বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রকাশিত সংবাদ এবং প্রতিবেদকের বক্তব্য

| প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

গত ২৭ অক্টোবর প্রকাশিত ‘বাকিতে চলছে নগদ’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘ডাক অধিদপ্তর’। প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোরশেদ আলম গত ২৮ অক্টোবর ডাকযোগে প্রতিবাদটি পাঠান। প্রতিবাদে তিনি প্রতিবেদনটির কোনো কোনো অংশে ‘ভুল তথ্য সংবলিত’ এবং ‘বিভ্রান্তিমূলক তথ্যে পরিপূর্ণ’ বলে দাবি করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘নগদ’ পরিচালন ব্যবস্থাপনায় ডাক বিভাগের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলা হলেও একটি সম্পূর্ণ অসত্য। একইভাবে প্রতিবেদকের দাবিকৃত ‘ডাক বিভাগের দুর্নীতি এবং নৈরাজ্যেও নতুন স্মারক হচ্ছে এই ‘নগদ’-এটিও ভিত্তিহীন এবং ডাক বিভাগের জন্য সম্মানহানিকর। ডাক বিভাগ ও ‘নগদ’ এ ক্ষেত্রে কি দুর্নীতি করেছে তার কোনো তথ্য বা সূত্র প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই।

প্রতিবাদে বলা হয়, ২০১৮ সালের নভেম্বরে থার্ড ওয়েভ টেকনোলজি লিমিটেড’র সঙ্গে এমওইউ-এর মাধ্যমে সেবাটি চালু করা হয়েছে বলে উল্লেখ থাকলেও তিনি উল্লেখ করেননি যে, উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে সকল নিয়ম-কানুন পরিপালন করে ‘থার্ড ওয়েব টেকনোলজিস লিমিটেড’ এই কাজে নিয়োজিত হয়েছে।

প্রতিবেদকের বক্তব্য : ‘বাকিতে চলছে নগদ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার স্বার্থেই ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা বাহিজা আক্তারের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। তদুপরি প্রতিবেদন প্রকাশের আগে ডাক অধিদপ্তরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সাড়া দেননি। এমনকি প্রতিবেদনে ‘নগদ’ কর্তৃপক্ষের বক্তব্যও রয়েছে। প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু ছিল অস্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি। প্রতিবাদে সেটিই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

উন্মুক্ত দরপত্রে ‘থার্ড ওয়েভ টেকনোলজি লিমিটেড’র সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হলেও এটি ছিল পাতানো। এই চুক্তি প্রস্তুতকরণে অর্থ মন্ত্রণালয়, আইনমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল কি-না প্রতিবাদকারী সেটি বলেননি। সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের আগে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়া হয়েছিল কি-না? ‘নগদ’ মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর আগে অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো কোনো ধরনের জামানত বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা হয়েছে কি-না? তাহলে গ্রাহকের অর্থের নিরাপত্তা কে দেবে? ডাক অধিদপ্তর নাকি ‘নগদ’? নগদ পরিচালনা পর্ষদে বাংলাদেশ সরকারের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়েছে কি? তাহলে তাদের নাম-পদ-পদবি কি? যদিও ৫১ শতাংশ শেয়ার অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদের অর্থেক পরিচালক হওয়ার কথা বাংলাদেশ সরকারের। নগদের হিসাব নিকাশের অডিট বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক এখনো শুরু হয়নি কেন?

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তৎকালিন সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস ডাক মহাপরিচালককে ‘নগদ’র লেনদেনের বিষয়ে প্রতিমাসে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছিলেন। কিন্তু ডাকের মহাপরিচালক (বর্তমানে ছুটিতে) এসএস ভদ্র কোনো প্রতিবেদনই মন্ত্রণালয়কে দেননি। সার্ভার জেনারেটর রিপোর্টের একটি কপিও ডাক বিভাগে প্রতিদিন জমা দেয়ার কথা। কিন্তু ‘নগদ’ কর্তৃপক্ষ দুই বছরে একটি স্টেটমেন্টও ডাক বিভাগে জমা দেননি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা এসব প্রসঙ্গ প্রতিবাদে এড়িয়ে গিয়ে শুধুমাত্র ‘নগদ’র পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন প্রতিবাদকারী-যা ব্যাপক দুর্নীতির প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত। ‘নগদ’ কার্যক্রম পরিচালনায় ডাক অধিদফতরের ‘কেন্দ্রীয় মনটরিং সেল’র সভার কার্যবিবরণীতেই উল্লেখ করা হয় যে, নগদের মাধ্যমে সকল লেনদেন ও লেনদেনকৃত সকল পাবলিক মানির পূর্ণাঙ্গ তদারকির সুযোগ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডাক বিভাগের নেই।

এতএব, প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের মনগড়া বক্তব্যের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়েও প্রতিবাদকারী কোনো ব্যখ্যা দেননি। অতএব, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য স্থান পায়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন