ভারতীয় নাগরিককে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে বলে জানালে তারা ভারতীয় নাগরিককে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এতে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবির ওপর ছয় থেকে আটটি গুলি করেন। আত্মরক্ষার জন্য বিজিবির সদস্যরা গুলি চালালে বিএসএফ গুলি করতে করতে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এই গোলাগুলির ঘটনায় বিএসএফের এক সদস্য ওপারে যাওয়ার পর মারা যান। তারপর কয়েক মাস রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী থাকার পর ভারতীয় ওই জেলে গোপনে জামিন নিয়ে পালিয়ে যান।
গত বছর পদ্মায় ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে এ ধরনের আলোচিত ঘটনা ঘটলেও এবারও ভারতীয় জেলেরা আসছেন। রাজশাহীর পবা উপজেলা মৎস্য দপ্তরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান বলেন, এবার নদীতে বাংলাদেশী জেলে পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। তবে অনেক সময় ভারতীয় জেলেদের নৌকা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু তারা একেবারেই সীমান্ত এলাকায় থাকায় আমরা সেখানে যেতে পারছি না। অন্তত এক কিলোমিটার দূর থেকেই আমাদের অভিযান চালাতে হচ্ছে। তবে ইলিশ রক্ষায় দুই দেশ যদি সম্মিলিতভাবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাহলে ভাল হয়। ভারতে এখন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা নেই।
বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি। মৎস্য বিভাগ ডাকামাত্রই আমরা নদীতে অভিযানে যাচ্ছি।
তথ্য নিয়ে দেখেছি, এবার পদ্মা নদীতে দুই দেশেরই জেলেদের উপস্থিতি কম। এর কারণ হিসেবে বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গত বছর নিষেধাজ্ঞার সময় একটা ঘটনা ঘটেছিল। বিএসএফ গুলিবর্ষণ করেছিল। আত্মরক্ষায় আমাদেরও গুলি করতে হয়েছিল। তাই সতর্কতার অংশ হিসেবে এবার কম জেলে আসতে পারে। ইলিশ রক্ষার জন্য আমাদের অবস্থান গতবছর যেমন ছিল, এবারও তেমনই আছে। সরকারি নির্দেশনা আমরা বাস্তবায়ন করব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (24)
জসিম ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:১৬ এএম says : 0
এদেরকে রুখতে হবে
Total Reply(0)
Rakibul Islam ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৪১ এএম says : 0
ভারতীয় জেলেরা যাতে নিরাপদে মাছ ধরতে পারে সেজন্য আমাদের জেলেদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে!
Total Reply(0)
Sujon Miah ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৪৭ এএম says : 0
আমাদের দেশের লোক না খেয়ে মরে আর ইন্ডিয়ানরা উৎসব করে
Total Reply(0)
Amir Hossain ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫০ এএম says : 0
ভারতের জেলেরা মাছ ধরতে পারবে ওদের জন্য বৈধ।
Total Reply(0)
Shariful Islam ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫১ এএম says : 0
বাংলাদেশের পুলিশ র‍্যাব ডিসি প্রশাসক কি নাকে তৈল দিয়ে ঘুমায়।
Total Reply(0)
Shakhawat Rana ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫১ এএম says : 0
তাদের সাথেতো আমাদের রক্তের সম্পর্ক, তাই তাদেরকে কিছু বলা যাবেনা।
Total Reply(0)
Kabir Hossain ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫৫ এএম says : 0
দেশের সরকার কার পক্ষে সেটাই বুঝিনা!
Total Reply(0)
MD Milonuzzaman ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫৬ এএম says : 0
পরম বন্ধু বলে কথা।
Total Reply(0)
Shohag ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫৭ এএম says : 0
হায়রে বাংলাদেশ
Total Reply(0)
Ahmed Sojeeb ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৫৭ এএম says : 0
জাগো মানুষ হটাও ভারতীয় পাঁ চাটা গোলাম ভোট ডাকাত।
Total Reply(0)
Nirob ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১:৩০ পিএম says : 0
আমাদের বিজিবি এই গুলো দেখে না। ভারতের জেলে পিঠিয়ে চামড়া তূলে লবন লাগিয়ে দেন। সরকারের কারণে ওরা নারয়ন সাহস পায়। আমাদের খুব দুর্রভাগ্য জাতী
Total Reply(0)
Nirob ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১:৩০ পিএম says : 0
আমাদের বিজিবি এই গুলো দেখে না। ভারতের জেলে পিঠিয়ে চামড়া তূলে লবন লাগিয়ে দেন। সরকারের কারণে ওরা নারয়ন সাহস পায়। আমাদের খুব দুর্রভাগ্য জাতী
Total Reply(0)
সোলায়মান ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ৫:০০ পিএম says : 0
ওদের জন্য সাত খুন মাফ
Total Reply(0)
Sukumar ghosh ৩১ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৪২ পিএম says : 0
Ain ainer pathe Chal be ain sakaler janna saman se indian hom ba
Total Reply(0)
koushik ১ নভেম্বর, ২০২০, ৮:৫০ এএম says : 0
Agee ghar thiek kor,tarpar porke dosarok koris
Total Reply(0)
জহিরুল ১ নভেম্বর, ২০২০, ১২:২২ পিএম says : 0
এটাই শুনার বাকী ছিল ভাই।
Total Reply(0)
Noor Mohammad Tarakki ১ নভেম্বর, ২০২০, ৯:৩৭ পিএম says : 0
ভারত সরকার কোনরকম মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেনা । সেই অধিকার কেবলমাত্র রাজ্য সরকারের(এখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার)। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদাসীনতা ও অপদার্থতার জন্য পশ্চিমবঙ্গের জেলেরা মাছ ধরতে পারছে । হাসিনা সরকারের সঙ্গে মমতা সরকারের সম্পর্ক তো ভালোই । ঐ দুজনে মিলেমিশে অসময়ে মাছ ধরাটা বন্ধ করতে পারে ।
Total Reply(0)
Ashis Bandyopadhyay ১ নভেম্বর, ২০২০, ১১:০১ পিএম says : 0
BBG কি সীমান্তে বসে.. চিরছে, গাঁজাখুরি গল্প এবং নৌটঙ্কি বন্ধ করুন, বাংলাদেশ সরকার কে বলছি
Total Reply(0)
m.a. hamid ২ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৩ এএম says : 0
অবিলম্বে বাংলাদেশের জেলেদের জীবনসংগ্রামের কথা ভেবে মাছ ধরার জন্য আদেশ দেওয়ার চিন্তা করতে পারেন,মৌসুম আগে চলে এসেছে, চন্দ্র মাস হিসাবে ১৫ দিন বদল বৎসরে, বাংলাদেশের মৎস বিজ্ঞান প্রযুক্তি কারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি,,,?
Total Reply(0)
Nesar Anowar ২ নভেম্বর, ২০২০, ২:১৪ এএম says : 0
আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের জুতো গুলো পরিষ্কার করে দেয়না কেনো, ঐ ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশে প্রবেশ করে মা ইলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের গুলি করা হয়না কেনো, সীমান্তে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষদের নির্বিচারে পাখির মত গুলি করে হত্যা করে ভারতীয় ঐ নরপিশাচরা,আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত বাংলাদেশের ভিতরে ভারতীয়দের দেখলেই সাথে সাথে ব্রাশফায়ার করা,
Total Reply(0)
Neaar Anowar ২ নভেম্বর, ২০২০, ২:২৫ এএম says : 0
আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে চুড়ি পরে বসে আছে কেনো, ঐ ভারতীয় নরপিশাচরা সীমান্তে নির্বিচারে পাখির মত হত্যা করে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষদের, আর ভারতীয় নরপিশাচরা আমাদের দেশের ভিতরে ঢুকে মা ইলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের ...গুলি করা হচ্ছেনা কেনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সুস্থ জবাব চাই,
Total Reply(0)
Neaar Anowar ২ নভেম্বর, ২০২০, ২:২৮ এএম says : 0
আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাতে চুড়ি পরে বসে আছে কেনো, ঐ ভারতীয় নরপিশাচরা সীমান্তে নির্বিচারে পাখির মত হত্যা করে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষদের, আর ভারতীয় নরপিশাচরা আমাদের দেশের ভিতরে ঢুকে মা ইলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের কুত্তার মত গুলি করা হচ্ছেনা কেনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সুস্থ জবাব চাই,
Total Reply(0)
Rakib ২ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৫৮ এএম says : 0
বাংলাদেশ সরকার বাঙ্গালি কেই আটকাতে পারবে। বাঙ্গালির পাতের ভাত খেয়ে গেলেও কিছু বলবে না সরকার।বাঙ্গালীমরে মরুক সরকারের কি। ওইদিকে ভারোত তার সিমা ওতিক্রক করে এসে মাছ ধরে নিয়ে যাবে।
Total Reply(0)
Jack Ali ৩ নভেম্বর, ২০২০, ১১:৫২ এএম says : 0
Our government insulted us in every way.. BSF is killing us every day and also Indian fisher man come in our territory and catch our fish most of the time and also Mayanmar. May Allah install a muslim government who will rule our country by the Law of Allah then all the Kafir will fear us, they will not dare to point a finger towards us.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন